পিএইচডি অমুক এর কাছে আইডিয়া চাইলে, উনি পিএইচডি একাই করছেন এই মর্মে ১ ঘন্টা বক্তব্য দিবেন কিন্তু কোন আইডিয়া দিবেন না…

আমি যখন উগান্ডার লোকাল অক্সফোর্ড ভার্সিটিতে ছিলাম, আমাদের সময়ে একজন স্যার ছিলেন। আসলে স্যার না বলে উনাকে পিএইচডি অমুক বললে মনে হয় বেশি খুশি হবেন। উনি সম্ভবত স্কুল কলেজ পার করে, সরাসরি পিএইচডি করেছেন। স্যার পরবর্তীতে ডিপার্টমেন্ট এর কো-অর্ডিনেটর হয়েছেন।

শাহাজালাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা, এই ভদ্রলোকের ব্যাপারে এত এত কথা শুনেছি যে, উনার জন্য আলাদা করে না লিখে পারা গেল না। ব্লগের মধ্য আমি আমার নিজের অভিজ্ঞতা যেমন শেয়ার করেছি তেমন অন্যদের অভিজ্ঞতা লিখেছি। সময় সল্পতার কারনে আলাদা করে লিখা সম্ভব হয় নি।

আমি আসাদুল্লাহ গালিব, এই ব্লগের লেখক। এই ব্লগের সমস্ত লেখা কপিরাইট মুক্ত। চাইলে যে কোন যায়গা শেয়ার করতে পারেন। এমন কি নিজের নামেও চালিয়ে দিতে পারেন। আমার মূল উদ্দেশ্য তরুনদের সচেতন করা, ফেইম পাওয়া নয়। একটি শেয়ার, অনেক তরুনকে সচেতন করতে সহায়তা করবে। আমার সাথে ফেজবুকে যোগাযোগ করতে পারেন অথবা ইমেইল করতে পারেন।

শুরু করি আমার নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে! এই লেখাটি পড়বেন, বুঝবেন, কমেন্টও করবেন কিন্তু নাম মেনশন করবেন না। নাম বললে আবার দেখা যাবে, আপনাকে খুজে বের করে, উনার পিএইচডি একাই করেছেন সেটা ব্রিফ করা শুরু করবেন।

পিএইচডি অমুক এর পরিচিতি

পিএইচডি অমুক স্যার উগান্ডাতে বসবাস করছেন। বর্তমানে উগান্ডার, আমেরিকান স্ট্যান্ডার্ড লোকাল অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে প্রফেসর হিসাবে কর্মরত আছেন। উনি সম্ভবত অনার্স ছাড়াই পিএইচডি করছেন এবং সেটাও একাই করেছেন। উনার পিএইচডি ছিল মালায়শিয়ার ১ নাম্বার বিশ্ববিদ্যালয়য় থেকে।

উগান্ডা তে যে কোন টিচার এর বিরুদ্ধে কিছু লেখাই বিয়াদবি হিসাবে গন্য করা হয়ে থাকে। যেখানে একজন প্রফেসর এর বিরুদ্ধে লেখা তো, বাইবেল অমান্য করার মতই বিয়াদবি। আফটার অল, কিছু না জানলে কি “পিএইচডি অমুক”, প্রফেসর হতে পারছেন!! তো, এটা আসলে রম্য রচনা, কেউ সিরিয়াসলি নিবেন না।

রেফারেন্স কই আপনার?

স্যার এর সাথে আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে একটি কোর্স এ সাক্ষাত হয়েছিল। স্যার এর সাথে কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং কোর্স এর শুরুতেই আমি ক্লাস চেঞ্জ করে নিয়েছিলাম। একজন বিশেষ ব্যাক্তির সাথে কোর্স মিলে যাওয়াতে সেই কোর্স টি কন্টিনিউ করা হয়ে উঠেনি। তবে, কয়েকদিন ক্লাস খুব ভালো ছিল। স্যার খুব পছন্দ করত আমাকে। স্যার এর ব্যাপারে আগেই জেনেছিলাম আমি।

এর পর স্যার এর সাথে আমার দেখা হয়, থিসিস প্রপোজাল প্রেজেন্টেশনে। স্যার আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল, আমি আমার কাজের ব্যপারে নিশ্চিত কি না! আমি বলেছিলাম হ্যা, এবং এটাও বলেছিলাম, এই রকম কাজ এর আগে হয় নি।

স্যার সুন্দর করে কিছু কারেকশন দিচ্ছিলেন যেটা পজিটিভ ছিল। কিন্তু শেষ দিকে স্যার আমাকে বলে বসেন, আমার স্টাডি রেফারেন্স নাকি খুব দুর্বল!!

উলেখ্য, আমার রেফারেন্স এ একাধিক আইট্রিপলই ছিল, এসিএম ছিল। তো, আমি স্যার কে জিজ্ঞেস করতে চাইছিলা, স্যার ক্যান ইউ প্লিজ এক্সপ্লেইন সাম বেটার রেফারেন্স দ্যান দিস? কিন্তু স্যার তার আগেই তার পিএইচডি এর কথা শুরু করে দিলেন। স্যার পিএইচডি করার পরেও নাকি আমার মত করে কথা বলেন নাই!

যাই হোক, কথা না বাড়িয়ে স্যার কে ধন্যবাদ দিয়ে বিদায় নিলাম। কিন্তু জানার ইচ্ছা ছিল, আমি কি পিএইচডি এর প্রপোজাল দিচ্ছি নাকি অনার্স এর? সেমিস্টার শেষ করার তারা ছিল তাই কথা পেচাই নি সেদিন।

********

এর পর স্যার এর সাথে আমার থিসিস ফাইনালে সাক্ষাত হয়। সেই সময়ে সম্ভবত স্যার কো-অর্ডিনেটর হয় নি। অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে, সেদিন স্যার এত্ত সাপোর্টিভ ছিল যা কেউ ধারনাও করতে পারেন নি। সেদিন, স্যার পুরা বোর্ড এর বিরুদ্ধে গিয়ে আমাকে সাপোর্ট করেছিলেন।

সেই ঘটনা যত স্টুডেন্ট শুনেছিল সবাই অবাক হয়েছিল। সব থেকে অবাক হয়েছিলাম আমি। তবে, সেই ঘটনার জন্য স্যারের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।

*******

মিস্টার পিএইচডি এর কাজ হচ্ছে কিছু না কিছু ভুল ধরা। মানে আপনি যতই ভাল করেন, কিছু ভুল সে বের করবেই। থিসিস রিপোর্ট নিয়ে যাওয়ার সময় আমি জানতাম। এ কারনে আমি খুবই সিলি কিছু মিস্টেক করে নিয়ে গেছিলাম। স্যার সেগুলোই ভুল ধরলেন আর আমি আগে থেকে ফিক্স করা রিপোর্ট প্রিন্ট করে জমা দিয়ে দিলাম।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, স্যারের এই ভুল ধরার ব্যাপারে আমি এত্ত কনফিডেন্ট ছিলাম যে, আমি এক সাথে সেলফ মেইড সিলি মিস্টেক আর ফাইনাল রিপোর্ট প্রিন্ট করে নিয়ে গেছিলাম। বলে রাখা ভাল, স্যার কখনও আপনাকে চিনবে না। আপনি ১ ঘন্টা পর কারেকশন নিয়ে গেলেও আবার আপনার সব এক্সপ্লেইন করা লাগবে।

*******

প্র্যাক্টিকাম রিপোর্ট নিয়ে স্যার আমার সাথে কুত্তার মত ব্যাবহার করেছিলেন। প্রব্যাবলি মিস্টার পিএইচডি তখন নতুন কো-অর্ডিনেটর হয়েছেন। ইন্টার্নশিপ এর রিপোর্ট সুপারভাইজার ক্লেয়ারেন্স নিয়ে উনার কাছে গেলাম। কি একটা ভুল হইছে। তো, আমি বললাম, মে-বি এমনই হবে।

সাথের সাথ উনি ঘেউ ঘেউ করে উঠলেন। বললেন, আমরা নাকি শিখতে চাই না। তার জন্য আমাদের সমস্যা হয়। লাইফে কিছু করতে পারি না। দেন বললেন, সুপারভাইজার থেকে ক্লেয়ারেন্স নিয়ে আসতে। আমি যখন জানাইলাম, আমি নিয়েই এসেছি, উনি বলেন, আবার যাও। আমার কথা বল। মানে, এত্ত ভাব, ভাইরে ভাই।

মিস্টার পিএইচডি এর ভুলে যাওয়া উচিৎ না যে, স্টুডেন্টের টাকায় উনার স্যালারি হয়। উনাকে রাখাই হইছে স্টুডেন্টদের শেখানোর জন্য। স্টুডেন্টদের সাথে ***** মত ব্যাবহারের জন্য উনাকে রাখে নাই।

উনি যখন আমার ফিউচার নিয়ে কথা বলছিলেন, তখন আমি দেশের অন্যতম সেরা কোম্পানিতে প্রবেশন প্রিয়ড শেষ করে, জব কনফার্ম করেছি। উনি যাদের সাথে এমন ব্যাবহার করেছেন, তাদের অনেকে খুব ভালো চাকরি করেন। উনি যে সব স্টুডেন্টদের সুপার ভাইজ করন তাদের কেউ ভাল জব করে, এমন উদাহরন কি উনি দিতে পারবেন?

এই যে উনার স্টুডেন্টরা কিছুই করতে পারেন না, অথচ উনার চোখে খারাপ স্টুডেন্টরাই চাকরি পাচ্ছে আগে আগে। উনি কি এর পরও বুঝে না, উনার লেভেল কোথায়? উনি এত্ত ডাম্প কেন সেটাই আমার মাথায় ঢুকে না।

আরও ভালো আইডিয়া নিয়ে এসো

আগের বারও আমার কাছেই করেছিলে

থিসিসে রিটেক

ইন্টার্নশিপে রিটেক

ডিসক্লেইমারঃ ইনভেস্টর এন্টারপ্রিউনার হওয়া প্রচন্ড ব্যাস্ত থাকা হয়। এর পরও সময়ে করে এই ব্লগে কন্টেন্ট প্রকাশ করি! উদ্যেশ্য একটাই, ফিউচার জেনারেশন চিন্তা ভাবনা কে প্রসারিত করা। কোন বিশ্ববিদ্যালয় বা ইনিস্টিউটের সাথে আমার ব্যাক্তিগত শত্রুতা নেই। উল্লেখিত উগান্ডা লোকাল অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি হচ্ছে, কাল্পনিক একটি বিশ্ববিদ্যালয়! যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে লিটারেলি ব্যাবসা করা হচ্ছে। এখানে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের সাথে যা ইচ্ছা তাই করা হয় শুধু মাত্র ব্যাবসা রক্ষার উদ্যেশ্য।

কাল্পনিক এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্রেইনলেস এডমিনিস্ট্রেশন, মেরুদন্ডহীন গার্বেজ ফ্যাকাল্টি আর নীতি বিবর্জিত ডিপার্টমেন্ট হেডদের বিরুদ্ধে আমার যত অভিযোগ। সুতরাং, সুস্থ ধারার কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে এই ব্লগ মিলবে না। এর পরও যদি কোথাও মিল পাওয়া যায়, তাহলে সেটা একান্তই কাকতালীয় ব্যাপার।

শেষ কথা

কোন রকম সন্দেহ ছাড়াই, পিএইচডি অমুক স্যার প্রচন্ড ট্যালেন্ট একজন শিক্ষার্থী ছিলেন। শাহাজালাল বিশ্ববিদ্যালয় বা ইউনিভার্সিটি অফ মালায়া তে পড়া কিন্তু চাটি-খানি কথা নয়। এবং স্যার কিন্তু খুবই ইয়ং বয়সে পিএইচডি করেছেন।

লোকাল অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক টিচার আছেন যারা রিসার্চ কি জানেই না। সেখানে স্যার একজন পিএইচডি হোল্ডার! স্যার এর সাথে কথা বল্লেও আপনার খুব ভালো লাগবে। কারন স্যার স্পষ্ট ইংরেজীতে সুন্দর করে, আস্তে ধীরে কথা বলে থাকেন।

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, স্যার শিক্ষার্থীদের কথা এক বারও চিন্তা করেন না। আর পিএইচডি করার পরেও যে স্টাডি করতে হয়, পিএইচডি যে ট্রেইনিং, প্রোমোশন এর চাবি নয়, এটাও স্যার জানেন না। আর স্যার জানার চেষ্টাও করেন না। স্যার নিজের পিএইচডি নিয়ে একটু বেশিই বেশি ভাবে থাকেন।

কিছু প্রশ্ন যেগুলোর উত্তর থাকলে জানাবেন

তো মিস্টার পিএইচডি অমুক স্যার,

  • আপনি মালায়শিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করার পরে, আর কি ছিড়ছেন সো ফার?

    এই যে প্রফেসর হয়েছেন, এটাতে আপনার যতটা না ক্রেডিট তার থেকে বেশি ক্রেডিট লোকাল অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সিস্টেম এর।

স্যার, পিএইচডি তো একাই করেছেন,

  • তাহলে এর পর টিচিং এর লম্বা টাইমে আর কোন পেপার পাবলিশ করতে পারলেন না?

    আপনার সেই সব শিক্ষার্থীরা কই যাদের সুপার ভাইজ করেন? ওহ, আমি তো ভুলেই গেছিলাম, এখানে শিক্ষার্থীরা তো সব গার্বেজ! স্যার আরেকটা কথা, আপনি যে পিএইচডি একাই করছেন, তাইলে এমন কোথাও চলে যান, যেখানে পিএইচডি করান হয়!
  • সেই যোগ্যতা কি আছে?

    লাস্ট একটা কথা, অনার্স এর শিক্ষার্থীদের সাথে অনার্স এর মত ব্যাবহার করবেন।
0Shares
প্রডাক্টের জন্য প্রাইস Previous post প্রডাক্টের জন্য প্রাইস পে করুন অথবা নিজে প্রাইস হন!
প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ, galibnotes Next post কোন প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ শিখব ?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Close

গালিব নোটস এর ইউটিউব ভিডিওঃ