আইওটিএ ইন্টারভিউ

আইওটিএ ইন্টারভিউ এক্সপেরিয়েন্স ২০২০

গ্রাজুয়েশনের শেষ সময়ে এসে আমি চাকরির জন্য আবেদন প্রচুর আবেদন করছিলাম। সেই সময়ে আমি আইওটিএ কোম্পানিতে এন্ড্রয়েট এপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট এর উপর ইন্টারভিউ দেয়ার সুযোগ পাই। সেটা নিয়েই আজকের ব্লগ-

চাকরির আবেদন শুরু করার পরে আমি মুল ফোকাস করছিলাম লারাভেল সম্পর্কিত চাকরি গুলোতে। বিডিজবস থেকে আবেদন করতাম নিয়মিত। অনেক কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিয়েছি।

বিডিজবস এর একটা ব্যাপার হচ্ছে, এখানে জেনারেলাইজ প্রফাইল থাকে। আপনি চাইলেও খুব বেশি স্পেশালাইজ প্রফাইল বানাতে পারবেন না। অন্তত কম্পিউটার সাইন্স এর ক্ষেত্রে আমার এমন মনে হয়েছে।

জেনারেলাইজ প্রফাইল থাকাতে আপনি প্রায় সব ধরনের চাকরিতে আবেদন করতে পারবেন। সেই সুযোগ নিয়ে আমি বিভিন্ন ধরনের চাকরিতে আবেদন করতাম। তারই অংশ হিসাবে আইওটিএ কোম্পানিতে আবেদন করেছিলাম।

পজিশন ছিল, জুনিয়র এন্ড্রয়েট ডেভেলপার। কোম্পানির প্রফাইল, চাকরির রিকয়ারমেন্ট খুব ভালো ছিল। তাই আবেদন করেছিলাম।

সাধারনত, ওই সময়ে আমি চাকরির আবেদন করে ভুলে যেতাম। কোন কোম্পানি থেকে ইন্টারভিউ কল আসলে আমি আবার বিডিজবস এ লগিন করে আবেদন এর বিস্তারিত দেখতাম।

আবেদনের কিছুদিনের মধ্য একদিন হঠাত আইওটিএ কোম্পানি থেকে কল আসল। তারা জানালো আমি ইন্টারভিউ এর জন্য বিবেচিত হয়েছি। আমি যেন আপডেট সিভি নিয়ে, পরের শুক্রবার তাদের অফিসে চলে যাই। সেখানে আমার কোডিং টেস্ট এবং ইন্টারভিউ হবে।

সিভি প্রিন্ট করে ঘুমাতে গেলাম। তবে নো-হার্ড-ফিলিংস!

আইওটিএ ইন্টারভিউ এর সকালে যা ঘটলঃ

সকালে উঠে বাসে করে খিলখেত চলে গেলাম। যাওয়া টা একটু আগেই হয়ে গেলো। সে সময় আমার একজন খুব খুব প্রিয় মানুষ ছিল। আমার বুকের একটা অংশ ছিল সে। তার জন্যই মুলত ডেস্পারেটলি জব খুজতেছিলাম।

খিলখেত বাস্ট স্ট্যান্ড এ গিয়ে উনার সাথে কথা বললাম। সে খুব সাহস ছিল। যদিও আমি জানতাম পরিক্ষা ভালো হবে না।

আমার মনে আছে, একটা ডে পোস্ট দিয়েছিলাম। লেটস হ্যাভ ওয়ান মোর রিজ্যাকশন । ওই দিন আমার সাথে কয়েকজন ক্যান্ডিডেট ছিলেন। তার মধ্য একজনের কথা না বললেই নয়।

আমি আইওটিএ অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। উনাদের ফোন দিচ্ছি কিন্তু ধরছেন না। সেই সময়ে একজন ক্যান্ডিডেট আসলেন। দেখে মনে হচ্ছিল যে তিনিও ক্যান্ডিডেট।

আমার কাছে রোড নাম্বার জিজ্ঞেস করলেন। আমি যেহেতু নতুন তাই রোড নাম্বার জানি না বলে দিলাম। রিমেম্বার, উনি রোড নাম্বার জিজ্ঞেস করেছেন, অফিস এড্রেস না।

যাই হোক, অনেক্ষন পরে অফিসে ঢুকে দেখি উনিও ক্যান্ডিডেট। তো, আমি ফ্রেন্ডলি বললাম, আপনাকে নিচে দেখছি তবে বুঝতে পারি নাই।

উনি কি যে একটা ভাব নিলেন। বললেন, উনি ঠিকি চিনছেন আমিও ক্যান্ডিডেট। আবার উনাকে অফিসের এড্রেস দেই নাই কেন সেটাও পিঞ্চ করলেন। আমি বললাম, আপনি রোড নাম্বার জানতে চেয়েছেন।

উনার ভাব এক লাইন বেড়ে গেলো। উনি যত রুড হন, আমি তত হাম্ববল হই। আমি জানি, জ্ঞ্যানি লোকেরা হাম্বল থাকে, তারা জানে, তারা স্টুপিড নয়।

আইওটিএ ইন্টারভিউ পর্যন্ত যেতেই পারলাম নাঃ

কিছুক্ষন পর আমাদের একটা রুমে নিয়ে যাওয়া হলো। একজন অমাইক ভদ্রলোক আমাদের পরিক্ষার প্রশ্ন দিলেন। ২টা খুব সহজ প্রশ্ন ছিল আমাদের জন্য। কম্পিউটার, ফোন, ইন্টারনেট সব ওপেন।

সাধারনত পরিক্ষা গুলোতে এ রকম দেখা যায় না। অন্তত দেশীয় সফটওয়্যার কোম্পানিতে এমন কালচার মাই আগে দেখি নাই। আমি খুবই ইমপ্রেসড হয়েছিলাম।

পরিক্ষা শুরু করলাম সবাই। নির্ধারিত সময়ে যারা প্রশ্ন সমাধান করতে পারল তারা পরের রাউন্ড এর জন্য বিবেচিত হল। যারা অর্ধেক সমাধান করতে পারল তাদের কে সময় বাড়িয়ে দেয়া হলো।

আমি চেষ্টা করতে থাকলাম কিন্তু মেজর একটা ভুলের কারনে রেজাল্ট আনতে পারলাম না। এন্ড গেজ হওয়াট। প্রথম রাউন্ড থেকে বাদ পরে গেলাম।

ফলাফল এবং অভজার্ভেশনঃ

আইওটিএ ইন্টারভিউ থেকে হার্ড রিজেকশন আসে। আমি সেখানে প্রথম রাউন্ড থেকেই বাদ পরে গিয়েছিলাম।

আইওটিএ এর অফিস টা ছোট কিন্তু গোছানো। পর্যাপ্ত আলো-বাতাস আছে। আমাদের পরিক্ষক খুবই ফ্রেন্ডলি ছিলাম। আমি কিছু পারছি না দেখেও উপহাস বা ব্যাড লুক দেন নি।বরং কয়েক বার জিজ্ঞেস করেছেন যে, কোন আপডেট আছে কি না।

পরিক্ষার সময়ে যে এনভার্নমেন্ট ছিল, একটা সফটওয়্যার কোম্পানির এনভার্নমেন্ট ঠিক এমনই হওয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি। এখানে মুখুস্ত করার কিছু ছিল না। আপনার স্কিল থাকলে প্রথম রাউন্ড পার হয়ে যেতে পারবেন।

অফিস ইন্টেরিওর খুব ফ্রেন্ডলি। আমাদের সবাই কে চা এর অফার করেছিল। উনাদের অফিসে ইন্টারনেট মারাত্বক ফাস্ট ছীল।

আমি বাসায় এন্ড্রয়েট স্টুডিও চালাই ৪জিবি র‍্যাম (তখন) আর প্রসেসর কোর-আই থ্রি। সেই জন্য এএস চালু হতেই এক মিনিট লাগে। কিন্তু আইওটিএ তে র‍্যাম ছিল ১৬জিবি আর প্রসেসর ৫ সম্ভবত। এইটার খুশিতেই আমি কয়েক বার এএস চালু করেছি আর ক্লোজ করেছিলাম। আমি কয়েকটা প্রজেক্ট চালু করেছিলাম।

মজার ব্যাপার ছিল, সেখানে গিট ছিল। তাই সিমিলার প্রজেক্ট ক্লোন করে, মোডিফাই করার সুযোগও ছিল।

রিজেকশন এর কারনঃ

মুলত প্র্যাক্টিস না থাকা এবং ডিটেইল প্রব্লেম সলভিং এ নজর না দেয়াতে আইওটিএ ইন্টারভিউ থেকে রিজেকশন আসে।

কেউ যদি বেসিক কোডিং পারে, ফান্ডামেন্টাল নলেজ থাকে তাহলে এখানে এন্ট্রি লেভেল চাকরি পাওয়া যেতে পারে। আর যদি কেউ গিট পারে, কন্টেস্ট প্রোগ্রামিং পারে তাহলে এখানে চাকরি পেতে সমস্যা থাকার কথা নয়।

আইওটিএ হচ্ছে ওয়ান অফ দ্যা ফিউ কোম্পানি যাদের কালচার আমার কাছে ওয়ার্ল্ড ক্লাস মনে হয়েছে। দে একচুয়ালি নো, হাউ টু হায়ার কুয়ালিটি ইঞ্জিনিয়ার। দে নো, হাউ দ্যা থিংস গোয়িং অন!

গালিব নোটস এর ইন্টারভিউ সেকশনের ব্লগ গুলো মুলত আমার নিজের এক্সপেরিয়েন্স করা জব ইন্টারভিউ নিয়ে। এখানে আমি আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার যেটা থেকে বিভিন্ন কোম্পানি এর ইন্টারভিউ নিয়ে অনেকে জানতে পারবে।

More From Author

কেপি-সফটওয়্যার সলুশন্স ইন্টারভিউ এক্সপেরিয়েন্স ২০১৮

নিরাপদ ফিউচার

নিরাপদ ফিউচার কে গুরুত্ব দিতে গিয়ে আমরা মানুষ টা হাড়িয়ে ফেলি!

গালিব নোটস বিজ্ঞাপনঃ

গালিব নোটস বিজ্ঞাপনঃ

Our Facebook Page

গালিব নোটস বিজ্ঞাপনঃ

Our Latest Twit

Subscribe For Last Update



ব্লগ সংক্রান্ত নোটিশঃ

বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে, ডিজাইন রেডি করে যোগাযোগ করতে পারেন। আমরা বিজ্ঞাপন চেক করে সাইট এর সাথে ফিট হলে প্রাইস নিয়ে আলোচনা করব। তবে, আমাদের সাইট এর ভিজিটর এবং কনভার্সন রেট বেশী হওয়ায় বিজ্ঞাপনের চার্জ কিছুটা বেশী। বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য দেখতে পারেন এখানে

ব্লগে লিখতে চাইলে, লেখা রেডি করে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। লেখা ইউনিক এবং কপি মুক্ত হতে হবে। লেন্থ ১ হাজার ওয়ার্ড এর বেশী হওয়া লাগবে। ব্যাকলিংক পেতে পারেন শর্ত মেনে। লেখা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য দেখতে পারেন এখানে।

গালিব নোটস বিজ্ঞাপনঃ

গালিব নোটস বিজ্ঞাপনঃ

Tech-Alert-Bangla-Ads-2

আমাদের অন্যান্য উদ্যোগঃ

টেক এলার্ট বাংলা টেকনোলজি ব্লগ। মোস্টলি ফ্রিল্যান্সিং-আউটসোর্সিং, অনলাইন এ আয়, বিভিন্ন টিউটোরিয়াল নিয়ে ব্লগ প্রকার করা হয় নিয়মিত। টেক এলার্ট এর ইউটিউব চ্যানেল দেখতে পারেন এখানে।

সিলিকভি  বাংলাদেশি ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি। ওয়ার্ডপ্রেস সংক্রান্ত সব ধরনের সার্ভিস যেমন থিম-প্লাগিন ডেভেলপমেন্ট, কোম্পানি সাইট, পার্সনাল সাইট, কাস্টমাইজেশন, ইকমার্স সলুশন ইত্যাদিয়ে দিয়ে থাকে। এর বাইরে সিলিকভি এর সাস প্রডাক্ট রয়েছে।

গ্রিন সফট হচ্ছে টেক ব্লগ যেখানে ইকমার্স এবং উকমার্স নিয়ে বিস্তারিত ব্লগ পাবেন। অনলাইনে ব্যাবসা এর জন্য যা যা জানা দরকার সব পাবেন গ্রিনসফট ব্লগ এ।

ক্যারিয়ার পোর্টাল হচ্ছে বাংলাদেশি প্রথম, সর্বাধুনিক মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি নির্ভর জব প্লাটফর্ম । সাইট এর বেটা ভার্শন রিলিজ করা হয়েছে এবং নিয়মিত আপডেট করা হয়ে থাকে।

গালিব নোটস এর ইউটিউব ভিডিওঃ

গালিব নোটস বিজ্ঞাপনঃ