আমাদের দেশে কম্পিউটার সাইন্স এখন ট্রেন্ডিং সাবজেক্ট এবং ইন্টার পাশ করার পর অনেক ছেলে মেয়ে এই সাবজেক্ট এ ভর্তি হয়। যারা ভর্তি হয় তাদের সবাই যে একেবারেই বুঝে না তা নয়। সম্ভাবনা ময় এই শিক্ষার্থীদের ধ্বংস হওয়ার জন্য যতটা না তাদের দায়ী করা যায় তার থেকে বেশী বলা যায় আসে পাশের পরিবেশ কে। ৭ ধাপে একজন সিএসই শিক্ষার্থীর পতন ঘটে! সিএসই স্টুডেন্ট দের পতনের ধাপ সমূহ:
ধাপ ১: প্রথমদিন ক্লাসে এসেই তারা জানতে পারে… এই সাবজেক্টে রেজাল্ট কোন ব্যাপার না। সার্টিফিকেট ও লাগে না। স্কিলই সব। তো মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে… পড়াশুনা করে কি হবে… প্রোগ্রামিং শিখমু… তো পড়াশুনা আর হয় না… এইদিকে আজ করমু কাল করমু বলে প্রোগ্রামিং ও হয় না…
ধাপ ২: যেহেতু রেজাল্টের দরকার নাই। সুতরাং ক্লাস মিস হতে থাকে। সিটি পরীক্ষা দেওয়া হয় না। তো এইগুলা মিস দিয়ে কি করা হয়?… প্রোগ্রামিং? মোটেই না… ঘুম… কার্ড খেলা… আর মাঝে মাঝে ইউভিএ এর সহজ একটা দুইটা প্রবলেম সলভ করে নিজে নিজেই ভাবে থাকা…
ধাপ ৩: ক্লাসে অমনোযোগী হিসেবে পরিচিতি লাভ করার পরে স্যারদের কাছে বকা খাওয়া শুরু। ক্লাস আরো বেশি মিস করতে থাকা। প্রথম সেমিস্টারে দুই একটা ব্যাকলগ খাওয়া। কিন্তু প্রথম সেমিস্টারে সে কোনভাবে মহান একটা জিনিস শিখে ফেলছে… সেটা হইলো সি প্রোগ্রামিং এর বেসিক… 😀 😀
ধাপ ৪: কনসোলে নিজের নাম ১০০ বার প্রিন্ট করার পরে মাথায় চিন্তা আসে… আরে আমি তো বিশাল বড় প্রোগ্রামার হয়ে গেছি… তাইলে আমি কেন ফ্রি ল্যান্সিং করে লাখ লাখ টাকা কামাচ্ছি না?… এবার শুরু হয় ফ্রি ল্যান্সিং এর চেষ্টা… বিভিন্ন মার্কেট প্লেসে কিছুদিন ঘুরাঘুরি করে আবার ফেরত আসা… এদিকে ডেটা স্ট্রাকচার বা এলগোরিদম কিছুই শিখা হয় নাই… জাভা প্রোগ্রামিং চোখ রাংগাচ্ছে… ডেটাবেজ হাসতেছে মুচকি মুচকি… আহো ভাতিজা আহো…
মেশিন লার্নিং নিয়ে কথা না বলা ফ্রেন্ডদের ইমিডিয়েটলি বদলে ফেলুন!
ধাপ ৫: ধুরো… প্রোগ্রামিং আমাকে দিয়া হবে না… ব্যাংকে জব করমু… বিসিএস দিমু… সামনের সেমিস্টার থেকে বিসিএস এর পড়া শুরু করমু… এদিকে সেমিস্টারে টিকে থাকাই কষ্ট হয়ে যাচ্চে… ফ্রেন্ডরা মিলে পরিকল্পনা করা হয়… আরে ব্যাকবেঞ্চার রাই আসল মেধাবী… বাকি গুলা আতেল… বিল গেটস, জুকারবার্গ কি সার্টিফিকেট ছিলো?…
ধাপ ৬: বিসিএস এর এতো পড়া কিভাবে পড়মু?… এর থেকে তো প্রোগ্রামিং ই ভালো… কিন্তু শিখমু কি… জাভা?… পাইথন?… পিএইচপি?.. কেমনে শিখমু?… কার কাছ থেকে শিখমু?… বালের ডিপার্টমেন্ট… কিচ্ছু নাই এখানে… ভবিষ্যত নাই… অন্ধকার সব…
যে কারনে কম্পিউটার সাইন্স এ ভর্তি হওয়া উচিৎ নয় – পার্ট১
ধাপ ৭: সব কিছু আধাআধি করে শিখার পরে আবার বাদ দেওয়া… একবার হায়ার স্টাডির চেষ্টা… কিন্তু সিজিপি কম… আবার প্রোগ্রামিং এর চেষ্টা… ব্যাসিক নাই… কনফিউজড…. কনফিউজড… কনফিউজড…. ধুর বাল… এই সাবজেক্টে ভর্তি হওয়াই ভুল হইছে..
এভাবেই চলে… একটা মেধাবী স্টুডেন্ট যার কিনা একজন ভালো ইঞ্জিনিয়ার হবার সব গুন ছিলো… কিছু ভুল মোটিভ এর কারনে সব বিফলে যায়…
যে ১৪টি কারনে প্রোগ্রামার মেয়ের সাথে ডেট করা উচিৎ!
এই মোটিভেশন আসে মুলত সিনিয়র, সহপাঠিদের কাছ থেকে যারা নিজেরাই এখনও জব শুরু করেন নাই। তাই, একেবারেই নতুন যে সব শিক্ষার্থী আছেন, তাদের কাছে সাজেশন হচ্ছে, যারা জ্ঞান দিচ্ছে তাদের নিজেদের কি পজিশন সেটা বিবেচনা করুন। ইন্ডাস্ট্রিতে অন্তত ১যুগ কাজ করেছেন এ রকম কারও থেকে পরামর্শ নিন। নিজের জন্য ভালো হবে, পরিবার এর জন্য ভালো হবে।
মুল লেখাটি সামান্য পরিমার্জিত। ৭ ধাপে একজন সিএসই শিক্ষার্থীর পতন, লেখাটি সংগ্রহ করা হয়েছে Md Golam Morshed স্যার এর ওয়াল থেকে।
13 thoughts on “যে ৭ ধাপে একজন সিএসই শিক্ষার্থীর পতন ঘটে!”