গালিব নোটস এর নতুন ভিডিও তে সবাইকে স্বাগতম। কিছুদিন আগে আমি একটি ভিডিও বানিয়ে ছিলাম কিভাবে দেশে বসে বিদেশি জব উচ্চ বেতনে করা যায় এ ব্যাপারে।

এই ভিডিও  পাবলিশ হওয়ার পরে অনেকেই  আমার কাছে জানতে চেয়েছেন যে কিভাবে তারা রিমোট জবের প্রস্তুতি নেবে এবং কিভাবে তারা রিমোট জব পেতে পারে সে ব্যাপারে আরও একটু বিস্তারিত কথা বলতে।

যদিও আমি আমার আগের ভিডিওতে যথাসম্ভব চেষ্টা করেছিলাম সবগুলো টপিক কাভার করার জন্য তবে আজকের ভিডিওতে আমি আরো একটু স্পেসিফিকভাবে কথা বলব।

এই ভিডিওতে আমি আপনাদেরকে মোট ছয়টি স্টেপ দেখাবো। যে স্টেপ গুলো ফলো করে আপনি চাইলে বিদেশের রিমোট জবগুলো পেতে পারেন। 

অনেকেই রয়েছেন কম্পিউটার সায়েন্সে ভর্তি হতে চান অথবা কম্পিউটার সাইন্সে পড়াশোনা করছেন অথবা ক্যারিয়ারে অনেক কিছু নিয়ে হতাশায় রয়েছেন তাদের জন্য আমি একটি ফেসবুক গ্রুপ খুলেছি যে গ্রুপের লিংক ডেসক্রিপশন বক্সে সেখান থেকে জয়েন করলে আপনারা সরাসরি ফেসবুক গ্রুপে আমাকে কোশ্চনস করতে পারবেন। আর আপনার প্রশ্ন থেকে আপনার উপকার হতে পারে আপনার ফ্রেন্ড দের ও উপকার হতে পারে।

এবারে চলুন মূল ভিডিও শুরু করা যাক।

দেশে বসেই আপনি যদি উচ্চ বেতনের বিদেশে জব করতে চান তাহলে সবার প্রথম স্টেপ হচ্ছে আপনাকে একটি সিভি বানাতে হবে।

এখন কথা হচ্ছে যে কোন চাকরিতে তেই তো সিভি বানাতে হয়  তাহলে রিমোট জবের ক্ষেত্রে আলাদা করে   সিভির ব্যাপারটায় কথা বলছি কেন।  এর কারণ হচ্ছে আপনি যখন বিদেশী কোন কোম্পানিতে এপ্লাই করবেন আপনার  সিভি গুলো প্রাথমিকভাবে কোন একটা সফটওয়্যার দিয়ে  স্ক্যান করা হয়ে থাকবে।

এই কারণেই আপনার  সিভি যদি ওই সফটওয়্যার দিয়ে স্ক্যান করার সময় বাদ পড়ে যায়  তাহলে কিন্তু আপনি শুরুতেই বাদ পড়ে যাবেন। তাই যখন আপনি কোন রিমোট জবের জন্য সিভি বানাবেন তখন আপনাকে বেশ কিছু জিনিস লক্ষ্য রাখতে হবে।

প্রথমত আপনার সিভি টি টেবিলে লেস হতে হবে।  টেবিল থাকলে  অনেক সময়ই সফটওয়্যার গুলো সেটি স্ক্যান করতে পারে না। 

এরপরে আপনার সিভি তে পর্যাপ্ত পরিমাণ কিওয়ার্ড থাকতে হবে। আপনি যে চাকরিতে আবেদন করছেন সেই চাকরি অনুযায়ী যেই কিওয়ার্ড  দরকার সেগুলো অবশ্যই আপনার সিভি তে রাখতে হবে। 

চেষ্টা করবেন আপনার সিভি তে যেন খুবই সুন্দর হয় এবং প্রফেশনাল মানের হয়। এক্ষেত্রে আপনি কিন্তু সিভি বানানোর টিপস এন্ড ট্রিকস দেখতে পারেন আমাদের ক্যারিয়ার পোর্টালের ইউটিউব চ্যানেলে। আমাদের ক্যারিয়ার পোর্টালের ইউটিউব চ্যানেলের লিংক রয়েছে ডেসক্রিপশন  বক্স এ।

সিভি বানানোর পরপরই আপনি বিভিন্ন কোম্পানিতে আবেদন শুরু করবেন এবং এখন আপনার স্টেপ টু শুরু হবে।

স্টেপ টু তে আপনি  এক্সটেন্সিভ পরিমাণ  এগ্রেসিব ভাবে  রেসপন্স করার চেষ্টা করবে না অর্থাৎ আপনাকে যেকোন মাধ্যমে যেকোনো সময়ে আপনাকে রিচ করলেই আপনি  খুব দ্রুত রেসপন্স করার চেষ্টা করবেন।

এক্ষেত্রে আমার সাজেশন হচ্ছে  যেই মাধ্যমগুলোতে আপনি সবচেয়ে বেশি রেসপন্স পেতে পারেন সেগুলো সব সময়ই কম্পিউটারে বসলেই বিভিন্ন ট্যাবে ওপেন করে রাখতে পারেন। যেমন একটি ট্যাবে আপনি জিমেইল ওপেন করে রাখতে পারেন অন্য একটি ট্যাবে  আপনার  লিংকডইন প্রোফাইলটি ওপেন করে রাখতে পারেন এবং আরো একটি ট্যাব খুলে আপনি আপনার হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট টি ওপেন করে রাখতে পারেন।

এভাবে আপনি আপনার গুরুত্বপূর্ণ কমিউনিকেশন মিডিয়াগুলোতে  খুবই অ্যাক্টিভ থাকার চেষ্টা করবেন।

যখন কোন রিক্রুটার আপনাকে নক দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনার থেকে রেসপন্স পাবে  তখন কিন্তু ওই রিক্রুটার এর কাছে আপনার পজিটিভ রেসপন্স তৈরি হবে এবং আপনার এই চাকরিটি পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বৃদ্ধি পাবে।

রিমোট জব পাওয়ার জন্য তিন নাম্বার স্টেপ হচ্ছে  বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম আপনার প্রেজেন্টেশন বাড়াতে হবে।

যেমন আপনি স্টক ওভারফ্লো এর মত সাইটগুলোতে বিভিন্ন মানুষের উত্তর দিয়ে আপনার পয়েন্ট বাড়াতে পারেন, আবার কুয়োরা এর মতো কি এন এ সাইতে  বিভিন্ন মানুষের এক্সপার্ট অপিনিয়ন দিয়ে আপনার প্রেজেন্টস বৃদ্ধি করতে পারেন।

একইভাবে আপনি চাইলে কিন্তু লিংকডইনে বিভিন্ন প্রকার কনটেন্ট শেয়ার করতে পারেন। অনেকে বলে থাকেন তারা তাদের চাকরিটি লিংকড ইন থেকে পেয়েছেন। আবার অনেকেই অভিযোগ করেন যে তারা লিঙ্কডিন ইন থেকে কোন রেসপন্স পায় নি। 

এখন ব্যাপার হচ্ছে দুই ধরনের মানুষ ই কিন্তু  একই প্লাটফর্মে ব্যবহার করে থাকে। তাহলে একদল চাকরি পাচ্ছে আরেকদল চাকরি পাচ্ছে না কেন। এর কারণ হচ্ছে  লিংকডইনএ  আপনার  অ্যাকটিভিটি দেখে কিন্তু কিউটারের ইন্টারেস্ট  গ্রো করতে পারে অথবা  আপনাকে ইগনোর করতে পারে।

এখন আপনি যদি আপনার জব রিলেটেড এক্সপার্ট অপিনিয়ন শেয়ার করেন, অন্য যারা এক্সপার্ট রয়েছে তাদের সঙ্গে এঙ্গেজমেন্ট করেন, তাদের বিভিন্ন পোস্টে রিঅ্যাক্ট করেন বা তাদের সঙ্গে কমিউনিকেশন   গ্র করেন।  তাহলে কিন্তু লিঙ্কডিন  দিন থেকে আপনার জব পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।

আর সেটা না করে আপনি শুধুমাত্র একটা লিংকডইন প্রোফাইল খুলে রাখলেন অথবা  লিংকডইনে আপনার যা ইচ্ছা তাই যদি শেয়ার করেন তাহলে কিন্তু আপনি লিঙ্কডিন থেকে  থেকে খুব ভালো একটা রেসপন্স পাবেন না।

অনলাইনে প্রেসেন্স বাড়ানোর আরেকটি উপায় হচ্ছে ব্লগিং শুরু করা।

আপনি যদি টেকনিক্যালি সাউন্ড পারসন এবং যদি লিখতে পছন্দ করেন তাহলে নিজে একটি ব্লগ সাইট শুরু করতে পারেন অথবা অন্য কোন টেক ব্লগে আপনি চাইলে লিখতে পারেন।

যদি আপনি এভাবে লিখতে থাকেন এটি কিন্তু আপনাকে অনেক ক্ষেত্রে সহায়তা করবে রিমোট জব পাওয়ার জন্য। 

রিমোট জব পাওয়ার  চার নাম্বার স্টেপ হচ্ছে  আপনার স্পিকিং এবং কমিউনিকেশন দক্ষতা গ্র করতে হবে। 

যখন আপনি রিমোট কাজ করবেন অন্য কোন কোম্পানির সঙ্গে তখন কিন্তু  আপনার টিমমেটরা বিভিন্ন দেশে থাকতে পারে। বিভিন্ন জায়গায় থাকতে পারে। আপনার আশেপাশে কিন্তু খুব একটা মানুষ জন থাকবে না। হয়তো আপনি একাই কাজ করবেন অথবা কো ওয়ার্কিং স্পেসে কাজ করবেন। এক্ষেত্রে আপনার কমিউনিকেশন এবং স্পিকিং স্কিলস যদি ভালো না থাকে তাহলে কিন্তু কোম্পানিগুলো আপনাকে হায়ার করতে আগ্রহী হবে না।

তাই আপনি যদি রিমোট জব করতে চান তাহলে অবশ্যই স্পিকিং আবিলিটি এবং কমিউনিকেশন দক্ষতা গ্র করার চেষ্টা করুন। আপনি যদি অনলাইনে সার্চ করে তাহলে ইংলিশ স্পিকিং এর উপর এবং কমিউনিকেশন এর উপর অনেক কোর্স পাবেন যেগুলো থেকে আপনি চাইলে আপনার কমিউনিকেশন দক্ষতা ও স্পিকিং আবিলিটি বাড়িয়ে নিতে পারেন।

রিমোট জব পাওয়ার জন্য সর্বশেষ স্টেপ হচ্ছে আপনাকে প্রচুর আবেদন করতে হবে এবং আপনাকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে।

একটা ব্যাপার লক্ষ করুন যখন আপনি দেশে কোন চাকরিতে আবেদন করছেন তখন কিন্তু ক্যান্ডিডেট খুব একটা বেশি থাকছেনা। কিন্তু একই রকম যাবে যখন আপনি ইন্টার্নেশনালি আবেদন করবেন তখন কিন্তু ওয়ার্ল্ডওয়াইড অনেক মানুষের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে।

তাই যখন আপনি রিমোট জবের জন্য এপ্লাই করছেন তখন কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই  আপনি কিন্তু কোনোরকম উত্তর পাবেন না। তবে কিছু কিছু জায়গায় থেকে আপনি উত্তর পাবেন যেখানে ফর্মালি লেখা থাকবে যে তারা আপনার সঙ্গে কাজ করতে ইন্টারেস্টেড না। 

তো এসব দেখার পরে আপনার ভয়ের কোন কারণ নেই, আপনার হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। সব সময় মনে রাখবেন যে দুনিয়াদারি থেকে হচ্ছে সেটি আপনার ভাবার বিষয় না। আপনার একটা সুযোগ লাগবে এবং একটা সুযোগ পাওয়া পর্যন্ত  যতগুলো চাকরিতে এপ্লাই করতে হয় সবগুলোতেই আপনি এপ্লাই করে যাবেন।

এখন অনেকেই রয়েছেন যারা হয়তো প্রথমে একটি চাকরিতে এপ্লাই করার মাধ্যমেই চাকরি পেয়ে যায় আবার অনেকেই রয়েছেন যাদের অনেকগুলো চাকরিতে এপ্লাই করতে হয়।

কেউ কিন্তু আগেই বলতে পারেনা তার আসলে কতগুলো চাকরিতে এপ্লাই করতে হবে। আপনার কাজ হতে চেষ্টা করে যাওয়া তাই আপনি রেগুলারলি বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে এপ্লাই করে যাবেন।  আশা করা যায় কিছুদিনের মধ্যে  কিছুদিনের মধ্যেই সফল হবেন।

এবারে রিমোট জব পাওয়ার জন্য একটি বোনাস টিপস ।

যদি আপনি রিমোট জব খুব দ্রুত পেতে চান তাহলে আপনাকে একটি মেথড ফলো করতে হবে। আপনি বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মে যখন কোন রিমোট জব এর বিজ্ঞাপন দেখবেন তখন তাদের ওয়েবসাইটটি খুঁজে বের করবেন এবং ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি আপনি চাকরির আবেদন করবেন।

এক্ষেত্রে কি হবে, অনেক সময় দেখা যায় বিভিন্ন থার্ড পার্টি ওয়েবসাইট রয়েছে যারা বিভিন্ন সাইট থেকে বা ক্যারিয়ার পেজ থেকে বিজ্ঞাপন গুলো কালেক্ট করে তাদের নিজেদের  সাইটে পোস্ট করে থাকে।

এক্ষেত্রে আপনি যদি ওই থার্ড পার্টি ওয়েবসাইট গুলো থেকে আবেদন আবেদন করেন তখন কিন্তু আপনার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। আর যদি আপনি একই জবে তাদের  নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে ক্যারিয়ার পেজের মাধ্যমে আবেদন করেন তখন কিন্তু আপনার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যায়।

এছাড়াও ওই কোম্পানি সম্পর্কে আপনার একটা ভাল ধারণা তৈরি হয়।  এভাবে যদি আপনি চেষ্টা করতে থাকেন তাহলে আপনি দ্রুতই রিমোট জব পাবেন।

রিমোট জব সম্পর্কিত কোন প্রশ্ন থাকলে  কমেন্টে জানাতে পারেন। তো এই ছিল আজকের ভিডিও দেখা হবে পরের ভিডিওতে।

 ততক্ষণ পর্যন্ত ভাল থাকুন,সুস্থ থাকুন,এই প্রত্যাশায়। 

0Shares
Uganda's University Previous post উগান্ডার বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় গুলো কি টাকার বিনিময়ে সার্টিফিকেট বিক্রি করছে না?
সফল স্টার্টআপ শুরু করার আগে সেরা ৫টি টিপস Next post সফল স্টার্টআপ শুরু করার আগে সেরা ৫টি টিপস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Close

গালিব নোটস এর ইউটিউব ভিডিওঃ