অনেক সময় আমাদের আর্জেন্ট চাকরির দরকার হয়। সেটা পাশ করার পরে হতে পারে। হঠাত চাকরি হারানোর কারনে হতে পারে বা পারিবারিক সমস্যার কারনেও হতে পারে।

চাকরি না হলে প্রিয় মানুষটির বিয়ে হয়ে যাবে বা তার বিয়ে আসতেছে, কিছু একটা করতে হবে- এই রকম পরিস্থিতিতে আর্জেন্ট চাকরির দরকার হতে পারে।

প্রশ্ন হচ্ছে আর্জেন্ট চাকরির দরকার হলে কি করবেন? এই ব্লগে আমি আপনাদের কে জানাবো, কি করতে হবে? যারা চাকরি খুজছেন বা চাকরি লাগবে ভবিশ্বতে তারা এই ব্লগটি পড়ে দেখতে পারেন।

আপনাদের মধ্য যারা শিক্ষার্থী, চাকরি করছেন বা কোন সম্পর্কে আছেন তাদের উচিৎ এই ব্লগটি পড়ে ফেলা। কারন বিপদ আসার আগেই সাবধান না হলে, বিপদ সামলে উঠা মারাত্বক কঠিন হয়ে যায়।

মাথা ঠান্ডা রাখুন

যে কারনেই আর্জেন্ট চাকরির দরকার হোক না কেন, আপনাকে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। মাথা গরম করে কোন উপকার তো নাই ই বরং উলটা বড় ধরনের সমস্যাতে পড়তে পারেন।

আর্জেন্ট চাকরির দরকার হলে মাথা ঠান্ডা রাখা খুবই কঠিন। এ অবস্থায় নিয়মিত ধর্ম চর্চার মাধ্যমে নিজেকে শান্ত রাখতে পারেন।

মাথা গরম করে এমন কোন কাজে যাওয়া উচিৎ নয় যেটা আপনার জন্য প্রয়োজ্য নয়। উদাহরন হিসাবে বলা যায়- রাস্তায় একটা বিজ্ঞাপন দেখলেন যে ইনভেস্ট না করে আয় করুন। আপনি চাকরিতে গেলেন আর দেখলেন সেই কাজ আপনি পারেন না।

তাহলে ঐ যে একদিন সেখানে ব্যয় করলেন, এটাই কিন্তু লস হল।

চাকরির আর্জেন্সি হলে গনহারে মেসেজ দিবেন না। এতে করে আপনার সময় অপচয় হবে। বেশির ভাগ বলবে, সিভি দেন দেখব। কিন্তু আর খোজ থাকবে না।

এর কারন হচ্ছে, সবাই কিন্তু চাকরি দিতে পারে না। সবাই কিন্তু আপনাকে রেফার করবে না। আপনার উচিৎ, বুঝে শুনে যারা সিনির আছে তাদের সাথে কথা বলা।

তবে এক্ষেত্রে সরাসরি চাকরি চাইলে খুব একটা উপকার হবে না। বরং আপনার কাজ নিয়ে কথা বলুন, স্কিলস নিয়ে কথা বলুন, কাজের জন্য ফ্রি আছেন সেটা জানিয়ে রাখুন।

আপনার সিভিটি দেখিয়ে নিতে পারেন সময় হলে। এতে করে সেই সিনিয়র আপনার ব্যাপারে অবগত থাকবে। আর সুযোগ আসলে আপনাকে আগে রেফার করবে।

সিভি আপডেট করুন

আর্জেন্ট চাকরি দরকার হলে, আমরা গন হারে একই সিভি সবাইকে দিতে থাকি। এই ভাবে চেষ্টা করলে চাকরি পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। মনে রাখতে হবে, সিভি হচ্ছে চাকরি পাওয়ার চাবি। আর সঠিক চাবি না হলে কি তালা খুলবে?

শুধু আর্জেন্ট চাকরি নয়, যে কোন সময়ে চাকরি খোজা শুরু করলে আপনি সবার প্রথমে সিভি আপডেট করে নিন। সিভি তে সময় দিন কয়েকদিন। কয়েক যায়গা থেকে সিভি রিভিউ করিয়ে নিন।

আরেকটা ব্যাপার, চাকরির জন্য যদি আপনার স্কিল সেট বা জব ক্যাটাগরি আলাদা হয় তাহলে অবশ্যই আলাদা আলাদা সিভি বানান। আর যে কোন কোম্পানি বা ব্যাক্তি কে সিভি দেয়ার আগে অবশ্যই সিভি আপডেট করে নিবেন।

সিভিতে যাদের রেফারেন্স হিসাবে যুক্ত করবেন তাদের কে জানিয়ে রাখুন। তাদের সাথে যোগাযোগ রাখুন। ভালো হয়, যদি আপনি তাদের দিয়ে সিভি দেখিয়ে নিতে পারেন বা তাদের সিভির এক কপি তাদের কে দিয়ে রাখেন। এতে করে তারা আপনার ব্যাপারে জানতে পারবে।

নিজের স্কিলস জানুন

আর্জেন্ট চাকরি দরকার হলে অনেকে একটি ভুলটি করে। সেটা হচ্ছে, গন হারে সব ধরনের চাকরিতে আবেদন করে। এতে করে চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন কিছু না।

আপনাকে প্রথমে স্থির করতে হবে যে, কি কি মেজর স্কিল আপনার আছে। তার পর সেগুলো সম্পর্কিত স্যাম্পল কাজ রেডি করতে হবে। এর সাথে সাথে যদি আপনি স্কিল টেস্ট দিয়ে দিতে পারেন, ভালো হবে।

এই সময়ে চাকরিতে আবেদন এর সময়ে আপনি একটা ক্যাটাগরির কাজ স্পেসিফিক্যালি অফার করবেন। সাথে সাথে অন্য ক্যাটাগরির কাজ দিলেও করতে পারবেন বলে জানিয়ে রাখুন। কখনও বলবেন না যে, যে কোন কাজের চাকরি দিলেই করবেন।

নেটওয়ার্কিং বাড়াতে থাকুন

নেটওয়ার্কিং হচ্ছে এসেট যেটা অনেকেই জানেন না। আপনার যদি আর্জেন্ট চাকরির দরকার হয়, তাহলে নিজের নেটওয়ার্কিং এর পাশা-পাশি নেটওয়ার্কিং বাড়াতে হবে। প্রতি দিন বা প্রতি সপ্তাহে কয়েক জন নতুন মানুশের সাথে পরিচিত হন।

নতুন করে নেটওয়ার্কিং করার সময়ে অনেকেই একটু দ্বিধায় থাকেন। মনে রাখবেন, ভালো কিছু করার জন্য আপনাকে কমফোর্ট জোনের বাইরে যেতেই হবে।

নেটওয়ার্কিং এর ক্ষেত্রে যেটা হয়, আপনি যত মানুষের সাথে পরিচিত হবেন তাদের সবাই কিন্তু আপনার নেটওয়ার্কিং এ আসল এমন না। আপনি যাদের লাইফে ভ্যালু যুক্ত করতে পারবেন, কেবল মাত্র তারাই আপনার নেটওয়ার্ক হিসাবে গন্য হবে।

স্কিলস বাড়াতে থাকুন

চাকরির আর্জেন্সি হলে, অনেকে স্কিলস এর দিক নজর দেন না। শুধু চাকরি খুজে আপনার চাকরি পেতে বেশি সময় লাগবে। কিন্তু আপনি যদি এই সময়ে স্কিল বাড়াতে থাকেন, আপনার চাকরি পেতে সুভিদা হবে।

আরেকটা ব্যাপার, শুধু একটা চাকরি পাওয়াই কিন্তু শেষ কথা নয়। আপনার উন্নতির জন্যও স্কিল দরকার। এমন কিছু শিখুন যেটার মার্কেট ডিমান্ড আছে। প্যাশ খুজতে যেয়ে অনেকে লম্বা সময় ব্যয় করে ফেলে। এ ক্ষেত্রে আমি ব্যাক্তিগত ভাবে মনে করি, শুরু করে দেয়া উচিৎ।

পিতা-মাতার সাথে ভালো ব্যাবহার করুন

চাকরির আর্জেন্সি হলে বা না হলে, সব সময় পিতা মাতার সাথে ভালো ব্যাবহার করুন। পিতা মাতার দোয়া আপনাকে লাইফে কত বেশি হেল্প করতে পারে আপনি চিন্তাও করতে পারবেন না।

আমার গ্রাজুয়েশন শেষ করার আগেই চাকরি পেয়েছি অথচ এটা আমি চিন্তাও করি নি। আবার আমার অনেক ফ্রেন্ড খুব ভালো রেজাল্ট নিয়ে বের হয়ে বছরের পর বছর বেকার থেকেছে। আমি মনে করি, আমার পিতা মাতার দোয়া আমার চাকরি পাওয়ার পিছনে বড় ভুমিকা রেখেছে।

পিতা মাতার সাথে বিস্তারিত আলোচনা করুন। যদি এমন হয় যে, তারা আপনার কাজ বুঝেন না, তাহলে তারা যেভাবে বুঝে সেভাবে বুঝিয়ে বলুন। পিতা মাতার সাথে প্রতারনা করবেন না। আর যদি ভুল করে থাকেন, সেটার জন্য ক্ষমা চান।

যদি কখনও সমস্যা নিয়ে কথা বলেন, দেখবেন কথা বলার পর মানুষিক ভাবে একটা শান্তি পাবেন। এতে করে, ফ্রেস ভাবে সমসয়া নিয়ে চিন্তা করা সহজ হবে।

শেষ কথাঃ

চাকরি পেতে কিছুটা বেগ পেতে হলেও, আপনি যদি এই পরামর্শ গুলো ঠিক ঠাক ফলো করেন, চাকরি পাবেন আশা করা যায়।

আমাদের দেশে প্রায় সব কোম্পানি কোয়ালিটি কর্মী শুন্যতায় ভুগছে। ইন্ডাস্ট্রি আগাতে পারছে না শুধু মাত্র কর্মীর অভাবে। আপনাকে শুধু একটু ফোকাস থাকতে হবে। একটূ এগিয়ে যেতে হবে।

চাকরির বিজ্ঞাপনে হাজার হাজার ছেলে-মেয়েরা কমেন্ট করে, শিখিয়ে দিলে পারব। ৬ মাস-১ বছর যায় কিন্তু কমেন্ট বদলায় না। অথচ তারা যদি ১ মাস একটু কষ্ট করে কাজ গুলো শিখে নিত, তাহলে কয়েক মাসের মধ্যই চাকরি পেতে পারত।

0Shares
একটা চাকরি দেন, galibnotes Previous post আমি খুব বিপদে আছি! আমাকে একটা চাকরি দেন ভাই…
Next post কেপি-সফটওয়্যার সলুশন্স ইন্টারভিউ এক্সপেরিয়েন্স ২০১৮

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Close

গালিব নোটস এর ইউটিউব ভিডিওঃ