#Year2041

রাত ৩ টা বেজে ৩৬ মিনিট। ল্যাবে কাজ করছি! বাংলাদেশ তো বটেই, বিশ্বের অন্যতম সেরা কম্পিউটেশনাল বায়োলজি ল্যাব এর (323574366b37)16 নং রুমে আমি! ২০৪১ সাল থেকে লিখছি। আমি লিখতেছি আর “SAF-57” নামের একটি রোবট আমাকে খাওয়ায় দিচ্ছে চামচ দিয়ে।

“SAF-57” নামের রোবটি অন্যান্য রোবট থেকে আলাদা। বলা হচ্ছে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স(AI) এর অন্যতম সেরা একটি প্রডাক্ট হল “SAF-57”। এখনকার সব রোবট স্বাভাবিক কথা বলতে পারে। কিন্তু আমার পাশের রোবটি এক ধাপ এগিয়ে! নিজস্ব বুদ্ধি ব্যাবহার করে, কাকে কখন ঘুম থেকে ডেকে তুলতে হবে, কার কখন কি খাবার দিতে হবে এ রকম ব্যাক্তিগত ব্যাপার ধরতে পারে।

একটু পর আমার কনফারেন্স। সেখানে টক দিতে হবে আমার! টেবিলে রিলেটেড পেপার প্রিন্ট করে রেখে, আমাকে ডেকে তুলেছে। খারাব রেডি করেছিল আগেই। আর খাওয়ানো শেষ করে আমার পোশাক লন্ড্রি করবে এটি!!

******

ল্যাব এর গবেষক দের চা-কফি খাওয়ানোর জন্য, হিউম্যান পাওয়ার ব্যাবহার করা আমাদের কাছে অপচয় মনে হয় একবার। আমাদের কথা ছিল যে, মানুষ কাজ করবে ইনভেটিভ সকল প্রজেক্টে, তারা কেন চা কফি বানিয়ে সময় নষ্ট করবে। মুলত তখনই ১ মিলিয়ন ডলার এর একটি ছোট্ট ফান্ডিং করা হয়েছিল একটা রোবটের জন্য। সেই ফান্ডিং দিয়েই আমাদের ছেলেরা “SAF-57” রোবট তৈরি করে।

খেতে খেতে লিখছি। সময়ের মুল্য অনেক!! লেখাটা তার প্রিন্ট করে আনার কথা কিন্তু আমি হাতে লিখব বলে কমান্ড দেওয়া ছিল। “SAF-57” কনফারেন্স এ কি কি বলা উচিত, সেই ব্যাপারে ব্রিফ করছে আমাকে!! আমি লেখার সাথে সাথে খাচ্ছি। টুক টাক অন্য কথাও হচ্ছে!!

রোবট(SAF): ফোনের ওয়াল পেপার হাসি খুব সুন্দর!!

আমিঃ এই হাসি ই তো আমাকে এত বড় ল্যাব আর মস্ত বড় বিজ্ঞানীদের লিড দেয়ার চালিকা শক্তিআমি যখন লোকাল অক্সফোর্ড এর শিক্ষার্থী ছিলাম, ডাম্প একজন মানুষ ছিলাম। কিভাবে কিভাবে যেন এই সুহাসিনীর সাথে পরিচয় হয়। বাকিটা তো দেখতেই পারছ। পরক্ষ ভাবে বলতে গেলে, তোমার ইনভেনশন কিন্তু এই মহিলার কারনেই!

প্রশ্নঃ এই যে বিলিয়ন ট্রিলয়ন ডলার এর প্রজেক্ট, ল্যাব সব কিছুর পিছনে আপনি তার ক্রেডিট দিবেন?

আমিঃ হ্যা! না দেওয়ার কি আছে। আসলে আমি ফ্রন্ট লাইনে কাজ করলেও আমার ব্যাক-এন্ড তো সে ই। শুধু আমি নাহ, দুনিয়ার মস্ত বড় যত কোম্পানি, ল্যাব আছে তার মালিকদের দিকে তাকালে দেখতে পাবেন, সবাই তাদের ওয়াইফ কে কৃতিত্ব দেয়। কেউ কেউ তাদের বিবিদের ম্যানেজিং ডিরেক্টর বানায়, কেউ আবার সিইও।

রোবটঃ আচ্ছা একটা প্রশ্ন, এই ব্যাক্তি আর ল্যাব! কোনটি বেশী ইম্পর্টেন্ট ??

আমিঃ কয়েক হাজার বিজ্ঞানী যেখানে গবেষনা করে, যেখানে কয়েক বিলিয়ন ডলার এর কাজ হয় প্রতি মাসে, সেটা তো যে কারও কাছে ইমপর্টেন্ট। কিন্তু আমার কাছে এই সব কিছুই ভ্যালুলেস, তার সাথে তুলনা করতে গেলে!!!

রোবটঃ আমরা তো সবই পারি তাহলে আমাদের কেন রোবট বলা হয়? মানুষ নই কেন আমরা?

আমিঃ মানুষের মাঝে ভালবাসা আছে, শ্রদ্ধাবোধ আছে। তারা এক সময় জীবন সঙ্গী বেছে নেয়। তারা বিবিদের কে ভালোবাসে। তারা বিবেক দিয়ে সমাজের উন্নতি করে। আবার তাদের অনেকে আবার মেধা-মনন, ক্রিয়েটিভিটি ব্যাবহার করে সমাজ কে ধ্বংস করে দেয়। তোমাদের মাঝে তো এর কিছুই নাই। কাল প্রোগ্রাম লিখি নাই দেখে আজ আমার এক্সট্রা নোট লিখ নাই। এত কিছু বাদ থাক, তোমরা কি ক্রাস খাও?

******

রোবট কিছু বলতে চাচ্ছিল। একটা কল এসেছে আমার। ফোনের মনিটরে পুরাতন এক কলিগের ছবি দেখা যাচ্ছে। রোবট বুঝে ফেলেছে, আজ আমি কনফারেন্স এ টক দিচ্ছি না। এই টক বাদ দেওয়াতে, ল্যাব এর কত বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হবে সেটার ক্যালকুলেশন প্রসেস করছে। আর আমি-

হ্যালো, হ্যা আমি আসছি, ঘুরতে নিয়ে যাবো তো, কনফারেন্স, ল্যাব, বিলিয়ন ডলার কিছুই না, আমি আসছি…

#CB #AI #Lab #Dream
#সাইন্সফিকশন_লেখার_অপচেষ্টা😛

সায়েন্স ফিকশনটি ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ফেজবুকে পোস্ট করেছিলাম। তখন আমি উগান্ডার লোকাল অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলাম। আমার বান্ধুবির নামের শর্ট ফর্ম এর সাথে এফ যুক্ত করে এটা লেখা হয়েছিল।

ওই সময়ে আমি কেবল মাত্র বায়োইনর্মেটিক্স এর ব্যাপার জানতে শুরু করেছিলাম। লেখাটি সামান্য পরিবর্তন করা হয়েছে।

সাইন্স ফিকশন ফর “বাবু খাইছো, বাবু খাইছো?” দেখতে পারেন এখানে। সাইন্স ফিকশন ফ্রম নোবেল টু নো-বেইল পড়তে পারেন! এছাড়া আমার সিরিজ ব্লগ সাইন্স ফিকশন পড়ুন এই লিংক এ ক্লিক করে। ব্লগ ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Close