সাইন্স ফিকশন ফর “বাবু খাইছো, বাবু খাইছো?”
যেই বিল্ডিংয়ে আমার অফিস, সেটা শহরের সব থেকে ছোট বিল্ডিং। মাত্র ২০ হাজার তলার একটা ছোট্ট বিল্ডিং। আমি বসে আছি ১৭ হাজার তম ফ্লোর এর ৩১৪১ নাম্বার রুমে।
টেবিলের উপরে ২পা তুলে চেয়ারে হেলান দিয়ে হাই ভলিউমে গান শুনতেছি। নরমালি মুড খুব ভালো থাকলে বা খুব খারাপ থাকলে আমি মিউজিকে ডুবে যাই! তবে আজকের ব্যাপারটা আলাদা…
আজকে ইউটিউব নিউজফিডে ২১ বছর আগের একটা ভিডিও দেখে কেমন নস্টালজিক হয়ে গেলাম। ২০২০ সালে মহামারি ছিল। আমি উগান্ডার এক মিড লেভেল কলেজ এ আন্ডারগ্র্যাড করছিলাম।
আন্ডার গ্র্যাজুয়েট রিসার্চ স্কলারশিপ -বিমান খরচ সহ
মহামারির সময়ে জীবন কত কঠিন ছিল। আমাদের কলেজে ভাইভা ছিল। আমি সব পরিক্ষায় খারাপ করেছিলাম। এডাপ্ট করতে সম্পুর্ণ ব্যার্থ হয়েছিলাম!
অথচ ২১ বছরের ব্যাবধানে কত পরিবর্তন হয়েছে। বিশ্বের মস্ত বড় বিজ্ঞানিদের লিডার আমি 😉 এময়াইটি, স্ট্যানফোর্ডসহ অন্যান্য স্কুল গুলো স্বপ্ন দেখে আমাদের মত গবেষণা করার।
এত কিছুতে অবশ্য যত টা না আমার কৃতিত্ব তার থেকে বেশী হচ্ছে তার। তার বলতে একজন ম্যাডাম এর। ম্যাডাম আমার পাশের রুমেই বসেন, কাজ করেন নির্লস ভাবে। ম্যাডাম হচ্ছে বিউটি উইথ ব্রেইন।
গুগোল এর ডিরেক্টর পদ থেকে রিজাইন করে উগান্ডায় চলে আসেন শুধু উগান্ডার পরিবর্তন এর জন্যই। যখন গুগোল এর জব ছেড়ে দেয়ার ঘোষনা দেন, তখন মাইক্রোসফট, এপেল, ফেজবুক, আইবিএম রিতিমত প্রতিযোগিতায় নামে তাকে পাওয়ার জন্য। ম্যাডাম সব কিছু না করে উগান্ডায় আসেন। আর আমিও চলে আসি কারন তাকে ছাড়া আমার এক মুহুর্ত চলে না!
২১ বছর আগের উগান্ডা আর এখনকার উগান্ডার মধ্য আকাশ-বাতাস পার্থক্য। সে সব বলে শেষ করা যাবে না। কত কিছুই বদলে গেছে।
শুধু ম্যাডাম বদলায় নি! ২১ বছর আমার সাথে থেকে উগান্ডার পরিবর্তন সামনে থেকে লিড করেছে। গবেষনায় ১ নাম্বার বানিয়েছে দেশ কে। আধুনিক উগান্ডার ভিত্তি স্থাপন করেই শেষ করেন নি, নিজের হাতে গড়ে তুলেছেন।
কি-বোর্ড আছড়ে পড়ার শব্দ পাচ্ছি। হয়ত কেউ রেগে ছুড়ে মেরেছে! আমি রিএক্ট না করে গান দেখেই যাচ্ছি!
আমার রুমটা সেন্সর বেইজড রুম। ম্যাডাম প্রবেশ করলে সব কাজ অটোমেটিক বন্ধ হয়ে যায়। কারন, ম্যাডাম হচ্ছে আমার কাছে প্রথম প্রায়োরিটি। এবারও ব্যাতিক্রম হলো না।
জিরো টু হিরো হতে চাইলে, পড়তে হবে জিরো টু ওয়ান বই
সে রুমে ঢুকেই অগ্নি মুর্তি ধারন করে জিজ্ঞেস করল,”কি এমন কাজ করতেছ যে ডাকলে শুনতে পাও না। কি বোর্ড আছাড় দিলেও রিএক্ট করো না?”
গান শুনছিলাম! কোন রকমে উত্তর দিলাম। ম্যাডাম নিজে হেডফোনটা কানে লাগিয়ে গানটি রিজিউম করল! তার পর গানের সাথে কন্ঠ মিলিয়ে বলতে লাগল, “বাবু খাইছ? বাবু খাইছ?”