সাইবার সিকিউরিটির সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড এ যাই ঘটুক না কেনো, সাইবার সিকিউরিটি স্পেশালিস্ট দের চাহিদা বাড়বে।

  • ধরুন, এনালগ বিজনেসগুলো ডিজিটাল হচ্ছে, ই কমার্স বিজন বিজনেসগুলো গ্রো করছে, সেখানে কিন্তু সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট লাগবে ।
  • নতুন কিছু টেক স্টারটাপ তৈরি হচ্ছে, সেখানে কিন্তু সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট লাগবে
  • অথবা ধরুন কোন কোম্পনি এক্সটেন্ড করতেছে তাদের যে ডিজিটাল প্রডাক্টগুলো ছিলো সেগুলো আরো বৃদ্ধি করতেছে। সেই কোম্পানির সিকিউরিটি জন্য কিন্তু সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট লাগবে।
  • আবার ধরেন কোন কোম্পানি ইন্টারনালি ডিজিটালাইজড হচ্ছে সেখানেও কিন্তু সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট লাগবে।

মোট কথা ওয়ার্ল্ড এর মধ্য যদি কোন কিছু ঘটে ডিজিটালি, সেখানে কিন্তু আপনার সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট এর দরকার হবে।

সাইবার সিকিউরিটি ভেঞ্চারস এর তথ্য মতে ২০১৫ সালের সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট এর মার্কেট ছিলো ৩ ট্রিলিয়ন ইউ এস ডলার। যেটা ২০২১ সাল নাগাদ মার্কেট হবে ৬ ট্রিলিয়ন মার্কেট ডলার।

আপনি চিন্তা করতে পারেন যে সাইবার সিকিউরিটি মার্কেট এর কতো বেশি ডিমান্ড রয়েছে। এখন আরেকটি ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হচ্ছে, সাইবার সিকিউরিটি মার্কেট এর যেই ডিমান্ড দিনকে দিন বাড়ছে সেখানে কিন্তু চাহিদার তুলনায় যোগান সামান্য। প্রতিনিয়ত আমাদের দরকার হবে সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্টদের! সে তুলনায় সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট তৈরি হচ্ছে খুব ই কম সংখ্যায়। কম্পিউটার সাইন্স এর এই একটি মাত্র ব্রাঞ্চ রয়েছে যেই ব্রাঞ্চে অভার ক্রাউডেড নয়, যেই ব্রাঞ্চে চাহিদার তুলনায় যোগান খুবই সামান্য।

যেহেতু সাইবার সিকিউরিটি চাহিদা আকাশ সম, সে তুলনায় যোগান খুবই কম! সে কারনে সাইবার সিকিউরিটি এরিয়ায় অনেক বেশি ইনকাম করতে পারবেন। অনেক সিকিউরিটি স্পেশালিষ্ট রয়েছে যারা মাসে মিলিয়ন ডলার ইনকাম করে থাকে শুধুমাত্র সাইবার সিকিউরিটি সার্ভিস দিয়েই।

তো আজকের ভিডিওতে আমি মূলত সাইবার সিকিউরিটি ফিউচারস কর্মক্ষেত্র নিয়ে কথা বলবো!

তবে শুরুতেই ডিস্ক্লেইমার আমি নিজে সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট নই, এই ভিডিওতে যেই সব রিসোর্স আমি শেয়ার করবো,ইনফরমেশন আমি শেয়ার করবো সেগুলো ইন্টারনেট থেকে এবং বিভিন্ন সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট দের থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। যেহেতু অনেকেই আমাদেরকে নক দিয়েছে সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ে কথা বলার জন্য সেজন্যই এই মূলত ব্লগটি তৈরি করা হচ্ছে।

সাইবার সিকিউরিটি স্পেশালিস্ট এর ক্যারিয়ার

সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট বলতে তাদের কেই বুঝায়, যারা ওয়েব ওয়ার্ল্ড এ নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। আমরা একসময় দেখতাম অ্যানালগ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা বাহিনী নিয়জিত থাকতো। কিন্তু যুগের সঙ্গে সঙ্গে যেহেতু ডিজিটালাইজড হচ্ছে সবকিছু এখন কিন্তু ডিজিটালি সকল কিছুতেই নিরাপত্তা দিতে হয়। তাই যারা ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড এ নিরাপত্তা দিয়ে থাকে তাদেরকে সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট বলে।

আপনার যদি ওইকিপিডিয়া বা অনন্য সাইট ঘাটাঘাটি করে থাকেন, এর থেকে আরো ভালো ডেফিনেশন পাবেন। আমাদের দেশে হ্যাকার শব্দটি অনেক বেশি পরিচিত একটি শব্দ। যারা সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট তারাও কিন্তু এক ধরনের হ্যাকার। তবে সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্টরা সাধারণত হ্যাকার দের থেকে নিজস্ব সিস্ট্যাম কে নিরাপত্তা দিয়ে থাকে এবং সিস্টেম এর নিরাপত্তার উন্নতি সাধন করে থাকে।

তো চলুন দেখে নেই আপনি যদি সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট হন তাহলে কি কি এরিয়াতে আপনার কাজের সুযোগ রয়েছে ফিউচারস এ ।

সাইবার সিকিউরিটি এনালিস্ট

সাইবার সিকিউরিটি এর প্রথম যে কর্মক্ষেত্রের কথা আপনাদেরকে বলবো, সেটি হচ্ছে সাইবার সিকিউরিটি এনালিস্ট। মূলত সাইবার সিকিউরিটি এনালিস্ট এর কাজ হচ্ছে তাদের সিস্টেমটার নিরাপত্তাকে এনালাইষ্ট করা, ইমপ্লিমেন্ট করা। নতুন কোন ওয়েব এপ্লিকেশন বা নতুন কোন সফটওয়্যার তৈরি হলে সেটার সিস্টেম এ কোন ত্রুটি রয়েছে কিনা বা কোন দুর্বলতা রয়েছে কিনা, সেটা এনালাইসড করে ইমপ্লিমেন্ট করা। এর বাইরেও কিন্তু সাইবার সিকিউরিটি এনালিস্টরা তাদের  নেটওয়ার্ক এর সিকিউরিটি এনালাইস করে থাকে যাতে করে সাইবার হামলা থেকে সহজেই কোম্পনির সিস্টেম কে রক্ষা করা ।

ভালনারিবিলিটি টেস্টার

সাইবার সিকিউরিটি দুই নাম্বার কাজ হচ্ছে ভালনারিবিলিটি টেস্ট। এখানে মূলত সিকিউরিটি এক্সপার্টরা বিভিন্ন সিস্টেম কে হ্যাক করার চেষ্টা করে থাকে ইথিক্যালি। যদি আপনি বড় কোন কোম্পনির সিস্টেম কে ইথিক্যালি হ্যাক করতে পারেন সেখানে কিন্তু আপনার প্রাইস পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। আর বিভিন্ন কোম্পানি সবসময় এই পজিশনটা ওপেন রাখে।

তার মানে আপনি যদি সাইবার সিকিউরিটি স্পেশালিস্ট হন এবং সিকিউরিটি বিভিন্ন টুলস ব্যাবহার করতে পারেন তাহলে কিন্তু আপনি বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানির সিস্টেম হ্যাক করার চেষ্টা করতে পারেন। এবং যদি আপনি হ্যাক করতে সফল হন তাহলে অবশ্যই সেই কোম্পানি থেকে টাকা পাবেন। এর বাইরেও অনেক সময় দেখা যায় যে কোম্পানিগুলো বিভিন্ন স্পেশালিষ্ট হায়ার করে তাদের সিস্টেমের নিরাপত্তা কে ক্ষতিয়ে দেখার জন্য। আপনি যদি ভালনারেবিলিটি টেষ্টার হন তাহলে কিন্তু এই পজিশনগুলোতেও চাকরির সুযোগ পাবেন।

সাইবার সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ার

মূলত যারা সিকিউরিটি উপর পরাশুনা করে থাকে আন্ডারগ্রাজুয়েট লেভেলে বা পোস্টগ্রাজুয়েট লেভেলে তারাই সাইবার সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ার হয়ে থাকে। একজন সাইবার সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ার এর দায়িত্ব থাকে পুরো সিস্টেম টাকে ক্ষতিয়ে দেখ। সেখানে আপনার সিস্টেমটাকে এনালাইস করা, নেটওয়ার্ক এনালাইস করা বা এপ্লিকেশনগুলো এনালাইস করা, ইন্টারনালি ডেটা এনালাইস করা, ডেটাবেজ এনালাইসড করা। সেগুলো ইমপ্লিমেন্ট করা যদি কোন সিকিউরিটি থ্রেট থাকে সেটা ইম্প্রুভ করা।

টেস্ট কোড লেখা এবং টেস্ট করা যাতে করে হ্যাকার টের পাওয়ার আগেই সিস্টেমের দুর্বলতাগুলোকে একজন সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ার ইম্প্রুভ করতে পারে। আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে অনেক সময় সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়াররা ডেভেলপার দের সাথে ক্লোজলি কাজ করে বিশেষ করে যখন ওয়েব বেজড এপ্লিকেশন তৈরি করা হয় তখন। কিন্তু সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ার পজিশন এ চাকরি পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনার একটি ডিগ্রি লাগবে। সিকিউরিটি রিলেটেড ডিগ্রি লাগবে।

নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার

নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে আপনি সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে কাজ করতে পারবেন । এই ধরনের পজিশন এ যারা কাজ করে, তাদেরকে মূলত কোম্পানির ইন্টারনাল যে স্টোরেজ রয়েছে, ইন্টারনাল কমউনিকেশন, সেটা ডেটা ভিত্তিক কমিউনিকেশন হতে পারে, ভিডিও ভিত্তিক, অডিও অডিও কমিউনিকেশন হতে পারে। অথবা কোম্পানির যে নেটওয়ার্ক রয়েছে যেটা কোম্পনির বাইরের সঙ্গে এটাচটেড সেই নেটওয়ার্কে এনালাইসড করা। যাতে করে বাইরের যে হ্যাকাররা রয়েছে তাদের থেকে সহজেই কোম্পনির সিস্টেম কে রক্ষা করা যায়। ইউজুয়ালি একজন নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার তারা সাইবার সিকিউরিটি তে স্পেশালাইজড তারা এই ধরনের পজিশনগুলোতে চাকরি করে থাকে।

সাইবার সিকিউরিটিতে এর বাইরের কিছু পজিশন রয়েছে যেমন সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার, সিকিউরিটি কনসাল্টেন্ট, সফটওয়্যার ইঞ্জিয়ার সহ অনেকগুলো পজিশন রয়েছে। আপনার যদি একটু গুগলে সার্চ করে দেখেন তাহলে এই পজিশনগুলোর ব্যাপারে সহজেই আইডিয়া পাবেন

যেহেতু সবকিছু দ্রুততম সময়ের মধ্য ডিজিটালাইজড হচ্ছে, সে হিসাবে সাইবার সিকিউরিটি স্পেশালিস্ট দের চাহিদা ও কিন্তু হু হু করে বাড়ছে। কিন্তু একই সাথে সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট একই সাথে এত বেশি তৈরি হচ্ছেনা। যেহেতু সাইবার সিকিউরিটি বা ওয়েব সিকিউরিটি কাজগুলো একটু ভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে, যেখানে আপনার মুখস্ত বিদ্যা খুব এতটা কাজে লাগেনা এবং আপনাকে সবসময় একটা চ্যালেঞ্জিং পজিশন এর মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সেজন্য সিকিউরিটি এক্সপার্ট কিন্তু সেভাবে তৈরি হয় না।

আপনাদের মধ্য যারা একটু বেশি  ইনকাম করতে চান সহজেই তাদের জন্য কিন্তু সাইবার সিকিউরিটি পজিশনগুলো হতে পারে বেষ্ট পজিশন। আপনাদের মধ্য যারা থ্রিলিং পছন্দ করেন ক্যারিয়ারে চ্যালেঞ্জিং সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে চান এবং এডভেঞ্চারস পছন্দ করেন তাদের জন্যও কিন্তু সিকিউরিটি এই পজিশনগুলো ফিট।

সিকিউরিটি তে আপনি যখন কাজ করবেন তখন কিন্তু প্রতিনিয়তই আপনাকে থ্রিলিং মোমেন্ট এর মধ্য দিয়েই যেতে হবে। হ্যাকারদের সাথে আপনাকে ফাইট করতে হবে, আপনাদের নিজেদের সিস্টেম কে হ্যাকার দের থেকে নিরাপত্তা দিতে হবে। সেজন্য ক্যারিয়ারে আপনি একটা এডভেঞ্চারস পাবেন।

যেটি আপনাকে একই সাথে ট্রাভেলার এবং কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার এর সাধ দিয়ে থাকবে। আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে সাইবার সিকিউরিটি তে কিন্তু প্রচুর ফ্রিল্যান্সিং এর সুযোগ রয়েছে। তাই আপনারা যদি মনে করেন ট্রাভেল করবেন বিভিন্ন দেশে পাশাপাশি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার এর কাজ করবেন, সেক্ষেত্রে কিন্তু সাইবার সিকিউরিটির পজিশনগুলো বেষ্ট পজিশন হবে।

সাইবার সিকিউরিটি ব্যাপারে আরেকটি কথা না বললেই নয়, সেটি হচ্ছে একজন সাইবার সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ার এর উপর ডিপেন্ড করে পুরো কোম্পানির নিরাপত্তা। তার মানে আপনি যদি এই পজিশনগুলোতে চাকরি করেন সহজেই কিন্তু লিডিং পারসোনালিটি ডেভোলপ করতে পারতেছেন। কারন আপনাকে কিন্তু লিড দিতে হবে, আপনাকে কিন্তু নিরাপত্তা দিতে হবে, রেস্পন্সিবিলিটি নিতে হবে।

আপনাদের যদি সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে কিছু বলার থাকে,জিজ্ঞেস করার থাকে তাহলে আমাদেরকে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। এছাড়াও আমাদেরকে ফেসবুক পেজে নক করতে পারেন। আমাদের কমিউনিটিতে যুক্ত হতে পারেন।

0Shares
Previous post সিএসই পড়তে কি কম্পিউটার লাগে এবং ম্যাথ কেমন লাগে?
Next post সিএসই গ্রাজুয়েশন করতে নন-ডিপার্টমেন্টাল যে সাবজেট গুলো পড়তে হবে!

One thought on “সাইবার সিকিউরিটি স্পেশালিস্ট এর ফিউচার কি?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Close

গালিব নোটস এর ইউটিউব ভিডিওঃ