কম্পিউটার সায়েন্স পড়াকালীন সময়ে অনেক ছেলেমেয়ে হতাশ হয়ে পড়ে। কেউ কেউ এত বেশি হতাশ হয় যে  শেষ পর্যন্ত তাকে সাইকোলজিস্ট এর কাছে নিয়ে যেতে হয়।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে যদি আপনি কম্পিউটার সাইন্স পড়াকালীন সময়ে হতাশ হয়ে পড়েন, তাহলে কি করবেন অথবা কিভাবে আপনি সেই হতাশা থেকে বের হয়ে আসতে পারবেন।

আমার সাথে প্রচুর ছেলে-মেয়ের কথা হয় যারা অনেকেই হতাশ তাদের ক্যারিয়ার নিয়ে, ফিউচার নিয়ে, ফিউচার জব নিয়ে, লাইফ পার্টনার নিয়ে।

কম্পিউটার সাইন্স পড়াকালীন সময়ে হতাশ হয়ে যাওয়াটা অস্বাভাবিক কিছুই নয়। লাইফে থাকাটা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার তবে এটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আমাদের জন্য স্বাভাবিক হলেও সেই নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করে গেলে সেটি আমাদের জন্য খুবই খারাপ, এমনকি আমাদের গ্রোথ কমে যেতে পারে, আমাদের সাইকোলজিকাল সমস্যা হতে পারে আরও নানাবিধ সমস্যা হতে পারে।

এই ভিডিওতে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব যে কম্পিউটার সাইন্স পড়াকালীন সময়ে আপনি হতাশ হয়ে পড়েন অথবা হতাশা আপনাকে গ্রাস করে। তাহলে আপনার কি করা উচিত, কিভাবে আপনি সেই হতাশা থেকে বের হয়ে ভালো একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে পারেন।

কম্পিউটার সাইন্সে যারা লেখাপড়া করেন তাদের হতাশ হয়ে যাওয়ার বেশ কিছু কমন কারণ রয়েছে। যেমন প্রথমত অনেকেই কম্পিউটার সাইন্স থেকে গ্রাজুয়েশন করার পর কোথায় চাকরি করবেন, চাকরি পাবেন কিনা এইসব চিন্তা নিয়ে হতাশ হয়ে পড়ে।

সেকেন্ড হচ্ছে অনেকেই রয়েছেন যারা কনটেস্ট প্রোগ্রামিং করে কিন্তু প্রথম থেকে ভালো  রেঙ্ক করতে পারেনা, ভালো মত  কনটেস্ট করতে পারেনা তারাও হতাশ হয়ে পড়ে।

থার্ড হচ্ছে অনেকেই রয়েছেন কোড করতে পছন্দ করেন না, কোড লিখতে পছন্দ করেন না তারা হতাশ হয়ে পড়ে।

ফাইনালি আরও একটা করে  স্টুডেন্ট রয়েছে যারা  কম্পিউটার  ফোবিয়া রয়েছে, তারা কম্পিউটার কে ভয় পায়, গণিত কে ভয় পায়, কোড লেখা কে ভয় পায় তারাও কিন্তু হতাশ হয়ে পড়ে।

এর বাইরে বেশকিছু ক্যাটাগরি রয়েছে যার কারণে স্টুডেন্ট হতাশ হয়ে পড়েন। চলুন দেখে নেই কোন ক্যাটাগরিতে আপনি হতাশ হয়ে গেলে কিভাবে সেই হতাশা থেকে বের হবেন এবং কম্পিউটার সায়েন্সের আন্ডারগ্রাজুয়েট লাইভ ইঞ্জয় করবেন।

সবার প্রথমে আপনার কাজ হচ্ছে খুঁজে বের করা আপনি কি কারনে হতাশ হয়ে পড়েছেন। যদি আপন হয় যে আপনি গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করার পরে চাকরি পাবেন কিনা অথবা আপনি কোড লেখেন নাই কোডিং করা পছন্দ করেন না, আপনার ভালো প্রজেক্ট করা হয়নি এর ফলে আপনি হতাশ হয়ে পড়েছেন যে গ্রাজুয়েশন করার পর আপনি চাকরি পাবেননা।

যদি আপনি এই ক্যাটাগরির স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন তাহলে আমি আপনাদেরকে বলবো সবার প্রথমে ইউ আর দ্যা লেট, সময় আপনার জন্য শেষ হয়ে যায়নি। আপনি যে সেমিষ্টারে থাকুন না কেন যদি আপনি এখন থেকে কোড লেখা শুরু করেন, প্রোগ্রামিং শুরু করেন তাহলে  এখন থেকে ছয় মাস এক বছর পরে কিন্তু আপনি ভালোভাবে করে লিখতে পারবেন।

শুরুতে বেশ কিছু সমস্যা হলেও  ছয় মাস অথবা এক বছর পরে কিন্তু আপনার খুব একটা  সমস্যা হবে না। আপনি যদি নোটিশ করেন অনেকেই রয়েছেন যারা কম্পিউটার সাইন্স পড়াশোনা করেননি তারাও কিন্তু সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে খুব ভালোভাবে কাজ করে থাকেন।

তারা কিভাবে করে? তারা কিন্তু শুরু থেকেই একটা লম্বা সময় পর্যন্ত কোডিং নিয়ে পড়ে থাকে প্রোগ্রামিং নিয়ে পড়ে থাকে এবং একটা সময়ে গিয়ে কিন্তু তাদের কোডিং  হ্যাভিট গড়ে ওঠে।

তাই যদি আপনি কোড না করার ফলে হতাশ হয়ে যান তাহলে সবার প্রথমে আপনাকে কোডিং শুরু করতে হবে। একটা নির্ধারিত সময় পর্যন্ত চালিয়ে যেতে হবে।

আমাদের পার্শ্ববর্তী ভারতে অনেকে কম্পিউটার সাইন্সের স্টুডেন্ট রয়েছে যারা গ্রাজুয়েশন লাইফে খুব একটা কোডিং করে না। তা মূলত ইউনিভার্সিটি রেজাল্ট টাকে ধরে রাখার চেষ্টা করে এবং গ্রাজুয়েশন শেষ হওয়ার পরে তারা কিন্তু ছয় মাসে এক বছর ডেডিকেটেডলি কম্পিউটার প্রোগ্রামিং এবং প্রোগ্রামিং প্র্যাকটিস করে থাকে।

আপনাদের মধ্যে যারা ভারতের সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে জানেন তারা খুব ভালোমতোই জানেন যে সেখানে সেখানকার সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রি কত বেশি এগিয়েছে। এবং কত বড় সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রি। আর টেক জায়ান্ট কোম্পানিগুলোতে ভারতীয়দের আধিপত্য কিন্তু অনেক পুরাতন ব্যাপার।

এই সবকিছুর মূলে  কিন্তু কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিং কাজ করেনি এর বাইরে সাধারণ প্রোগ্রামাররা রয়েছে তারা কিন্তু কাজ করেছে।  এবং তারা তারা করে থাকে যে গ্রাজুয়েশন  করার পরে বেশ কিছু একটা লম্বা সময় ধরে কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিং এবং অনন্য প্রোগ্রামিং  স্কিলসগুলো  গ্যাদার করে থাকে।

তাই আপনি যদি পড়াশোনা শেষ দিকে হয়ে থাকেন এবং কনটেস্ট প্রোগ্রামিং অথবা প্রোগ্রামিং না করার ফলে যদি আপনি হতাশ হয়ে পড়েন যে আপনি চাকরি পাবেন কিনা তাহলে আপনার প্রথম কাজ হবে প্রোগ্রামিং শুরু করে দেওয়া এবং কোড লেখা শুরু করা এবং যদি আপনি এটা শুরু করে দেন আশা করি আপনি আপনার হতাশা থেকে বের হয়ে আসতে পারবেন।

বাই দ্যা ওয়ে কম্পিউটার সাইন্স থেকে গ্রাজুয়েশন করার পরে অনেক ছেলে-মেয়ে জব পায় না। কেন জব পায়না এই বিষয়টি ব্যাখ্যা করে আমি একটা ভিডিও বানিয়েছি ইতোমধ্যে আপনারা চাইলে ডেসক্রিপশন বক্সে লিংক দেওয়া থাকবে সেখান থেকে দেখে নিতে পারেন।

কম্পিউটার সাইন্সের আন্ডারগ্রাজুয়েট লাইফে অনেক শিক্ষার্থী হতাশ হয়ে পড়েন।  কনটেস্ট প্রোগ্রামিংয়ে ভালো না করার ফলে, কনটেস্ট প্রোগ্রামিংয়ে ভালোরে না পাওয়ার ফলে। তবে এ ব্যাপারে আমার খুব একটা সাজেশন নেই। যেহেতু আমি নিজেও কনটেস্ট প্রোগ্রামিং এর সাথে জড়িত নেই।

তবে শুধু এতটুকুই বলতে পারি শুরুতেই কোন কিছুতে ভালো নাও হতে পারে। যদি আপনি লেগে থাকেন তাহলে একটা  সার্টিন  টাইম পরে আপনি কিন্তু ভালো ফলাফল করতে পারবেন। ভালো রেংকিং পাবেন।

আমি অনেক কনটেস্ট প্রোগ্রামারদের চিনি  যাদের সাথে আমার ব্যক্তিগতভাবে পরিচয় রয়েছে। যারা শুরুতে কোনভাবে ভালো করতে পারেনি কিন্তু একটা সময় লেগে থাকার পরে ছয় মাস এক বছর পরে তারা কিন্তু কনটেস্ট প্রোগ্রামিংয়ে খুবই ভালো করেছে। এবং ফাইনালি তাদের যে হতাশা ছিল সেটা কাটিয়ে উঠতে পেরেছে।

কোডিং ভালো লাগে না অথবা কোড লিখতে পছন্দ করেন না। যদি এ ধরনের কোন কাজের জন্য কম্পিউটার সাইন্স পড়াকালীন সময়ে হতাশ হয়ে পড়েন। তাহলে শুরুতেই আপনাকে বলে রাখি শুধু কম্পিউটার সায়েন্স নয় আগামীর বিষয়ে যে কোন সাবজেক্টে কোড লেখার প্রয়োজন পড়বে, প্রোগ্রামিং এর দরকার হবে।

আগামী  বিশ্বে পুরোটা ডিপেন্ড করবে কোডিং এর উপরে তাই কোডিং থেকে বাঁচার কোন প্রকার উপায় আপাতত আপনার হাতে নেই। তাই এখন থেকেই কোডিং থেকে বাঁচার চেষ্টা না করে বরং কিভাবে কোডিং এর সাথে অ্যাডাপ্ট হওয়া যায় সেটা চেষ্টা করুন।

চলুন দেখে নেই কিভাবে আপনি কোডিং এর সাথে এডাপ্ট  হতে পারবেন এবং যদি আপনি কোডিং এর সাথে এড হতে পারেন তবে স্বাভাবিকভাবে আপনি কিন্তু হতাশা থেকে বের হয়ে আসতে পারবেন।

আমরা যখন সিক হয়ে পড়ি তখন কিন্তু আমাদের অনেক ধরনের মেডিসিন নিতে হয়। এবং এই মেডিসিন গুলো কিন্তু আমাদের খুব একটা ভালো লাগে তা নয় কিন্তু শুধুমাত্র সারানোর জন্য আমাদের সেই মেডিসিন গুলো জোর করে হলেও খেতে হয়।

তাই যদি আপনার কোডিং ভালো না লাগে, কোড লিখতে যদি আপনার পছন্দ না হয়, তাহলে প্রথমেই আপনি কি টার্গেট নিন যে এখন থেকে ছয় মাস এক বছর পর্যন্ত কোড  যদি আপনার ভালো নাও লাগে, আপনার যদি বিষের মতো মনে হয়  তারপরও আপনি কোডের সঙ্গে সময় কাটাবেন ।

লক্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে কোটের সঙ্গে সময় কাটাবেন, কোডিং শিখবেন সেটা বলছি না। আর এই আগামী ছয় মাসে এক বছর সময়টাতে আপনি  ইন্সেন্টিভ বিষয়গুলো শেখার চেষ্টা করুন। ইন্টারেস্টিং ভাবে  কোড লেখার  চেষ্টা করুন। ছোট ছোট ব্যবহারগুলো সলভ করার চেষ্টা করুন। ইন্টারেস্টিং কোন প্রজেক্ট থাকলে সেগুলো করার চেষ্টা করুন।

মজাদার ওয়েতে যদি আপনি কোড  লেখার চেষ্টা করেন এবং ছয় মাস থেকে এক বছর যদি আপনি প্রতিদিন  একটা ছাড়টেন টাইম  কোডের জন্য ব্যয় করেন। তাহলে ছয় মাস এক বছর পরে আপনি    নিরানব্বই ভাগ  আপনার ভালো লাগবেই লাগবে।

 তাই যদি আপনি এভাবে চেষ্টা করেন তাহলে আপনি অবস্যই কোডিং এর সাথে এডাপ্ট করতে পারবেন। একই সাথে আপনার হতাশা ওপ কিন্তু দূর হয়ে যাবে। 

কম্পিউটার সাইন্সে হতাশ শিক্ষার্থীদের আরেকটি ক্যাটাগরি হচ্ছে  কম্পিউটার  ফোবিয়া। অনেক শিক্ষার্থী রয়েছেন যারা আমাকে প্রতিনিয়ত বলে থাকেন যে তারা কম্পিউটার এর সামনে বসে থাকতে পারেন না। তাদের গণিত দেখলেই  প্রচণ্ড ভয় লাগে। প্রোগ্রামিং রিলেটেড কোর্স তারা ভয়াবহ রকমের ভয় পায়।

যদি আপনি এই ক্যাটাগরি স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য খুব একটা সুসংবাদ আমি দিতে পারছিনা। কারণ কম্পিউটার সাইন্সে যদি আপনাকে কিছু করতেই হয় তাহলে অবশ্যই আপনাকে কিন্তু কম্পিউটারের সাথে টাইম স্পেন্ড করতে হবে।

যদি আপনার ওইকান্তিক ই কি কম্পিউটার সাইন্স এর কোর্স  সাবজেক্ট গুলো ভালো না লাগে, তাহলে আপনি কম্পিউটার সায়েন্সে ছেড়ে  দিতে পারেন অথবা  আরেকটি কাজ করতে পারেন।

কম্পিউটার সাইন্সের কিছু সাব ফিল্ড রয়েছে। যেমন  ইউয়াইইউএক্স ইঞ্জিনিয়ার, অথবা কোয়ালিটি এনালিস্ট যদিও এই এরিয়া গুলোতে আপনার কিছুটা প্রোগ্রামিং এর দরকার হবে তবে খুব একটা প্রোগ্রামিং এর দরকার হবে না যদি আপনি এন্ট্রি লেভেল  অথবা মিড লেভেল জব গুলো করতে চান।

আপনি চাইলে এই বিষয়গুলো চেষ্টা করে দেখতে পারেন। আরেকটি ব্যাপার আপনি মাথায় রাখবেন যে শুধু কম্পিউটার সাইন্স নয় আপনি ইঞ্জিনিয়ারিং এর যে কোন সাবজেক্টে যদি মুব করেন তাহলে কিন্তু আপনাকে পরিশ্রম করতে হবে।

আপনাকে  প্রোগ্রামিং এর মত  বিদঘুটে বিষয় গুলো শিখতে হবে। যদি সেখানে প্রোগ্রামিং না থাকে, অনেকগুলো ম্যাথ সাবজেক্ট থাকবে অথবা এনালাইটিক বিষয় থাকবে।

যদি আপনি ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্ট গুলো থেকে মুভ করে সোশ্যাল সায়েন্স বা এধরনের কোন সাবজেক্টে  এ মুভ করেন, হিস্টরি রিলেটেড কোন সাবজেক্টে মুভ করেন। সেখানে কিন্তু আপনাকে অনেক বিষয়ে  মুখস্ত করে ফেলতে হবে।

সেখানে কিন্তু এমন অ্যানালিটিকস করা, প্রবলেম সলভ করা থেকেও অনেক বেশি কঠিন। যে কোন সাবজেক্টে আন্ডারগ্রাজুয়েট বলেন গ্রাজুয়েট বলেন আপনাকে কিন্তু অবশ্যই পরিশ্রম করতে হবে।

তাই যদি আপনার কম্পিউটার ভালো না লাগে, কম্পিউটারের সামনে বসে থাকতে আপনি পছন্দ না করেন তারপরও আপনার চেষ্টা করতে হবে অ্যাডাপ্ট করে নেওয়ার জন্য।

যদি আপনি কম্পিউটার সাইন্সের শিক্ষার্থী হন এবং যেকোনো একটি কারণে অথবা অন্য কোনো কারণে হতাশ হয়ে থাকেন তাহলে চাইলে আপনি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন ইমেইলে অথবা ফেসবুকে।

এছাড়া আমাদের  ভিডিও কমেন্ট বক্স তো খোলাই রয়েছে। আমাদের ইমেইল এবং ফেসবুক অ্যাড্রেস রয়েছে ভিডিও ডিসক্রিপশন  বক্সে।   তো এই ছিল আজকের ভিডিও। দেখা হবে পরের ভিডিওতে, ততক্ষণ পর্যন্ত ভাল থাকু্‌সুস্থ থাকুন। এই প্রত্যাশায়।

0Shares
Previous post সিএসই গ্রাজুয়েশন করতে নন-ডিপার্টমেন্টাল যে সাবজেট গুলো পড়তে হবে!
Next post সময় নষ্ট করা বন্ধ করুন না হলে পস্তাবেন!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Close

গালিব নোটস এর ইউটিউব ভিডিওঃ