কেপি-সফটওয়্যার সলুশন্স কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিয়েছিলাম ২০১৮ সালের শুরুতে। সামার ২০১৮ তে আমার সেমিস্টার ড্রপ ছিল এবং আমি সেই ড্রপ সেমিস্টার এ কেপি-সফটওয়্যার সলুশন্স ই এন্ড্রয়েট ডেভেলপার হিসাবে কাজ করি। কিভাবে গ্রাজুয়েশন শেষ না করেই চাকরি পেলাম আর কি হয়েছিল সে সব নিয়েই “কেপি-সফটওয়্যার সলুশন্স ইন্টারভিউ” ব্লগ!
ভার্সিটি এর একটা সেমিস্টার ড্রপ ছিল। সেই সেমিস্টারেই আমি এই কোম্পানিতে এন্ড্রয়েট ডিপার্টমেন্ট এ ইন্টার্নশিপ করি। তবে এই ইন্টার্নশিপ এর সাথে অনেক গুলো কাহিনি জরিত। সেগুলো না বললে এই ব্লগ অসম্পুর্ন থেকে যাবে।
সেই সময়ে আমি অনেক বড় একজন ফ্রিল্যান্সার, টিম নিয়ে কজ করি। দিন কাল ভালই যাচ্ছিল। একটা কথা আছে না, শুখে থাকতে ভুতে কিলায়, আমার জন্য সেটা হয়েছিল, শুখে থাকতে আকামের মন চায়। একজন এসে বললো, তুমি এত কিছু কর, তাতে কি?
তোমার শশুড় বাড়িতে কি পরিচয় দিবা? আমি বললাম, পরিচয় লাগবে? আচ্ছা! আমি ১ মাসের মধ্য ফ্রিল্যান্সিং এর টিম ক্লোজ করে দিলাম। কাজ বন্ধ করে দিয়ে, একটা ইন্টার্নশিপ শুরু করলাম। একটা ছেলে যে কিনা টিম নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে, সে একটা আনপেইড ইন্টার্নশিপ এ ঢুকল, শুধু মাত্র পরিচয় তৈরি করার জন্য।
অথচ, আফসোস, যারা এই পরিচয় চেয়েছিল, তারা কেউ ই আর সাথে থাকে নি। তবে এটা একটা ভালো অভিজ্ঞতা ছিল আমার জন্য। আমি অনেক কিছু শিখেছিলাম।
এবার আসি ইন্টারভিউ এর ব্যাপারে। আমি তখন টুক টাক এন্ড্রয়েট এপ বানানোর ট্রাই করতাম। তবে আমি সোস্যাল মিডিয়াতে সেগুলো শেয়ার দিতাম। ওয়াসিফ ভাই একদিব বললেন, এন্ড্রয়েট এ ইন্টার্ন করবি? আমি বললাম, ভাই আমি তো কিছু পারি না।
ভাই বললো, সিভি দে আমারে। আর প্রস্তুত থাকিস। ভাই রে সিভি দিলাম একটা। কিছুদিন পর ভাই বললো, মেইল চেক কর। মেইল আসার কথা। আমি মেইল খুলে দেখলাম, কেপি সফটওয়্যার সলুশন থেকে ইন্টারভিউ এর কল পেয়েছি। স্কাইপে ইন্টারভিউ নেয়া হবে।
ইন্টারভিউ অভিজ্ঞতাঃ
স্কাইপে আমাকে একটা গ্রুপ কলে যুক্ত করা হলো। প্রথমবার কল মিস করলাম। পরের বার কল শুরু হল কিছুটা গরম কথা বার্তা দিয়ে। ইন্টারভিউয়ায় জানালো, সিটিও অলরেডি চলে গেছেন। যা হোক, প্রশ্ন করা শুরু হলো। মুলত আমার সিভি নিয়ে কথা হচ্ছিল।
তার পর আমাকে একটা প্রজেক্ট নিয়ে ব্রিফ করা হলো। সেটার রিকোয়ার্মেন্ট আর ডেডলাইন নিয়ে কথা হল এবং ইন্টারভিউ শেষ হলো।
প্রজেক্ট অভিজ্ঞতাঃ
আমার একটা সমস্যা হচ্ছে, আমার প্রজেকশন এ যথেষ্ট সমস্যা হয়। বিশেষ করে, টেকনিক্যাল ব্যাপারে আমার কনফিডেন্ট থাকে আকাশ সমান কিন্তু কাজ এর অভিজ্ঞতা অনেক সময়ই থাকে না। ফলে প্রজেকশন ভুল হয়ে যায়।
তো, কেপি সফটওয়্যার সলুশন থেকে প্রজেক্ট নেয়ার সময়ও এর ব্যাতিক্রম হয় নি।
প্রজেক্ট নেয়ার সময়ে ভেবেছিলাম করে ফেলব। শিখে করে ফেলব। কিন্তু প্রজক্ট শুরু করে চাপ অনুভব করা শুরু করলাম। তবে আমি যেহেতু চাপ নিয়ে অভ্যাস্ত তাই কাজ না পারার পরেও সমস্যা হয় নি। পরে আমি ডেডলাইন এর সময়ে শুধু মাত্র ইউয়াই এর এক্সএমএল ফাইল জমা দিয়ে দেই।
ফলাফল এবং অভজার্ভেশনঃ
সেটা ছিল আমার জন্য একেবারে প্রথম দিকের ইন্টারভিউ। সেই সময়ে আমি কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার পরও সাহস করে ইন্টারভিউ দেওয়াটা বড় ব্যাপারা ছিল।
কেপি সফটওয়্যার সলুশন্স থেকে হার্ড রিজেক্ট আসে স্বাভাবিক ভাবেই। এই খানে প্রথম এটেম্প এ আমার ইন্টার্নশিপ হয় নি। তবে পরবর্তীতে আমি এই কোম্পানিতে নাটকিয় ভাবে ইন্টার্নশিপ এর সুযোগ পেয়ে যাই। যেটা আমার জন্য ছিল প্রথম প্রফেশনাল এক্সপেরিয়েন্স।
সেই গল্প, চাপে ভর্তা হয়ে যাওয়া, চাপ থেকে শেখার গল্প আরেকদিন। এই কোম্পানির অভিজ্ঞতা দিয়ে পরবর্তীতে স্বতেজ লাইফ এর সিটিও হয়েছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ড্রয়েট এর কোর্স এর ট্রেইনার হয়েছিলাম।
কেপি সফটওয়্যার এর একটা দিক হচ্ছে, এখানে সবাই কে সুযোগ দেয়ার চেষ্টা করা হয়। এখানে সিইও সুদুর প্রসারি চিন্তা করেন। দেশিও সমস্যা নিয়ে ভাবেন। সমাধানের চেষ্টা করেন।
আমার কাছে মনে হয়, বেসিক কোডিং পারলে আর ম্যানার ঠিক থাকলে, আগ্রহ দেখিয়ে এই কোম্পানিতে চাকরি বাগিয়ে নেওয়া সম্ভব।