আপনি যদি বিয়ে করতে চান, তাহলে আপনার উচিৎ হবে একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার কে বিয়ে করা। বিয়ে তো লাইফে একবারই করবেন। তাহলে কেন জেনে বুঝে সঠিক মানুষ কে বিয়ে করবেন না? এই ব্লগে আমি আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি ১১টি কারন যেগুলো অন্য কোন ক্যারিয়ারের মানুষের মধ্য পাবেন না।

১। ঝগড়া করে সব সময় জেতার সুযোগ

কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারদের মাথায় সাধারনত প্রজেক্ট, বাগ ফিক্স, স্প্রিন্ট টার্গেট, ব্যাকলগ আর বাফার টাইম ঘুরে থাকে। যে কারনে তার অন্য কিছু চিন্তা করার সময় থাকেই না। ঝগড়া করার জন্য, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারদের থেকে ভালো আর কেউ হতে পারে না। আপনি যাই ই করেন না কেন, সে হ্যা বলে মাথা নাড়ায় যাবে।

যদি আপনার প্রচন্ড রাগ থাকে, কথায় কথায় রেগে যান, তাহলে চোখ বন্ধ করে একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারকে বিয়ে করতে ফেলতে পারেন। আপনার রাগ দেখার টাইম হয়ত তার থাকবে না, কিন্ত আপনার কথায় সে সব সময় “হ্যা” বলে সম্মতি জানাবে।

২। সরাসরি ম্যানেজিং ডিরেক্টর হওয়ার সুযোগ

বেশির ভাগ কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার এর কিছু ড্রিম প্রজেক্ট থাকে। সেটা প্রডাক্ট বেজ হতে পারে, সার্ভিস বেইজ হতে পারে, আবার প্রডাক্ট এবং সার্ভিস এর কম্বিনেশনে কিছু হতে পারে। বেশির ভাগ কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার এর ড্রিম প্রজেক্ট গুলো ড্রিম এ শেষ হয়ে যায়। কারন ইঞ্জিনিয়ারিং একা একা শেখা গেলেও, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট আর স্ট্রেড হ্যান্ডেলিং একা করা যায় না।

এর পরও অনেকে কিন্তু ড্রিম প্রজেক্ট শুরু করে। এখন যদি আপনি একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার কে বিয়ে করেন, কোন রকম হিসাব ছাড়াই আপনি সেই ড্রিম প্রজেক্ট কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) হিসাবে বিবেচিত হবেন।

কম্পিউটার এর কিছু না জানলে চিন্তার বা ভয়ের কিছু নাই। আপনাকে তেমন কোন কাজ করতে হবে না কোম্পানির এমডি হিসাবে। শুধু মাত্র বার্ষিক অনুষ্টান গুলোতে আপনি ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসাবে ক্রেস্ট গ্রহন করবেন। আর বিভিন্ন ডকুমেন্ট এ সিগনেচার করবেন।

৩। শুধু চা-বিস্কুট থাকলে রান্নার করা লাগবে না

আপনি যদি একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার এর বডি পোস্টমর্টেম করেন কি কি পাবেন জানেন? চা, বিস্কুট, কফি, আপনার জন্য ভালোবাসা। এক কাল্পনিক গবেষনায় দেখা গেছে, একজন সফটওয়্যার প্রকৌশলীর বডিতে ৭০% থাকে চা, কফি আর বিস্কুট।

শুধু মাত্র একটা ইন্টারনেট সংবলিত ডিভাইস, চা, কফি রেখে আপনি নিশ্চিন্ত মনে ওয়ার্ল্ড টুর দিয়ে আসতে পারেন। কোন রকম চিন্তা করতে হবে না। আপনার সিরিয়াল দেখা বা ফেভারিট সো দেখার সময় কখনও ঝামেলা করবে না। এমনকি যদি বাসায় কিছু রান্নাও না করেন, তাও চলে যাবে।

  • মনে রাখবেন, একটা ইন্টারনেট সংবলিত ডিভাইস, চা বা কফি আর বিস্কুট – পার্ফেক্ট ফর সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার…

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার রা সাধারনত কাজে খুব ব্যাস্ত থাকে। হয় অফিসের প্রজেক্ট না হয় নিজের প্রজেক্ট। সে হিসাবে আপনি টিভি বা ফ্রিজ নিয়ে কখনও টিভি ফ্রিজ নিয়ে ঝামেলায় পরবেন না। আপনি আপনার মনের মত করে ব্যাবহার করতে পারবেন।

৪। ২৪ ঘন্টা ডেডিকেটেড ফ্রি টেক সাপোর্ট

একজন কম্পিউটার শুধু একজন ইঞ্জিনিয়ারই না। সে একজন মেকানিক, একজন হ্যাকার, একজন ফেজবুক এক্সপার্ট, এমনকি গানও ডাউনলোড করতে পারে। তাই, আপনি ২৪ ঘন্টা ডেডিকেটেড সাপোর্ট পাবেন যদি একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার কে বিয়ে করেন।

মাঝ রাতে আপনার ফেজবুকে ফটো ভেরিফিকেশন চাইলে সে ঠিক করে দিবে। যদি ফেজবুক একাউন্ট হ্যাক হয়, ঠিক করে দিবে। আপনার কম্পিউটার চালু না হলে উইন্ডোস দিয়ে দিবে। সব থেকে ইম্পর্টেন্ট হচ্ছে, আপনি যদি জানতে চান, আপনার কম্পিউটারে মাই কম্পিউটার কই, সে একটু বিরক্ত না হয়ে আপনাকে দেখিয়ে দিবে।

৫। কখনও চিটিং করবে না

অন্য ১০ জন প্রকৌশলীর সাথে একজন সফটওয়্যার প্রকৌশলীর একটা বেসিক পার্থক্য আছে। দে নেভার ডু চিটিং। একটু বুঝিয়ে বলি চলেন। ধরেন আপনি যদি একটা বাড়ী বানাতে চান, প্রথমে সকল এলিমেন্ট এর জন্য পে করতে হবে। এমন কি ইঞ্জিনিয়ার সাহেব কেও পে করতে হবে। তার পর তারা আপনার বাড়ী বানানো শুরু করবে। এডভান্স নিয়ে ভেগে যাওয়ার খবর তো নিয়মিত পত্রিকাতে দেখা যায়।

এবারে চলেন সফটওয়্যার এর দিক চিন্তা করি। একটা সফটওয়্যার প্রথমে বানানো হয়, ইউজার সেটা ব্যাবহার করে তার পর সেটিস্ফাই হলে প্রো ভার্সনে কনভার্ট হয়। সেখানেও লেখা থাকে, নো কোয়েশ্চেন আস্ক, ১৪ ডে মানি ব্যাক গেরান্টি। এই যে আগে সার্ভিস দেয়া, এর মাধ্যমে আমররা সব সময় সৎ সার্ভিস দিয়ে আসি। আমররা চিটিং করি না।

৬। লিসেন্ট কেয়ারফুলি অল দ্যা টাইম

সফটওয়্যার প্রোকৌশলিদের এটা অন্যতম বৈশিষ্ট লিসেন্ট কেয়ারফুলি অলয়েজ। প্রডাক্ট ওনার এর কথা, টিম লিড এর কথা, স্ক্রাম মাস্টার এর কথা, ক্লায়েন্ট এর কথা, এমন কি আপনার কথা সব সময়ে সে অত্যান্ত মন দিয়ে শুনবে। তবে, কথা শুনে সেটার এক্সিকিউশন ঠিক ঠাক করবে কি না, এই ব্যাপারে আমি গেরান্টি দিতে পারছি না।

  • অনেকে অভিযোগ করেন, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার নাকি অত্যান্ত মন দিয়ে সকলের কথা, এক কান দিয়ে শুনে, অন্য কান দিয়ে বের করে দেয়। যদিও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার রা এই দাবি ভিত্তিহিন বলে দাবি করেছেন।

৭। ভাজ্ঞা মন জোড়া লাগাতে অভ্যাস্ত

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের অন্যতম কাজ হচ্ছে বাগ ফিক্স করা। কোম্পানি গুলোতে এই কাজ এত বেশি পপুলার যেটা এক্সপ্রেস করার মত নয়। অনেক অফিসে বাগ ফিক্স এর কম্পিটিশন হয়ে থাকে, যেটা বাগ বাউন্টি নামে পরিচিত। বলা হয়ে থাকে, যে যত বাগ ফিক্স করতে পারে, সে তত ভালো ইঞ্জিনিয়ার।

এখন, বাগ ফিক্স মানে কি? জোড়া লাগানো। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার রা এই কাজ অত্যান্ত দক্ষতার সাথে করে থাকে। তাই আপনার মন ভেজ্ঞে গেলে চিন্তার কারন নেই। একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারকে বিয়ে করে ফেলুন। আপনার মন জোরা লাগানোর কাজটি অত্যান্ত দক্ষতার সাথে করে যাবে।

অনেকে, বিশেষ করে, মেয়েদের প্রচুর মুড সুইং হয়ে থাকে এখন। আপনাদের জন্য, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার পার্ফেক্ট জীবন সংগী হতে পারে। আপনার মুড সুইং কে সে সুনিপন ভাবে এরর ফিক্স এর মত করে ফিক্স করে যাবে।

৮। সেইফটি গার্ড হিসাবে কাজ করবে

একটা সফটওয়্যার রিলিজের আগে কয়েকবার টেস্ট করা হয়ে থাকে। একবার ডেভেলপমেন্ট ফেজ এ, আরেকবার কিউএ ফেইজ এ। এর থেকে একটা ব্যাপার বুঝা যায়, আপনার হবু পার্টনার সিকুরিটি নিয়ে কতটা চিন্তিত। আপনাকে কিন্তু একটা প্রজেক্ট এর মত করেই নিরাপত্তা দিবে।

ধরেন আপিন বার্গার খেতে চান, সে প্রথমে এক বাইট খেয়ে টেস্ট করে তার পর আপনাকে খেতে দিবে। আবার যদি আপনি কোথাও ঘুরতে যেতে চান, প্রথমে সে ঘুরে, পরিস্থিতি চেক করে, পরের বার আপনাকে নিয়ে যাবে ঘুরতে। এই রকম সেইফটি আপনি আর কার থেকে আশা করতে পারেন?

৯। এজাইল এবং স্ক্রাম জানে

বেশির ভাগ সফটওয়্যার কোম্পানিতে এজাইল এর বিভিন্ন ফ্রেমওয়ার্ক ব্যাবহার করা হয়ে থাকে। আপনি যদি একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার কে বিয়ে করেন, হাই চান্স থাকবে যে, আপনার হাবি বা বেবিও স্ক্রাম জানে।

যে কারনে সে সব সময় সেলফ মোটিভেটেড থাকবে। নিজের কাজ নিজেই ডেডলাইন সেট করবে, বাফার টাইমে রোমান্টিক মেসেজ পাঠাবে। প্রতিদিন কাজের আপডেট দিবে আর আপনার প্রয়োজন গুলো প্রায়োরিটি বেজ ট্যাগ দিয়ে সিরিয়ালি সম্পাদন করতে থাকবে।

  • স্ক্রাম জানার ফলে, আপনার ফিউচার বেবি প্রডাকশনের ব্যাপারে একটা ডেডলাইন থাকতে পারে। বেবির ফিউচার নিয়ে মাইলোস্টন সেট করে স্প্রিন্ট চলতে পারে। যে কারনে আপনি রিল্যাক্স থাকতে পারবেন আজীবন।

১০। আনলিমিটেড শপিং এর সুযোগ পাবেন

সাধারনত কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার রা লাইফে খুব একটা সময় পান না। যদিও হেটার্স রা উইকেন্ড এর ২দিন টেনে আনতে পারে কিন্ত বাস্তবে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারদের লাইফে খুব একটা ফ্রি সময় আসে না। তাই, যদি একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার কে বিয়ে করেন, শপিং এর সময় তাকে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

তবে হতাশ হওয়ার কিছু নাই। শপিং নিয়ে কোন প্রব্লেম হবে না।

প্রথমত, আপনার হাবি বা বেবি আপনাকে কার্ড দিয়ে বলবে, যাও! যা খুশি কিনে নাও নিজের পছন্দমত। আর দ্বিতীয়ত, কাজের ফাকে ফাকে ইভ্যালি, ইকিনি থেকে আপনাকে ডিসকান্ট এ নানান গিফট কিনে পাঠাবে।

১১। ০ নাকি ১ এর বাইরে কোন হামটি ডামটি নেই

কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পুরোটাই দারিয়ে আছে ০ আর ১ এর উপর। হয় শুন্য না হয় এক। এর মাঝে কোন রকম হামটি ডামটি নাই। আপনি হয় শুন্য না হয় আপনি ওয়ান। সব সময় স্ট্রেইট কথা বার্তা, কোন আজাইরা ভুমিকা নাই। আপনি যদি একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার কে বিয়ে করেন, তাইলে জীবনে সব কথায় ডাইরেক্ট উত্তর পাবেন। কোন হামটি ডামটি নেই।

আমি নিজে একজন প্রাউড কম্পিউটার প্রকৌশলী। অনেকে মনে করেন, একজন মানুষ সারা দিন কম্পিউটার এর সামনে বসে থাকে, এর সাথে জীবন অতিবাহিত করা যাবে না। অনেকে আবার জিজ্ঞেস করেন, সারা দিন রাত কিভাবে কম্পিউটার এর সামনে বসে থাকো?

যাই হোক, আপনি যদি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হন, বা হবু কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হন, এই পোস্ট শেয়ার করতে ভুলবেন না। আপনার শেয়ার দিতে হয়ত ১মিনিট লাগবে কিন্ত আপনার একটি সোস্যাল শেয়ার এর মাধ্যমে আপনার বন্ধুরা এই পোস্ট দেখতে পারবে। আর আপনার শেয়ার আমাকে সারা জীবন অনুপ্রানিত করবে…

0Shares
Previous post কম্পিউটার সায়েন্স পড়লে, কম্পিউটার প্রোগ্রামার হতেই হবে?
বায়াস্ট নিউজের স্লো পয়জনে আপনিও Next post বায়াস্ট নিউজের স্লো পয়জনে আপনিও?

3 thoughts on “যে ১১ টি কারনে একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার কে বিয়ে করা উচিৎ!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Close

গালিব নোটস এর ইউটিউব ভিডিওঃ