আমাদের দেশে, আন্ডার গ্রাজুয়েট লাইফ এর শেষ সেমিস্টারে একটা ইন্টার্নশিপ করতে হয়। যেটা আমাদের রিয়েল লাইফে কাজের প্রথম এক্সপেরিয়েন্স। কিন্তু আমাদের বেশির ভাগ গ্রাজুয়েট এই ইন্টার্ন গোঁজামিল দিয়ে করে থাকে। অথচ, একটু কেয়ারফুল হলে, আমরা খুব ভালো যায়গা ইন্টার্ন করতে পারি। কিছু না হোক, ফাইনাল ইয়ার বা শেষ বর্ষে এসেও যদি আমরা ইন্টার্নশিপ প্রিপারেশন নেই, চেষ্টা করি তাহলেও খুব ভালো করা সম্ভব।
ইন্টার্নশিপ এবং ফ্রেস জবের প্রিপারেশন একই রকম। আমি নিজে কম্পিউটার সাইন্স এর ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসেছি। তাই আমি এখানে সিএসই রিলেটেড উদাহরন ব্যাবহার করব। তবে, আপনারা অন্য সাবজেক্ট এর ইন্টার্ন প্রিপারেশন নেয়ার সময়,এই স্টেপ্স গুলা ফলো করতে পারেন।
প্রথমত, ইন্টার্নশিপ প্রিপারেশন এ ক্যাটাগরি সিলেকশনঃ
একেবারে শুরুতে কোন ক্যাটাগরিতে ইন্টার্ন/জব করতে চান, সেটা সিলেক্ট করে ফেলতে হবে। সেটা যে কোন ক্যাটাগরির হতে পারে। কোর পিএইচপি, লারাভেল, ওয়েব এপ্স, মোবাইল এপ্স এর মত অনেক অনেক ক্যাটাগরি আছে। যেটা ভালো লাগে বা যেটাতে কাজ করতে চান, সেটা সিলেক্ট করুন।
যদি পিএইচপি নিয়ে কাজ করতে চান, ঠিক আছে! যদি লারাভেল নিয়ে কাজ করতে চান,তাও ঠিক আছে, আবার মোবাইল এপ্স সিলেক্ট করলেও ঠিক আছে। ক্যাটাগরি ফিক্স করাই হচ্ছে মুল কাজ, ক্যাটাগরি কোনটা সেটা বিষয় নাহ।
কিভাবে ইন্টার্নশিপ এর সেরা ক্যাটাগরি সিলেক্ট করবেন!
দ্বিতীয়ত, রিকোয়ারমেন্ট এনালাইসিসঃ
সিস্টেম এনালাইসিস কোর্স এ যদি খারাপ করেন, রিকভার করার কিছুটা সুযোগ আছে। কিন্তু যদি রিকোয়ারমেন্ট এনালাইসিস এ ভুল করেন, বিপদে পড়বেন। কাজের ক্যাটাগরি সিলেক্ট করার পর, ক্যারিয়ার পোর্টাল, ইন্টার্নশিপ এন্ড জবস গ্রুপ এর মত পোর্টাল গুলোতে ঢু মারুন। নির্ধারিত ক্যাটাগরির কাজের রিকোয়ারমেন্ট কি কি সেটা দেখেই ক্ষান্ত হবেন না। নোট করে নিন।
বেশ কয়েকটি জবের বর্ননা দেখলেই বুঝবেন, মেইনলি কি কি লাগবে। ক্যারিয়ার পোর্টাল গুলোতে সাধারনত দেখা যায়, সব জবে কিছু না কিছু অভিজ্ঞতা চায়। আপাতত এই অভিজ্ঞতার সেকশন ইগনর করুন।
আপনারা চাইলে জব দেখার জন্য আমাদের ইন্টার্নশিপ এন্ড জবস ইন বাংলাদেশ গ্রুপ এ জয়েন করতে পারেন। ১০ জন ডেডিকেটেড এডমিন মিলে প্রতিনিয়ত সব ক্যাটাগরির জব পোস্ট করা হয়ে থাকে। জব পোস্ট এর সাথে সাথে ক্যারিয়ার নিউজ, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ইভেন্ট শেয়ার, অর্গানাইজ করা হয়ে থাকে।
মুল রিকোয়ারমেন্ট গুলো শেখার সাথে সাথে গিট বা অন্য কোন ভার্শন কন্ট্রলিং শিখুন, ক্লিন কোড রাইটিং, প্রপার ডকুমেন্টেশন চেষ্টা করুন। যদি এগুলা শিখতে সমস্যা হয়, কিছু করার নেই। এসব হচ্ছে জবের বেসিক রিকোয়ারমেন্ট।
তৃতীয়ত, সিভি তৈরি করুনঃ
সব কিছু শেখার সাথে সাথে, সিভি বানিয়ে ফেলুন। সিভি বানানো ১দিনের কাজ নয়। নিয়মিত একটু একটু করে সময় দিয়ে সিভি আপডেট করুন তাহলে ভালো হবে। সিভির সাথে সাথে স্যাম্পল প্রজেক্ট বানিয়ে ফেলুন। হাই লেভেল না হোক, কিছু অন্তত বানান।
আমাদের কাছে অনেক ছেলে মেয়ে ইন্টার্ন এর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে। তখন আমরা সিভি বা স্যাম্পল কাজ দেখতে চাই। অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে, ছেলে-মেয়েরা এটাই দেখাতে পারে না। ভালো কোথাও ইন্টার্ন করার জন্য এটা খুবই গুরত্বপুর্ন।
মেশিন লার্নিং নিয়ে কথা না বলা ফ্রেন্ডদের ইমিডিয়েটলি বদলে ফেলুন!
চথুর্তত, ইন্টার্ন অফার খুজুনঃ
এই বার ফাইনালি ইন্টার্ন অফার খুজুন। একটা লিষ্ট বানান কোম্পানির আর তাদের অপেনিংস গুলোতে খেয়াল রাখুন। ক্যারিয়ার পেইজ, লিংকডিন, ফেজবুক বুক মার্ক এবং নোটিফিকেশন অন করে দিন। যদি কোথাও অফার দেখেন, দ্রুত আবেদন করুন। তবে আবেদন এর আগে, অব্যশ্যই সিভি আপডেট করে নিন।
নিজের সিনিয়র এলামনাই দের খোজ নিন। কেউ কোথাও থাকলে সিভি ইভালুয়েট করিয়ে নিন। নিজের কাজ নিয়ে মাঝে মধ্য আলোচনা করুন। ইন্টার্ন কোন সেমিস্টার এ সেটা জানিয়ে রাখুন। কখনই ডাইরেক্ট জব চাইবেন না। এটা খুব বাজে ইম্প্রেশন তৈরি করে।
সফটয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্টার্নশিপ পেতে মাত্র ৪টি স্টেপ!
ইন্টার্ন এর ভাইভা এর জন্য প্রস্তুতি নিন। আমাদের অনেকের ধারনা, ইন্টার্ন এর ভাইভা এর জন্য আলাদা করে প্রস্তুতি নেয়ার দরকার নেই। কিন্তু এটা ভুল ধারনা। বড় কোম্পানি তো বটেই, ছোট কোম্পানি তে ভাইভার জন্য প্রস্তুতি নেয়া দরকার। মেন্টাল, কোডিং এবং টেকনিক্যাল প্রিপারেশন নিতে হবে।
প্রিপারেশন যত ভালো হবে, ভাইভা তত ভালো হবে সেটাই এক্সপেক্টেড। ইন্টার্নশিপ প্রিপারেশন সংক্রান্ত যে কোন সমস্যাতে আমাদের ইমেইল করতে পারেন অথবা ফেজবুকে নক দিতে পারেন। শুরু থেকে একটু প্রস্তুতি নিয়ে খুব ভালো করবেন নাকী লাম-ছাম গোঁজামিল এর ইন্টার্ন করবেন সেই সিদ্ধান্ত আপনার।
2 thoughts on “ইন্টার্নশিপ প্রিপারেশন নিবেন যে ভাবে ও যখন থেকে”