সিএসই পড়তে কি কম্পিউটার লাগে এবং ম্যাথ কেমন লাগে?

কম্পিউটার সাইন্স পড়তে চায় এমন ছেলে মেয়েদের অনেকেই আমাদের কাছে জানতে চায় যে কম্পিউটার সায়েন্সে আন্ডারগ্রাজুয়েট লেভেলে পড়াশোনা করার জন্য কিরকম কম্পিউটার লাগবে।

অথবা পার্সোনাল কম্পিউটার লাগবে কিনা। কম্পিউটার লাগলে কম্পিউটারের কনফিগারেশন কেমন হওয়া উচিত। আরেকটি প্রশ্ন আমাদের কাছে অনেকেই জানতে চায় সেটি হচ্ছে কম্পিউটার সাইন্সে পড়ার জন্য ম্যাথমেটিক্স স্কিলস প্রয়োজন অথবা যাদের ম্যাথ ফোবিয়া রয়েছে তাদের কম্পিউটার সাইন্সে পড়াশোনা করা উচিত কি না।

তো আজকের এই ভিডিওতে আমি এই দুটি প্রশ্নের উত্তর ব্যাখ্যা করব যে কম্পিউটার সাইন্সে পড়াকালীন সময়ে আপনার কেমন কম্পিউটার লাগবে, পার্সোনাল কম্পিউটার লাগবে কিনা এবং ম্যাথমেটিক্স এর সাথে কম্পিউটার সায়েন্সের রিলেশন কেমন।

প্রথমে চলুন দেখে নেই যে কম্পিউটার সাইন্সে আন্ডারগ্রাজুয়েট লেভেলে পড়াশোনা করার সময় আপনার কোথায় কোথায় কম্পিউটার দরকার হবে।

প্রথমত প্রত্যেক সেমিস্টারে আপনার কিছু প্রজেক্ট করতে হবে, কম্পিউটার সায়েন্স রিলেটেড। সেই প্রোজেক্টের জন্য আপনার একটি কম্পিউটার প্রয়োজন হবে।

সেকেন্ড হচ্ছে আপনি যদি পার্সোনালি কোন প্রজেক্ট ডেভলপ করতে চান। সেখানে কিন্তু আপনার কম্পিউটার দরকার হবে।

তার দরকার হবে হচ্ছে সিমুলেশন কোন টাইপের জন্য। যেমন আপনি মেশিন লার্নিং এর কোনো সিমুলেশন যদি আপনি করেন, তখন কিন্তু আপনার কম্পিউটার দরকার হবে।

চতুর্থ নাম্বারে কনটেস্ট প্রোগ্রামিং এবং প্রোগ্রামিং রিলেটেড কাজকর্ম করার জন্য আপনার কম্পিউটার দরকার হবে।

ফাইনাল ইয়ারে ইন্টার্ন এর  সময় যখন আপনি প্রজেক্ট করবেন তখন আপনার পার্সোনাল কম্পিউটার দরকার হবে।

আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে কম্পিউটার সাইন্সে পড়াকালীন সময়ে আপনার বেশ কিছু প্রেজেন্টেশন দিতে হবে, সেখানেও কিন্তু প্রেজেন্টেশন স্লাইড তৈরি করার জন্য কম্পিউটার  দরকার হবে।

যদি আপনার মডারেটর লেভেলের কোন একটি ল্যাপটপ অথবা ডেস্কটপ থাকে যার মাধ্যমে কিন্তু আপনি আন্ডারগ্রাজুয়েট লেভেলের বেশিরভাগ কাজই করে ফেলতে পারেন। যেমন সেমিস্টার প্রজেক্ট, পার্সোনাল প্রজেক্ট প্রেজেন্টেশন তৈরি করা এবং কনটেস্ট প্রোগ্রামিং এর কাজগুলো করে ফেলতে পারেন।

কিন্তু যখন আপনি সিমুলেশন কোন কাজের জন্য কম্পিউটার ব্যবহার করবেন অথবা আপনি ইন্টারনেট কম্পিউটার প্রজেক্ট এর জন্য ব্যবহার করবেন। তখন আপনার জন্য কিছু ভালো কনফিগারেশনের কম্পিউটার রিকোয়ার্ড হবে।

কারণ হচ্ছে আপনি যখন ইন্টার্ন এর প্রজেক্ট করবেন। সেই প্রজেক্টে তুলনামূলক বড় একটি প্রজেক্ট হবে। আর সিমুলেশনের কাজের জন্য আপনার বেশ কিছু প্রজেক্ট করতে হবে, যেখানে আপনার ভালো কনফিগারেশনের কম্পিউটার রিকোয়ার্ড করবে।

এখানে আপনি যদি একটা এক্সট্রা এসএসডি এবং র্যাম লাগিয়ে নেন তাহলে কিন্তু আপনার মডারেট লেভেলের কম্পিউটার দিও এই কাজগুলো চালিয়ে নিতে পারবেন।

তাহলে দেখা যাচ্ছে কম্পিউটার সাইন্সে পড়াকালীন সময়ে আপনি মডেলের একটি কম্পিউটার দিয়েই আপনার  আন্ডারগ্রাজুয়েট লেভেলের পড়াশোনা শেষ করতে পারছেন। আপনাকে কিন্তু হাই কনফিগারেশনের কোন কম্পিউটার  রিকোয়ার্ড হচ্ছে না।

এখানে লেবেলের কম্পিউটার বলতে বুঝাচ্ছি, ৬০-৭০ হাজার টাকার মধ্যে বাজারে যেসব কম্পিউটার  কিনতে পারছেন সেই কম্পিউটার গুলো।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে পার্সোনাল কম্পিউটার লাগবে কিনা?

পার্সোনাল কম্পিউটার কোনো শিক্ষার্থীর লাগবে কিনা এটি ডিপেন্ড করছে সেই শিক্ষার্থীর উপর। বেশিরভাগ ইউনিভার্সিটি তে কম্পিউটার ল্যাব থাকে, কম্পিউটার প্রাক্টিসিং ল্যাব থাকে  সেখান থেকে আপনি বেশিরভাগ কাজ করে ফেলতে পারবেন।

আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে কম্পিউটার সাইন্সে পড়াকালীন সময়ে আপনার ফ্রেন্ড দের কিন্তু কম্পিউটার থাকবে। সে ক্ষেত্রে যাদের ব্যক্তিগত কম্পিউটার থাকবে না তারা কিন্তু চাইলেও অন্যের কম্পিউটার থেকে কাজগুলো করিয়ে নিতে পারবেন।

যদি আপনার কোন পারসনাল কম্পিউটার অথবা ডেস্কটপ থাকে তাহলে কাজগুলো করার জন্য আপনার সহজ হবে। কারণ আপনি আপনার ল্যাবের কম্পিউটার অথবা ফ্রেন্ডের কম্পিউটার রাত্রেবেলা বাসায় নিয়ে আসতে পারবেন না। আর আমরা সবাই জানি কম্পিউটার সাইন্স  সহ যে কোনো শিক্ষার্থীর প্রডাক্টিভিটি সহ  সবচেয়ে ভালো সময় হচ্ছে পরীক্ষার আগের রাতের সময় টা।

আপনাদের মধ্যে যারা মনে করতেন কম্পিউটার সাইন্সে আন্ডারগ্রাজুয়েট লেভেলে পড়াকালীন সময়ে আপনার সুপার কম্পিউটার লাগবে অথবা অ্যাপেল কোম্পানির ম্যাকবুক লাগবে। আশা করি আপনাদের এই ভিডিওটি এই পর্যন্ত দেখার পর কনফিউশন দূর হয়ে যাবে।

 নাও লেটস টক অ্যাবাউট ম্যাথমেটিক্স।

কম্পিউটার সায়েন্স এ পড়াশোনা করার জন্য আপনার ম্যাথ এ কেমন স্কিলস দরকার হবে।  সিএসইতে আন্ডারগ্রাজুয়েট লেভেলে পড়াশোনা করার সময় আপনার চার থেকে পাঁচটি ম্যাথমেটিক্স কোর্স করতে হবে। এই  কোর্সগুলো পাস করার জন্য কিন্তু আপনার  ম্যাথ জানা লাগবে।

তবে এই কোডগুলো মূলত আপনি হাই স্কুল অথবা কলেজের ম্যাথ  করেছেন সেগুলোর উপর বেসড করে কিছুটা  অ্যাডভান্স ম্যাথমেটিক্স রয়েছে। সে ক্ষেত্রে আপনি যদি হাই স্কুল অথবা কলেজের ম্যাথ গুলো ঠিকঠাক বুঝতে পারেন, তাহলে কিন্তু এই কোর্সগুলোতে সহজে পাশ করতে পারবেন।

আর যদি আপনি হাই স্কুল কলেজ ফাঁকি দিয়ে আসেন, তারপরও যদি আপনি একটু চেষ্টা করেন তাহলে এই  কোর্স গুলোতে  পাস করা আপনার জন্য সহজ হবে।

আমাদের মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী রয়েছেন যারা মানবিক এবং বানিজ্য বিভাগ থেকে এসএসসি পাশ করার পরে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার মাধ্যমে আন্ডারগ্রাজুয়েট লেভেলে ভর্তি হয়।

তারা কিন্তু ঠিকঠাক মতো পাস করে যেতে পারে, যদিও তারা কলেজে ম্যাথমেটিক্স পড়ে আসেনি। সুতরাং আন্ডার  গ্রাজুয়েট লেভেল পাস করার জন্য  যদি আপনি একটু চেষ্টা করেন, যদি আপনার ম্যাথ ফোবিয়া না থাকে তাহলে পাস করে যেতে পারবেন।

নেক্সট হচ্ছে কনটেস্ট প্রোগ্রামিং এবং প্রোগ্রামিং রিলেটেড  কোর্সগুলো। প্রোগ্রামিং এবং প্রোগ্রামিং রিলেটেড কোর্সগুলোতে  ম্যাথমেটিক্স এর লজিক গুলো লাগবে, তবে এখানে আপনার যতটা না ম্যাথমেটিক্স স্কিলস লাগবে তার থেকে বেশি লাগবে কমন সেন্স।

আপনাকে লজিক্যালি প্রবলেম গুলো সমাধান করতে হবে। তাই যদি আপনার  ম্যাথে খুব ভালো স্কিলস নাও থাকে, তার পরেও প্রোগ্রামিং কোর্স গুলো ঠিকঠাক পাস করে যেতে পারবেন।

তবে কনটেস্ট প্রোগ্রামিংয়ের হারালে বলে যদি আপনি যেতে চান  তবে আপনার হাই ম্যাথমেটিক্যাল  স্কিলস দরকার হবে।

নেক্সট হচ্ছে আপনি যদি মেশিন লার্নিং ডেটা সাইন্স  এর মত টেকনোলজি নিয়ে কাজ করতে চান অথবা  রিসার্চ করেন, সেখানে কিন্তু আপনার ম্যাথমেটিক্স এর দরকার হবে।

ফাইনালি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানিগুলোতে আপনার ম্যাথ  দরকার হবে তবে যদি আপনি  বড় কোম্পানিগুলোতে জব না করেন তবে খুব একটা ম্যাথমেটিক্স এর দরকার হবে না।

ইউজুয়ালি মিড লেভেল এবং এন্ট্রি লেভেল কোম্পানিগুলোতে  আমরা রেগুলার বেসিসে কাজ করে থাকি যেখানে  ম্যাথমেটিক্স এর খুব একটা দরকার হয় না তবে  আপনি যদি বড় কোম্পানিতে স্পেশালি জায়ান্ট কোম্পানিতে তাকান সেখানে কিন্তু আপনার ম্যাথের হাই স্কিলস ডিমান্ড করবে।

তাই যদি আমি ইনশট সামারাইজ করে বলি। যাদের ম্যাথ ফোবিয়া রয়েছে। অর্থাৎ যারা  ম্যাথমেটিক্স দেখলেই প্রচন্ড ভয় পায়। মনে করে ম্যাথমেটিক্স তাদের জন্য নয় তাদেরকে উচিত হবে কম্পিউটার সাইন্সের সাবজেক্টগুলো কে  এভোয়েড করা।

ইঞ্জিনিয়ারিং এর বেশিরভাগ  সাবজেক্ট গুলোতেই ম্যাথমেটিক্স এর দরকার হবে একই সাথে কম্পিউটার সাইন্স ম্যাথমেটিক্স এর দরকার হবে। কম্পিউটার সাইন্সে আপনি যতবেশি আপার লেভেলে উঠবেন ততবেশি  ম্যাথমেটিক্যাল  স্কিলস রিকোয়ার্ড করবে।

তো এই ছিল আজকের ভিডিও। দেখা হবে পরের ভিডিওতে। ততক্ষণ পর্যন্ত ভাল থাকুন,সুস্থ থাকুন,এই প্রত্যাশায়।

0Shares
Previous post বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এর সময় যেসব বিবেচনা করা উচিৎ
Cyber Security Specialist Next post সাইবার সিকিউরিটি স্পেশালিস্ট এর ফিউচার কি?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Close

গালিব নোটস এর ইউটিউব ভিডিওঃ