কম্পিউটার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বা সিমিলার সাবজেক্ট গুলো তে  ম্যাথ এর গুরুত্ব কতটুকু এবং কোথায় কোথায় ম্যাথ লাগতে পারে, একইসাথে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং করার সময়  ম্যাথ কিভাবে দরকার হবে। এই বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিলাম আমার চ্যানেল এবং এই ভিডিও দেখার পরে অনেকেই আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন। ম্যাথ বেসিক যাদের সমস্যা রয়েছে তারা কিভাবে   ম্যাথের  দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারে।

এবং একই সাথে অনেকেই আমাকে রিকুয়েস্ট করেছেন ম্যাথের দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার জন্য আমরা যেন একটি রোডম্যাপ  প্রোভাইড করি। তো আমি আজকে আপনাদেরকে এই ভিডিওতে, ম্যাথ এর দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার জন্য কিছু পরামর্শ দিব ।

চলুন মূল ভিডিও শুরু করা যাকঃ এই ভিডিও মূলত কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট এর জন্য ডিজাইন করা হলেও অন্য অন্য ডিপার্টমেন্টের বিশেষ করে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের স্টুডেন্ট রা  ম্যাথ এর দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার জন্য চেষ্টা করে দেখতে পারেন।

বেসিক ম্যাথমেটিক্স এ যাদের সমস্যা রয়েছে তাদেরকে বলে রাখি এই ভিডিওতে আমি আপনাদেরকে আইনস্টাইন হওয়ার রোডম্যাপ দেখাচ্ছি না অথবা আপনারা যারা ম্যাথমেটিক্স অলিম্পিয়াডে অংশ নিতে চান অথবা আপনারা যারা ম্যাথমেটিক্স এর ইন্টারন্যাশনাল কম্পিটিশন গুলো তে অংশ নিতে চান তাদের জন্য এ রোড ম্যাপ নয়।

এই রোড ম্যাপ টি মূলত তাদের জন্য যারা কম্পিউটার সাইন্সে লেখাপড়া করছেন, সেকেন্ড ইয়ার থার্ড ইয়ার শেষ করে ফেলছে্‌ন, ফেলেছেন অথবা যারা ম্যাথ দুর্বলতার কারণে কম্পিউটার সাইন্সের পড়াশোনা ইনজয় করতে পারছেন না তাদের জন্য।

 চলুন শুরু করা যাকঃ

বেসিক ম্যাথ এর দুর্বলতার জন্য সবার প্রথমে আপনি অষ্টম শ্রেণীর ম্যাথমেটিক্স বইটি আপনি সংগ্রহ করবেন। এই বইটি অনেক সুন্দর একটি বই বিশেষ করে, যারা শুরু করতে চান তাদের জন্য এটি অনেক বেশি ইফেক্টিভ। আর এই বইটি যখন আপনি সংগ্রহ করবেন আপনার ছোট ভাই থেকে অথবা পাড়া-প্রতিবেশি থেকে অথবা বাজার থেকে। এই বইটি পড়ার সময়ে কিন্ত  অনেকেই হাসাহাসি করতে পারে।

কিন্তু আপনি যেহেতু বেসিক ম্যাথমেটিক্স এর গুরুত্ব দিচ্ছেন তাই হাস হাসি দেখে কোনভাবেই টি মোটিভেট হওয়া যাবে না।

আপনি অষ্টম শ্রেণীর ম্যাথমেটিক্স বই টি কালেক্ট করবেন এবং সেখানে শুরু থেকে  ম্যাথ সমাধান করার চেষ্টা করবেন।উদাহরণ এর ম্যাচগুলো সমাধান করার চেষ্টা করবেন, অনুশীলন ম্যাথ গুলো সমাধান করবেন পাশাপাশি যে ফর্মুলা রয়েছে সেই ফর্মুলা গুলোর এক্সপ্লেনেশন দেখার চেষ্টা করবেন এবং এই বইটি শেষ করার জন্য আপনার  বড়জোর একমাস সময় লাগতে পারে।

যদি আপনার অষ্টম শ্রেণীর ম্যাথমেটিক্স গুলো সমাধান করতে সমস্যা হয় তখন আপনি পঞ্চম শ্রেণীর ম্যাথমেটিক্স বই থেকে কালেক্ট করবেন।

 সাধারণত দেখা যায় অষ্টম শ্রেণীর ম্যাথ সমাধান করতে বেশিরভাগেরই তেমন কোনো সমস্যা হয় না আর যারা একান্তই ম্যাথমেটিক্স ফাকি বাজি স্টুডেন্ট ছিলেন এবং যাদের ম্যাথমেটিক্স ফোবিয়া হয়ে গেছে তাদের জন্য অষ্টম শ্রেণীর বই কিছুটা সমস্যা হতে পারে।

 তারা সাধারণত পঞ্চম শ্রেণীর বই থেকে শুরু করতে পারেন। এখন আপনি যখন অষ্টম শ্রেণীর বইটির সমস্ত অনুশীলন শেষ করবেন আপনাকে মাথায় রাখতে হবে এটি কিন্তু পরীক্ষার জন্য পড়ছেন না। এটি আপনি বোঝার স্বার্থে পড়ছেন।

 এজন্য আপনাকে ইন ডিটেইলস লিখে লিখে ম্যাথমেটিক্স পড়তে হবে না আবার আপনাকে একদম সর্টকাটে সব শেষ করে ফেলা যাবে না। আপনি আস্তে ধীরে বুঝে  ম্যাথ সমাধান করবেন।

অষ্টম শ্রেণীর ম্যাথ বই টা যখন আপনার শেষ হয়ে যাবে তখন আপনি নবম-দশম শ্রেণীর বই কালেক্ট করবেন। এবং সেই বইটিও আপনি একই ভাবে উদাহরণ, অনুশীলন করবে সেটিরও এক্সপ্লেনেশন দেখার চেষ্টা করবেন।

 এবং যদি আপনার হাতে সময় থাকে তাহলে আপনি নবম দশম শ্রেণির হায়ার ম্যাথ বইটিও আপনি কালেক্ট করবেন এবং সেখানকার ইন্টারেস্টিং প্রবলেম যেগুলো আছে সেগুলো নিয়ে কাজ করবেন এবং আপনি যখন অষ্টম এবং নবম দশম শ্রেণীর ম্যাথ সলভ করে ফেলবেন তখন কিন্তু আপনার মোটামুটি ম্যাথমেটিক্স এর বেসিক প্রবলেম অনেকাংশে কেটে যাবে।

 এবার আপনি যদি আরো ম্যাথমেটিক্স শিখতে চান, যদি আপনি কম্পিউটার সাইন্সে বড় মাপের ইঞ্জিনিয়ার হতে চান। তাহলে আপনাকে আরো একটু কাজ করতে হবে সেক্ষেত্রে আপনাকে শুরুতে ইন্টারনেটে বই রয়েছে গণিতের উপর সেই বইগুলো কালেক্ট করবেন এবং একইভাবে সমাধান করবেন।

সাধারণত ইন্টারে যে বইগুলো আমরা পরীক্ষার জন্য সমাধান করে থাকি সেগুলো একটু বেশি সময় নিয়ে থাকে কারণ এখানে টপিক ভাই টপিক অনেকগুলো ম্যাথ রয়েছে। এবং এই টপিকগুলো একটু অ্যাডভান্স লেভেলের হয়ে থাকে। মানে এসএসসি থেকে কিন্তু কিছুটা কঠিন হয়ে থাকে। তাই ইন্টার লেভেলের বইগুলো সমাধান করতে আপনার বেশ সময় লাগবে।

 তবে এখানে একটি ব্যাপার বলে রাখি যে ইন্টারে কিন্তু অনেক রাইটারের বই পাওয়া যায়। আপনি যেকোনো এক রাইটারেরয়ইয়ের সমাধান করবেন। এখানে আপনার মূল উদ্দেশ্য ম্যাথের বেসিক  দুর্বলতা দূর করা। এখানে কিন্তু আপনি পরিক্ষার জন্যে  পরছেন না যে আপনাকে অনেক গুলো বই সমাধান করতে হবে।

 আপনার যদি একাডেমিক ম্যাথমেটিক্স বইগুলো পড়তে চরম বিরক্ত লাগে অথবা কোন ভাবে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন শেখাতে চমক হাসান কিংবা জাফর ইকবাল স্যারের অনেক ভালো ম্যাথমেটিক্স এর বই রয়েছে।এবং এই বইগুলো আপনি কিনে রাখতে পারেন যখন আপনার অ্যাক্যাডেমিক বই গুলো পড়তে বিরক্ত লাগবে তখন আপনি সেই বইগুলো পড়া শুরু করবেন।

 আর এই বইগুলো কিন্তু অনেকটাই ইন্টারেস্টিং ওয়েতে লেখা রয়েছে। অনেক ছেলে মেয়ে রয়েছে যারা ম্যাথমেটিক্স প্রচন্ড ভয় পেত। তারা কিন্তু এখন এই বইগুলো পড়ে অনেকটাই ভালো করছে, তারা কিন্তু এখন এই বইগুলো পড়ে অনেকটাই ভাল করছে তাই আপনি যদি এই বই গুলো কিনে রাখেন যখন প্রচন্ড বিরক্ত লাগবে একাডেমিক বইগুলো তখন আপনি এই বইগুলো পড়ে অনেকটাই রিলাক্স হতে পারবেন।

ম্যাথমেটিক্স এর ব্যাপারে আর একটি কথা না বললেই নয়, আপনি যখন ব্যাসিক ম্যাথ নিয়ে কাজ করা শুরু করবেন আপনার যে ডেভলপমেন্ট হবে এটি কিন্তু, একটু যখন বেসিক ম্যাথ নিয়ে কাজ করা শুরু করবেন আপনার যে ডেভেলপমেন্ট হবে এটি কিন্তু একটু স্লোলি ডেভলপমেন্ট হবে।

আপনি কিন্তু একদিনে বুঝতে পারবেন না বা কয়েক মাসের মধ্যেই কিন্তু বুঝতে পারবেন না যে আপনার বেসিক ম্যাথ এর সমস্যার সমাধান হয়ে যাচ্ছে। বা আপনার মধ্যে একটা ডেভলপমেন্ট আসছে। এই যে আপনার মধ্যে একটা ডেভলপমেন্ট আসবে,এজন্য আপনাকে ধৈর্য ধারণ করে,কোন প্রকার আউটপুটের চিন্তা না করেই আপনাকে রেগুলারলি ম্যাথ করে যেতে হবে।

 আপনি যত বেশি ম্যাথমেটিক্স  প্র্যাকটিস করবেন আপনার জন্য তত সহজ হবে  ম্যাথমেটিক্স এর বেসিক দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার জন্য।

 যদি আপনি এই বিষয়গুলো ফলো করেন তাহলে ম্যাথ এর বেসিক দুর্বলতা আপনার দূর হয়ে যাবে আর যারা এসিএম-আইসিপিসি এর মত ইন্টারন্যাশনাল মানের কনটেস্ট করবেন তাদের আরও হাই লেভেলে করতে হবে।

 তবে এই ব্যপারগুলো আমাদের সাধারণত বলে দিতে হবে না যারা এসিএম-আইসিপিসি এর মত ইন্টার্নেশনাল  কনটেস্ট গুলো করে থাকে  তারা নিজেরাই জানে যে কোন বিষয় গুলো শিখতে হবে।

 এছাড়াও এই বিষয়ে অনেক টিউটোরিয়াল রয়েছে যেগুলো আপনারা চাইলে দেখে নিতে পারেন। এখন আধুনিক এই যুগে এসে অনেকগুলো টিউটোরিয়ালরয়েছে যেগুলো থেকে আপনি ম্যাথ এর উপর কোর্স করতে পারবেন।

 যদি আপনার একাডেমিক বইগুলো পড়তে ভালো না লাগে, যদি আপনি টিটুটর ছাড়া ম্যাথ করতে পছন্দ না করেন সেক্ষেত্রে আপনি এই প্লাটফর্ম গুলো থেকেও ম্যাথের কোর্স  করতে পারেন।

 যেমন ইউড্যাসিটি রয়েচে,উডেমি রয়েছে এছাড়াও রয়েছে আপনি চাইলে এই প্ল্যাটফর্ম গুলোতেও ম্যাথ এর যেকোনো একটি কোর্স নিয়ে প্র্যাকটিস করার শুরু করতে পারেন।

 এর বাইরে ইউটিউবে প্রচুর টিউটিরিয়াল রয়েছে। বাংলাতে রয়েছে, ইংরেজিতে টিউটরিয়াল রয়েছে একই সাথে অন্যান্য ল্যাঙ্গুয়েজে টিউটিরিয়াল রয়েছে। আপনার যেই টপিকে সমস্যা সেই টপিক অনুযায়ী আপনি যদি ভিডিও দেখেন এবং প্র্যাকটিস করেন তাহলে কিন্তু আপনার আলটিমেট ডেভেলপমেন্ট চলে আসবে।

অনেকেই রয়েছে যাদের ম্যাথ দেখলেই জল এসে যায়, যাদের ম্যাথ ফোবিয়া প্রচন্ড রকমের রয়েছে তো এই শ্রেণীর মানুষ যদি আপনি হন তো  আপনাকে আস্তে আস্তে বোঝার চেষ্টা করতে হবে যে ম্যাথ কিন্তু এতটাও কঠিন বিষয় নয়।

 আপনি যদি সাধারন ক্যালকুলেশন গুলো বুঝেন এবং বাকিগুলো বোঝার চেষ্টা করেন তাহলে কিন্তু আপনি সহজেই সেগুলো পারবেন। আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে নরমালি আপনি যদি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে চান আপনাকে কিন্তু ম্যাথমেটিক্স এর আইনস্টাইন হতে হবে না। আপনি যদি নরমালি ক্যালকুলেশন গুলা বোঝেন, লজিক গুলো বোঝেন তাহলে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে পারবেন।

 যদি আপনি গুগোল ফেসবুকের মত টেক জায়ান্ট এ চাকরি করতে চান সেটি ব্যাপার আলাদা। তবে নরমালি আমাদের দেশে যে সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রি গুলো রয়েছে, সেখানে যদি আপনি জব করতে চান, তবে আপনার যদি হাই লেভেল ম্যাথমেটিক্স এর স্কিলস না থাকে তারপরেও আপনার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং হওয়ার সুযোগ আছে।

যদি ম্যাথমেটিক্স এর স্কিল ডেভেলপমেন্ট এর উপর আপনার কোন প্রশ্ন থাকে অথবা কোন পরামর্শ থাকলে কমেন্ট বক্সে আমাদেরকে জানাতে পারেন। আপনাদের কমেন্ট গুলো আমরা অবশ্যই রিপ্লাই করার চেষ্টা করবো।

তো এই ছিল আজকের ভিডিও। দেখা হবে পরের ভিডিওতে।  ততক্ষণ পর্যন্ত ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন, এই প্রত্যাশায়। বিদায় নিচ্ছি।

0Shares
Previous post সিএসই না পড়ে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হলে যে সমস্যা হবে!
ওয়েব ডিজাইনার বা ফ্রন্ট-এন্ড ওয়েব ডেভেলপার Next post ওয়েব ডিজাইনার বা ফ্রন্ট-এন্ড ওয়েব ডেভেলপার হবেন যেভাবে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Close

গালিব নোটস এর ইউটিউব ভিডিওঃ