#Year2041
২০৪১ সাল থেকে বলছি। দুনিয়া কেমন বদলে গেছে না??

একটা সময়ে, টেক দুনিয়ার মাথা Silicon Valley তে একটা কথা প্রচলিত ছিল! কোন প্রডাক্টের জন্য প্রাইস পে করুন অথবা নিজে প্রাইস হন। অর্থাৎ ফ্রি তে যে প্রডাক্ট আপনি ব্যাবহার করছেন, সেখানে আপনি টাকা না দিলেও অনেক কিছু দিচ্ছেন। বলতে পারেন, নিজেই প্রাইস হিসাবে বিবেচিত হচ্ছেন।

* * * * * * * * * * * *
চলেন আমার গল্পটি বলি! বছর তিনেক আগের কথা! ম্যাম(আমার অর্ধাঙ্গিনী) থেকে একটা সফটওয়্যার নিছিলাম। একদম ফ্রিতে, কোন সাবস্ক্রিপশন ফিস নেই!!

কিন্তু তখন কি ভেবেছিলাম এমন হবে? হাসি-খুশি আর সব সময় পাশে থাকা এই মানুষটি যে, আমার সব ডেটা নিয়ে নিবে, কল্পনাও করি নাই!! আমার কাজ কর্ম, চাল চলন এর সব ডেটা ট্র্যাক করেছেন। আমার গবেষণার রুট আর এনালাইসিস নিয়ে গেছেন সেই ফ্রি সফটওয়্যার এর মাধ্যমে! আমি বুঝিই নাই।

* * * * * * * * * * * *
আমার ডেটা ব্যাবহার করে বানানো টাইম মেশীনের প্রথম বলির পাঠা আমাই নিজেই (প্রডাক্টের জন্য প্রাইস পে না করার ফল)! ফ্রিতে নেওয়া সফটয়্যার এর মুল্য আমাকেই দিতে হচ্ছে। আমার গবেষণার ফলাফল দিয়ে তিনি টাইম মেশিন বানিয়ে ফেলেছেন। আর সেই মেশিনে করেই আমরা রওনা দিয়েছি ২০১৮ এর দিক!!

* * * * * * * * * * * *
এখন থেকে ২৩ বছর আগে যখন ইনফর্মেশন টেকনোলজির নিরব বিপ্লব হচ্ছিল! ২০১৮-১৯ সালে আমাদের তরুনরা এভাবেই ফ্রি এপ্স, ফ্রি সাইট ব্যাবহার করে দেদারছে তাদের ডেটা তুলে দিয়েছিল উন্নত বিশ্বের কাছে। ফ্রি তে পাওয়া টিকটক, লাইকি আর ফেজবুকের মত এপস গুলো ব্যাবহার করে গেছে দিনের পর দিন।

এই এপস গুলো তাদের থেকে টাকা নেয়নি কিন্তু নিয়েছে সময়, বুদ্ধি, ইন্টেলিজেন্সি। তাদের কে বানিয়েছে শিক্ষিত বেকার। তাদের থেকে নেওয়া ডেটা ইউজ করে ট্রিলিয়ন ডলার কম্পানি গড়ে তুলেছে। এভাবেই সেই বিপ্লবে আমরা কয়েকশত বছর পিছিয়ে গিয়েছিলাম।

* * * * * * * * * * * *
সেই বিল্পবের সময়ে, বিশ্ব ধরেই নিয়েছিল Leonardo da Vinci এরপর আর কোন গ্রেট পেইন্টার এর জন্ম হবে না। কারন, টেক বিপ্লবে সমস্ত দুনিয়া তখন ডিজাটাল ডিভাইজ মিউজিক্যাল এপ্স নিয়ে ব্যাস্ত ছিল! ফটোগ্রাফি বা শিল্প কলা চর্চা করার সময় কই? একদল নিজের ডেটা অন্যর হাতে তুলে দেওয়ায় ব্যাস্ত আরেকদল সেটা ব্যাবহার করে আখের গোছাতে ব্যাস্ত।

* * * * * * * * * * * *
আমরা ২০৪১ থেকে শুরু করেছিলাম! টাইম মেশিন আমাদের উলাটা দিকের সময়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা প্রায়, ২০২০ সালের কাছে এখন! Shaiful ভাই কে দেখতে পারছি! আমি আনন্দে চিক্কার করছি। পাশে বসা ম্যাম, আমার সাডেন চিক্কারে হতভম্ব!

আমার দিকে রক্ত মাখা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমি সাইফুল ভাই এর দিকে আজ্ঞুল তুলে বলতে শুরু করলাম, সাইফুল ইসলাম ভাই, যিনি লিউনার্দো দ্যা ভিঞ্চি এর পরে দুনিয়াতে সব চেয়ে আলোচিত ফটোগ্রাফার। যার ছবি গুলো লিউনার্দো দেখলে নিজেই অবাক হতেন হয়ত।

আমাদের তরুনদের গোরামির জন্য টেক বিপ্লবে অংশ নিতে পারি নাই! কিন্ত Islam ভাই আমাদের বিশ্বব্যাপি পরিচিত এনে দিয়েছেন তার ছবির মাধ্যমে। তার পরিচিত, ছবির পরিচিত Leonardo da Vinci এর থেকে হাজার গুন বেশী!! উনি আমার খুব ক্লোজ বড় ভাই।

আমি তোমার টাইম মেশিনের উপর বিরক্ত ছিলাম। কিন্তু সাইফুল ভাই কে দেখে আমার সব বিরক্ত চলে গেছে। সাইফুল ভাই এর সাথে দেখা হবে ভেবেই আমি চিক্কার করছি। লিউনার্দো এর পরে সব চেয়ে আলোচিত ফটোগ্রাফার আমাদের পরিচিত, তোমার সাথেও পরিচয় করিয়ে দেই চলো…

* * * * * * * * * * * *
ম্যাম বিস্ময়সুচক দৃষ্টিতে প্রশ্ন, বিশ্ব বিখ্যাত সাইফুল ভাই, যার সাথে দেখা করার জন্যই, আমি টাইম মেশিনের ইনিশিয়েটিভ নিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, টাইম মেশিনে গিয়ে একটা ছবি তুলিয়ে আনব!

সেই সাইফুল ভাই তোমার পরিচিত?…

* * * * * * * * * * * *
#সাইন্সফিকশন_লেখার_অপচেষ্টা 😋

আমরা অনেক সময় ভাবি যে, টেক দুনিয়া আমাদের সব ফ্রিতে দিচ্ছে। গত সপ্তাহে আমি বলছিলাম, গুগোল তো আমরা ফ্রি তে ব্যাবহার করি! আমার সিইও স্যার, ম্যানেজার স্যার ২জনই অনেক অবাক হয়েছিলেন।

সত্যিই তো, আমরা যা ব্যাবহার করছি ফ্রি হিসাবে সেগুলাতে আমরা নিজেরাই প্রডাক্টের জন্য প্রাইস হচ্ছি। আমাদের তরুন রা কি এটা বুঝতে পারছে? এই যে তারা দিন রাত বিভিন্ন এপস ব্যাবহার করে লাইফ লিড করছে, তাদের সব ডেটা তো বাইরে চলে যাচ্ছে!

তরুনরা ডিজিটাল টেক এ এতই অভ্যাস্ত হয়ে গেছে যে, শিল্প কলা সাহিত্য এর থেকে মিলিয়ন মাইল দূরে সরে গেছে। অনেকে জানেই না, টেক দুনিয়ার বাইরেও লাইফ আছে। জানেই না, একটা সুন্দর ছবি তোলার পর কত মানুষিক শান্তি পাওয়া যায়।

তরুনরা জানেই না, প্রিয়তমার হাতে একটা ঘড়ি পড়িয়ে দেওয়ার আনন্দ, তার সাথে হাজার খানেক লাইকি ভিডিও করার থেকেও বেশি আনন্দের। প্রিয় মানুষটির সাথে রিক্সায় ঘুরা, বৃষ্টিতে ভেজার স্বপ্ন তাদের কল্পনাও নাই।

এই সায়েন্স ফিকেশনে শুধু মাত্র ডেটা চুরির ঘটনা, আমাদের পিছিয়ে পড়ার ঘটনার দিকে ইংগিত করা হয়েছে। সাটোয়্যার হিসাবে লিখলেও, বাস্তবে কিন্তু আমরা এভাবেই পিছিয়ে যাচ্ছি।

আরেকটা ব্যাপার, সাইফুল ভাই আসলেই দারুন ছবি তুলেন। অসাধারন ভাই। দেখা হলে, আমাদের ছবিও তুলে দেওয়ার অনুরোধ পাইবেন ভাইয়া।

* * * * * * * * * * * *

আমার আরও কিছু সায়েন্স ফিকেশন আছে। যেমন এলগরিদম ফেইলুর থেকে মিলিয়ন ডলার সবজি বিক্রেতা দেখতে পারেন। সাইন্স ফিকশন ফর “বাবু খাইছো, বাবু খাইছো?” দেখতে পারেন এখানে। সাইন্স ফিকশন ফ্রম নোবেল টু নো-বেইল পড়তে পারেন! এছাড়া আমার সিরিজ ব্লগ সাইন্স ফিকশন পড়ুন এই লিংক এ ক্লিক করে। ব্লগ ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

0Shares
নিরাপদ ফিউচার Previous post ২০৩০ সালে আমাদের গ্রাজুয়েটদের কোনো চাহিদাই থাকবে না!
Next post পিএইচডি অমুক, PhD একাই করছেন এই মর্মে ১ ঘন্টা বক্তব্য দিবেন কিন্তু কোন আইডিয়া দিবেন না…

One thought on “প্রডাক্টের জন্য প্রাইস পে করুন অথবা নিজে প্রাইস হন!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Close

গালিব নোটস এর ইউটিউব ভিডিওঃ