Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the blog-prime domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/ekeneeco/galibnotes.com/wp-includes/functions.php on line 6121
দার্জিলিং বা ধোকার শহরে ঘুরে বেড়ানোর গল্প... | Galib Notes

২৮-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থেকে ডিরেক্ট ১৯ ডিগ্রি, সকালে যেটা নেমে আসে ৯-১০ এ! 😨😨 এর উপর কান-টুপি নিয়ে যাই নাই 🥴 কিন্তু তাই বলে কি টুর এর মজা হবে নাহ? কি ভাবে মজা করেছিলাম, আর কি ভাবে সব যায়গা ধোঁকা ছিল সব কিছু নিয়ে আজকের ব্লগ।

যারা সামনে দার্জিলিং যেতে চায় কিন্তু ধোঁকা খেতে চায় না, তাদের জন্য আজকের ব্লগ।

টুরের পুর্ব প্রস্তুতি

দেশের টুরের সাথে বিদেশের টুরের একটা বড় পার্থক্য হচ্ছে, পুর্ব প্রস্তুতি। ইন্ডিয়ান ভিসা ফ্রি হলেও, ভিসা প্রসেসিং ফ্রি নাহ। অফিস থেকে আগেই আমাদের গাইড দেওয়া হয়েছিল। ভিসা সাবমিশনের লাইনে যেদিন গেলাম, সমস্যা হয় নি। সকালে গিয়ে জমা দিয়ে চলে আসছি।

ভিসা পেতেও ডিলে হচ্ছিল। ভিসা আনতে গিয়ে দেখি বিশাল লম্বা লাইন। লাইন এর শেষ খুজে পেতেই ৫ মিনিট লেগে যায়। এর পর লাইনে দাঁড়িয়ে আরেক কাহিনি। লাইনে দাঁড়ান নিয়ে মানুষ মারা-মারি পর্যন্ত করে ফেলে। একজন আরেকজন কে বলছে, আপনার ছবি তুলে রাখতেছি, বাইরে যাইয়া মারব।

শেষ মুহুর্তে দার্জিলিং এর আবহাওয়ার কারনে আরেক দফা সময় বদলান হয়। যাই হোক, ফাইনালি, সব শেষে টুরের দিন আসল।

টুরের শুরু

আমরা সবাই প্রথমে শ্যামলি যাই, সেখান থেকে বাসে কল্যানপুর। তার পর এসি বাস এ চ্যাংড়া বান্দা পোর্ট। এই রাস্তায় আমি সিরাজগঞ্জ দিয়ে বাড়ি যাই। রাস্তায় ফুড ভিলেজ পরে, আমি ভাবছিলাম সেখানে গাড়ি থামবে। কিন্ত গাড়ী থামল গিয়ে বগুড়া ফুড ভিলেজে।

মধ্য রাতে খাবার নিয়ে নতুন অভিজ্ঞতা হলো। ওয়েটার রা স্যার স্যার ভাব ধরে থাকল। আইটেম চাইলে নাই বলে চলে গেলো। অবশ্য বাইরে এসে, ইনিস্ট্যান্ট রুটি আর কাবাব খাইলাম। বিল দিলো সরওয়ার।

প্রথম দিন এর পাহাড়ে উঠার গল্প

সকালে আমরা বাস থেকে নেমে, বুড়ির হোটেলে নাস্তা করে নিলাম। আনুষাঙ্গিক কাজ যা ছিল, তা বাসের লোক জন করে দিচ্ছিল। কিছু ফটোকপি করে, ইমিগ্রেশন, বিজিবি চেক পোস্ট পার করে হেটে হেটে বাংলাদেশের সীমানা ক্রস করে ফেললাম।

বলে রাখা ভালো, ইমিগ্রেশন আর ট্রাভেল কস্ট এর যে কাজ, কেউ চাইলে নিজেই করে ফেলতে পারে। প্রচুর সহযোগী লোক থাকে, যাদের স্পিড মানি দিলে, কাজ নিজেই করে দেয়। কিন্তু তাদের ছাড়াও কাজ গুলো করা যায়। যারা সৎ থেকে ইন্ডিয়া যেতে চান, তারা নিজেই করে ফেলতে পারেন।

বর্ডার পার করে আবার চেক। চেক পার করে ওপাড়ের ইমিগ্রেশন। আবার বাসের লোক জন সব করে দিল। আমরা লাইনে দাঁড়িয়ে ইমিগ্রেশন পার করে ফেললাম। এবারে আমরা ইন্ডিয়া। সময় দুপুর গড়িয়েছে।

আমাদের বেশির ভাগের আগ্রেই ইমিগ্রেশন এর কাজ শেষ হওয়ায়, ওরা বাসে চলে যায়। আমি আর ২ জন পরে ছোট গাড়িতে রওনা দেই। শিলিগুড়ি তে আমরা দুপুরের খাবার খেয়ে নেই।

এবারে ফাইনালি শিলিগুড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা। আমার ধারনাই ছিল না, পাহাড় এত বড় হতে পারে। শুরুতে খুব সুন্দর লাগছিল। কিন্তু কিছুক্ষন পড়েই ভয় শুরু হল। সময়ের সাথে সাথে ভয় যেমন বাড়তে লাগল, অপেক্ষাও বাড়তে লাগল। মনে হচ্ছিল, কখন শেষ হবে এই পাহাড় আর হোটেলে পৌছাব?

৪ ঘন্টারও পরে আমরা ফাইনালি হোটেলের দেখা পেলাম। রুমে গিয়ে ব্যাগেজ রেখে রাতের খাবার, তার পর ঘুম।

দ্বিতীয় দিন আরও ভয়ংকর পাহাড়

তৃতীয় দিন ৯ ডিগ্রির সাথে যুদ্ধ

চতুর্থ দিন ঘরে ফিরতে হবে

টুর শেষ

যা কিছু প্রথম এই টুরে

এবারে ধোঁকার গল্প

দার্জিলিং এর ধোঁকার গল্প কিন্তু আরেকটা ধোঁকা। এখানে মুলত আমাদের যেমন চিন্তা ভাবনা ছিল সেটার সাথে মিলে নাই। তাই ধোঁকা হিসেবে চিন্থিত করা হয়েছে। এমন না যে, আমাদের টুরে সমস্যা ছিল। টুর ছিল ফার্স্ট ক্লাস।

অফিস থেকে আমাদের ভাল ভাবে কস্ট বেয়ার করেছেন। আমরা এসি গাড়িতে রিসার্ভ গেছি, আসছি। থাকা, খাওয়া ছিল খুবই ভাল।

গাড়ীতে গান বাজান যাবে না

প্রথম ধোঁকা ছিল গাড়ীতে করে শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যাওয়ার পথে। আমরা ড্রাইভার কে বলেছিলাম, গান বাজাতে। উনি শুরু করলেন। কিছু দূর যাওয়ার পরে আমরা গান বন্ধ করতে বলি। কিন্তু উনি গান বন্ধ করবেন না। উনার কথা হচ্ছে, এটা ট্যাক্সি, প্রায়ভেট কার না। যা ইচ্ছা তাই করা যাবে নাহ।

নর্মালি তো এমন হয় না, কিন্তু উনার ব্যাবহার দেখে পুরা অবাক আমরা। আমাদের মনে হচ্ছিল, উনাকে খুব বিরক্ত করছি আমরা। কিন্তু বাস্তবে আমরা স্বাভাবিক ভাবেই যাচ্ছিলাম।

গাড়ী তেল নিতে থামে নি

সম্ভবত ২য় দিনের ঘটনা! আমাদের গাড়ি একটা তেল পাম্পে থামল। তো, আমি ভাবছি তেল নেওয়ার জন্য দাড়িয়েছে। আমি ভিডিও করে ফেলেছি। কিন্তু পরে শুনলাম, সামনের গাড়ি থামছে তাই আমাদের গাড়ীও থামছে। আলাদা কোন কারন নাই।

বাতাসিয়া লুপের লুপ

আমরা বাতাসিয়া লুপ নামের এক যায়গা গিয়েছিলাম। যেখানে আবার টিকেট কেটে ঢুকতে হয়। তো, আমি ভাবছিলাম, কোন দর্শনিয় স্থান হবে হয়ত। কিন্তু আসলে সেখানে একটা গোল আকৃতির এলাকা। মাঝে একটা প্রতিকৃতি, সাইডে একটা দার্জিলিং এর আইকন।

এটা দেখে মনে হইল, একটা স্টেটমেন্ট প্রিন্ট করার জন্য ফর লুপ চালানো হইছে। বুঝলেন না তো? আসলে বাতাসিয়া লুপ এর যায়গাটা ঢাকার ১-২ টা জেনেরিক বিল্ডিং যে যায়গা দখল করে, তত টুকু।

রুমে গিজার চলে নাহ

হোটেলে গিজার নিয়ে ভালই কৌতুক হইছে। যাওয়ার পরে আমরা গিজার চালু করে দেই। কিন্তু গরম পানি আর আসে নাহ। পরে হোটেলের লোক কে জিজ্ঞেস করলে বলে ঠিক আছে। এসে দেখায় দিল। কিন্তু তাও পানি গরম হয় নাহ। পরে বলে, সেন্ট্রাল বন্ধ করা ছিল।

কাঞ্চনজঙ্ঘার জন্য ঘাড় ঘুরানো লস

কাঞ্চনজঙ্ঘার

পুরা দার্জিলিং টুর এ যত যায়গা গিয়েছি, সব যায়গার একটাই আকর্ষন, সেটা হচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা! সেই যে শিলিগুরি পার হয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা, তার পর যত যায়গা গিয়েছি, তার সাথে দেখা হয়েছে।

কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে দেখতে প্রথমে তৃপ্তি, পরে হালকা বিরক্ত এবং তারও পরে বিরক্ত হয়ে যাই আমরা। শেষ দিকে এমন হয়েছে যে, একজন বলছে ঐযে কাঞ্চনজঙ্ঘা, আরেক জন ঘারও ঘুরাচ্ছে না। ব্যাপারটা এমন যে, কাঞ্চনজঙ্ঘার জন্য ঘাড় ঘুরানো লস প্রজেক্ট!

যাদের ধন্যবাদ না দিলেই নয়

সপ্তাহে ৪০ ঘন্টা এক সাথে টেবিল শেয়ার করে যত টুকু মানুষ চিনবেন, তার থেকে ২ দিন টুরে বেশি চেনার সুযোগ থাকে। এই টুরে আমি অনেকের সাথে ভাল সময় কাটিয়েছি। বিশেষ করে মার্কেটার হয়ে এবার আমি ডেভেলপার গ্যাং এর সাথে চলেছি বেশি।

নরমালি তো অফিসে রুটিন ওয়ার্ক থাকে। কিন্তু টুরে আলাদা সময় পাওয়া যায়। বিশেষ করে, অফিসে সিনিয়রদের অনেক দায়িত্ব থাকে কাজের । টুরে দায়িত্ব থাকলেও, আলাদা সময় পাওয়া যায়।

আমিনুল ভাই – অসাধারন লোক। ছবি তুলে দিয়েছেন, ভিডিও করে দিয়েছেন। গাড়ীতে এক সাথে বসেছি। এই ব্লগের থাম্বনেইল ভাই এর তোলা ছবি থেকেই।

শরিফ ভাই – আরেকজন লোক, যে টুর টা সুন্দর করতে সহযোগিতা করেছে। পুরা টুরে বক বক সহ্য করেছে। শিলিগুড়ি দিয়ে ঢুকা থেকে শুরু করে আসার দিন পর্যন্ত। আমার একটা ভিডিও আছে, দার্জিলিং টুর এর। সেখানে ভাই এর অবদান আছে। চমৎকার মানুষ।

হাসান হুজুর ভাই – সদা হাস্যজল হাসান ভাই। রিলিজিয়াস অনেক কিছু জেনেছি।

মাসুদ ভাই – মাসুদ ভাই টুরে ছবি তুলে দিছেন। সব থেকে সুন্দর সুন্দর ছবির কিছু মাসুদ ভাই এর তুলে দেওয়া।

রাশেদ ভাই – রাশেদ ভাই এর একটা ব্যাপার আমার খুব ভাল লেগেছে। আমি যখনই ভাই এর নাম ভুলে যাই, ভাই নাম বলে দেন।

সালেকিন ভাই – চুপা চাপ স্বভাবের মানুষ। তবে আলাদা প্যারা নাই, ইগো নাই। রুম শেয়ার করে শান্তি পেয়েছি।

ওয়াসিম ভাই – এই লোকের ব্যাপারে আলাদা কিছু বলার নাই। আমার যত আজগুবি প্রশ্নের উত্তর উনি দেন, আমি নিজেও সেগুলা শুনলে রেগে যেতাম।

সারওয়ার বন্ধু – ঠান্ডার মধ্য যে বের হলাম, সারওয়ার এর মাফলার ছিল। শিলিগুরি তে মার্কেটে ঘুরাইছে, চকলেট খাওয়াইছে। বিভিন্ন ডিসকাসন ছিল সময় কাটানোর মধ্যই।

আমির ভাই – আমির ভাই এর সাথে তেমন দেখা হয় না অফিসে। বাট টুরে সেটা মনেই হয় নি। খুব ফ্রেন্ডলি, কোয়ালিটি ডিস্কাশন করেছি আমরা।

অন্যান্য – সম্পুর্ন টুর এ অনেকে ছিল, যাদের নাম বললে লিস্ট অনেক লম্বা হয়ে যাবে। ছোট ছোট প্যানিক মুহুর্তে যারা হেল্প করেছেন, তাদের ধন্যবাদ। যারা পুরা টুর ম্যানেজ করেছেন, তাদের ধন্যবাদ। কলিগদের যাদের সাথে দেখা হলেই হাঁসি দিয়ে কথা বলেছেন, তাদের ধন্যবাদ! ম্যানেজমেন্টকে স্পেশাল ধন্যবাদ, আমাদের কে টুরে পাঠানোর জন্য!

সামনে টুর কোথায়?

সামনের বছর শুরুতে আমি দেশান্তরিত হওয়ার চেষ্টা করছি। সেটা প্রথম টুর হতে পারে। এশিয়ান মুসলিম কান্ট্রি! এর পর আমি হয়ত ফাকে ফাকে টুর দিব। স্পেশালি wptowp.com থেকে ওয়ার্ডক্যাম্পে স্পন্সার করার ইচ্ছা আছে। সেখানে যাওয়া লাগতে পারে। যদিও Wptowp টিম প্রস্তুত হয়ে যাবে এর মধ্য।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স জব খেয়ে দিবে? Previous post আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স জব খেয়ে দিবে?
আমাদের এত বেকার কেন? জাভাস্ক্রিপ্ট চাকরি! Next post আমাদের এত বেকার কেন? জাভাস্ক্রিপ্ট চাকরি!
Close

গালিব নোটস এর ইউটিউব ভিডিওঃ