মুল টাইটেলঃ চাকরী ছেড়ে যাওয়া কর্মীরা কি কোম্পানির শত্রু? স্টার্টআপ (Best start up in bangladesh) প্রবলেম ০১
এখন বাংলাদেশে দৈনিক গাদায় গাদায় স্টার্টআপ তৈরি হচ্ছে যাদের প্রায় সব গুলোই আবার ব্যার্থ হয়ে কিছুদিন এর মধ্য মুখ থুবরে পড়ছে। এর জন্য অনেক কারন আছে, পর্যাপ্ত মার্কেট রিসার্চ না করে কাজ শুরু করা, সিইও স্যার এর নিজেরই অন্য চাকরীতে জয়েন করা, সিইও নিজের সেলফ মোটিভেশন না থাকা, পর্যাপ্ত অর্থের যোগান না থাকা, ইন্টার্নাল ম্যানেজমেন্ট এর সমস্যা সহ অনেক কিছু। আজকের আর্টিকেল এ বলব, বাদ যাওয়া কর্মীদের স্টার্টআপ গুলো কিভাবে ট্রিট করে আর এতে তাদের কি ক্ষতি হচ্ছে! তবে সবার আগে চিন্তা করুন তো, বাদ যাওয়া কর্মীরা কি কোম্পানির শত্রু?
জয়েনিং এর আগেঃ
স্কিল্ড কর্মীরা সাধারনত, স্টার্টআপ কোম্পানি গুলোতে যুক্ত হতে চায় না, যদি না সেই স্টার্টআপ পাঠাও লেভেল এর হয়। এই যায়গা বেশীর ভাগ স্টার্টআপ সিইওরা একটা ট্রিক্স করে থাকে। প্রচুর গাল-গপ্প দিয়ে, নানান প্ল্যান দিয়ে, এটা দিব-ওটা দিব বলে, নানান বানোয়াট প্ল্যান বলে কর্মীদের কনভিন্স করে! মানুষ তো জব করেই, অর্থ-সিকিউরিটি এর জন্য! তাই বেশীর ভাগ সময় তারাও অনেক সময় রাজী হয়ে যায়। এখানে লক্ষ্যনীয়, স্টার্টআপ সিইও স্যার রা রেডি দক্ষ কর্মী হায়ার করতে মিথ্যা আর বানোয়াট তথ্যর দারস্থ হলেও, নিজের দক্ষতা আপগ্রেড এর ব্যাপারে কোনই স্টেপ নেয় না।
অদক্ষ কর্মী নিয়ে তাদের স্কিল্ড করে রেখে দেয়ার জন্য সেই স্কিল তাদের নেই আবার দক্ষ কর্মী ম্যানেজ করার দক্ষতাও নেই। আমাদের দেশের অধিকাংশ স্টার্টআপ সিইও এর কোন পরিচয় থাকে না। না হয় তারা সেলস পারসন, না হয় তারা ইঞ্জিনিয়ার, না হয় তারা ফিন্যান্স অফিসার। তাদের পরিচয় তারা সিইও, তাদের অনেক স্বপ্ন, অনেক টাকা তারা ইনকাম করতে যাচ্ছে, ব্লা ব্লা ব্লা!
সফটয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্টার্নশিপ পেতে মাত্র ৪টি স্টেপ!
কাজের ক্ষেত্রেঃ
জয়েনিং এর পর মুল নাটক শুরু হয় যেটার শেষ হয় চাকরী ছেড়ে দেয়ার পর। এত এত গাল গপ্প কিছুই বাস্তব দেখা যায় না, কাজ শুরুর পর। কাজের স্ট্রাকচার থাকে না, বেতনের নির্ধারন থাকে না, পেপার ওয়ার্ক তো কল্পনার বিষয়। কাজের ক্ষেত্রে এক ধাপ নয়, কয়েক ধাপ এগিয়ে! একটা প্রজেক্ট এর সব পার্ট এর কাজ করতে হবে একাই। নিজেই ডিজাইনার, ডেভেলপার, টেষ্টার, সাথে মার্কেটারও। ধরেন ঢুকলেন ওয়েব এ, কিন্ত কোম্পানির মোবাইল এপ এর কাজ আপনাকে ধরায় দিবে। টেকনিক্যাল কাজ তাও শিখে করা যায়, কিন্তু যখন একজন ডেভেলপার কে মার্কেটিং এর কাজ করা লাগে, বা একজন মার্কেটার কে ডিজাইন এর কাজ করা লাগে তখন কি হয় চিন্তা করেন।
এ সব ব্যাপারে কিছু বলা যাবে না! শিখে করবেন কিন্তু শেখার জন্য আলাদা টাইম দেয়া হবে না, আলাদা অর্থ! ভাই, বেতন তো আগে পান! টেকনিক্যাল লাইন এর কাজ গুলো মুভ করে করা গেলেও, অন্য লাইনের গুলো হয় না। আরেকটা সমস্যা হচ্ছে, মাল্টিপল কাজ এক সাথে দেয়া থাকে। একটা শেষ না হতেই আরেকটার ডেডলাইন চলে আসে।
সিইও হওয়া যায় কিভাবে জানতে চান? ৩ং কারন জানলে অবাক হবেন!
যদি বলেন, সব যায়গা কাজের চাপ থাকে, তাহলে শুনে রাখেন, বড় কোম্পানি গুলোতে ডিজাইনার দের দিয়ে ডেভেলপমেন্ট করায় না, বা ডেভেলপার দিয়ে মার্কেটিং! মুলত, স্টার্টআপ সিইও স্যারদের তো নিজের কোন স্কিলস থাকে না, তারা না জানে কাজ, না জানে ম্যানেজমেন্ট। আর সমস্যা মুলত এখানেই হয়।
ফাইনালি, এক সময় কর্মীরা বুঝতে পারে, এই স্টার্টআপ (Best start up in bangladesh) তাদের জন্য না। এখানে থাকলে ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট দুরের কথা, খেয়ে পড়ে বেচে থাকাই দায় হয়ে যাবে। তার পর এক সময় ফাইনাল ডিসিশন নিয়ে নেয় আর তখন শুরু হয় নতুন নাটক!
পেপার ওয়ার্ক কামস নাউঃ
জয়েনিং থেকে শুরু করে রিজাইন এর কথা বলার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত কোন রকম পেপার এর অস্তিত্ব না থাকলেও, রিজাইন এর কথা বলার সাথে সাথে গায়েবি ভাবে পেপার চলে আসে। ডিল অনুযায়ী এখন জব ছাড়া যাবে না, অমুক দিন বলতে হবে, এত তারিখের মধ্য বলা লাগবে আরও কত কি। জেল থেকে বের হওয়ার অভিজ্ঞতা যদিও নেই, তবে আমার মনে হয় জেল থেকে বের হতেও এত পেপার ওয়ার্ক করা লাগে না।
রিজাইন এর কথা বলার সাথে সাথেই সিইও স্যারদের ব্যাবহার আমুল পরিবর্তন হয়ে যায়। গতকাল যে ভাই ছিল আজ সে অচেনা একজন ব্যাক্তি হয়ে যায়। মেসেজ সিন করেন না, কাজের কথার বাইরে আর কোন কথা নেই, কোন আইডিয়াতে এপ্রিশিয়েট নেই। কর্মী তখন নিজের কোম্পানিতে নিজেকে রোহিংগা মনে করা শুরু করেন। কাদের জন্য দিন রাত কাজ করেছেন সেটাও ভাবা শুরু করেন!
পেপারে পেমেন্ট কিন্তু বাস্তবেঃ
কাজ ছেড়ে দিলে কর্মীরা কোন বোনাস, প্রজেক্ট প্রফিট এর জন্য বিবেচিত হবেন না। শেষ মাসের স্যালারির বাইরে কোন টাকা পাবেন না। এমন কি রিজাইন দেয়ার আগে, কোম্পানির জন্য খরচ করা টাকাও পাবেন না। মালিক স্যার কে এসব নিয়ে মেসেজ দিলে, সেই মেসেজ কখনই সিন হবে না। উত্তর আবার কী!!
কাগজে কলমে লেখা থাকবে কর্মীর সব বেতন ক্লেয়ার, কিন্তু বাস্তবে লাস্ট মাসের স্যালারি দেয়া হবে না। পরে নিয়েন বলেই শেষ! তার পর আগের সাইকেল, মেসেজ দিলে সেটা সিন করা হবে না।
কর্মীর বিদায়ঃ
বিদায় বেলা কোন ফেয়ারওয়েল দুরের কথা, কর্মীর নিজেকে সবাইকে গিয়ে বলতে হবে, আজ তার কাজ শেষ। ক্যাচুয়াল কথা বার্তা ইত্যাদি ইত্যাদি।
রিমোট কর্মীঃ
বাংলাদেশে এখন আরেকটা বাজে জিনিশ শুরু হয়েছে, রিমোট কর্মী। একটা ফেজবুক পেজ খুলে সিইও বনে যাওয়া মানুষ গুল এই কাজ বেশী করে থাকেন। রিমোট কর্মীদের তো কোন ইকুয়েপমেন্ট, লাঞ্চ দেয়া হয় না। আর বিদায়ের বেলাও সেইম কাহিনী হয়ে থাকে।
রিকমেন্ডেশন লেটারঃ
কিছুদিন আগে দেখেছি, বাংলাদেশের একটা স্টার্টআপ (Best start up in bangladesh) তার সাবেক কর্মীর রিকমেন্ডেশন লেটার বাজে ভাবে দিয়েছে। ঐ ১টা সামনে এসেছে বলে দেখেছি, বাকী গুলো আড়ালে থেকে যায়। আমি খুব কাছের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, কাজের সার্টিফিকেট, অভিজ্ঞতা, এনওসি, রেকমেন্ড লিখতে প্রচন্ড অনিহা। ব্যাপারটা এমন যে, কর্মী চলে গেছেন মানেই, সে আমাদের শত্রু এখন থেকে।
কি ক্ষতি হচ্ছে এতে স্টার্টআপ কোম্পানি গুলোরঃ
স্টার্টআপ সিইও স্যার রা দুররের চিন্তা করেন না বলেই, এক সময় মুখ থুবড়ে পরেন! পাচ বছর স্টার্টআপ চালানোর পরও অফিস থাকে, বাড়ির একটা আলাদা ঘর অথবা ভার্চুইয়াল ফেজবুক পেজ। একজন কর্মীর ভালো পরিবেশ দিতে না পারলেও শেষ টা অন্তত ভালো ভাবে করা যায়।
যখন আপনারা, সিইও স্যার রা এরকম করেন তখন ভবিশ্বতের রাস্তা নিজেই বন্ধ করে দিচ্ছেন। দক্ষ কর্মীরা কিন্তু কোথাও না কোথাও জব ম্যানেজ করে ফেলে। আর বড় প্লাটফর্ম এর কাজের ফলে তাদের কাছে অনেক সুযোগ আসে। প্রজেক্ট এর সুযোগ আসলে বিদায়ের অভিজ্ঞতার কথা মনে করে আর আপনাদের কাছে সেগুলা রেফার করেন না।
মেশিন লার্নিং নিয়ে কথা না বলা ফ্রেন্ডদের ইমিডিয়েটলি বদলে ফেলুন!
বড় কোম্পানিতে চাকরী করলে, অনেক জুনিয়র রা কিন্তু নক দেন। সবাই কে তো আর নিজের কোম্পা্নিতে নেয়া সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে ভালো এবং দক্ষ জুনিওয়রদের কে আপনার স্টার্টআপ এ রেফার করেন না। যার মানে সোজা কথায়, না কোন প্জেক্ট এ রেফার করে, না কোন কর্মীদের রেফার করে। আর আইডিয়া শেয়ারিং তো আরও দুরের।
তাহলে লস টা কার হচ্ছে, স্টার্টআপ এর নাকী দক্ষ কর্মীদের?
এই আর্টিকেল লেখার আগে, অনেক গুলো স্টার্টআপ (Best start up in bangladesh) কর্মী, ইঞ্জিনিয়ার, সিইও এর সাথে কথা বলে লেখা হয়েছে। তবে, যেহেতু এটা সত্য ঘটনা, তাই অনেক স্টার্টআপ সিইও এর খুব কষ্ট লাগবে। সত্য মেনে নিতে তো কষ্ট হবেই, তাই না?