ওয়ার্লড ওয়াইড ফেমাস টেক কোম্পানি গুলোর মধ্য অনেক কোম্পানি, ইঞ্জিনিয়ার হায়ারিং এর ক্ষেত্রে এডুকেশননাল ব্যারিয়ার তুলে দিয়েছেন। কারন, সবাই এখন বুঝেন, ডিগ্রি নয়, স্কিলস ই মুল ব্যাপার। গুগল, ফেজবুক এর মত কোম্পানি গুলো এখন ডিগ্রি ছাড়াই কর্মী হায়ার করে থাকেন নিয়মিত। তাই বলে, কেউ স্টাডি বাদ দিয়েন না, স্টাডি বা ডিগ্রী থাকলে সব রাস্তা খোলা, আর ডিগ্রী না থাকলে অনেক রাস্তাই বন্ধ হয়ে যাবে। বাংলাদেশের অনেক টেক কোম্পানি (best software company in dhaka) কর্মী রিক্রুট এর সময় শিক্ষাগত যোগ্যতার ব্যারিয়ার তুলে দিয়েছেন।
অনেকে এই তথ্য না জানার কারনে, এ সকল যায়গা সিভি ড্রপ করেন না। আজকের আর্টিকেল এ সব কোম্পা্নি নিয়েই। তবে শুরুতেই বলে রাখি, এ সব কোম্পানি শিক্ষাগত যোগতা শিথিল করেছেন মানেই যে শিক্ষা লাগবেই না বা ডিগ্রি থাকলে আবেদন করা যাবে না, এমন নয় কিন্তু। যদি স্কিল থাকে, তাহলে আবেদন করা যাবে, আর না থাকলেও আবেদন করা যাবে যদিও স্কিলস ছাড়া সিলেক্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
১। জুমশেপার(JoomShaper): জুমশেপার হচ্ছে বাংলাদেশি আইকনিক কোম্পানি। বাংলাদেশ থেকে যে কয়েকটি কোম্পানি বিশ্বের দরবারে লিড করছে তাদের মধ্য জুমশেপার অন্যতম। জুমলা থিম, এক্সটেনশন, ওয়ার্ডপ্রেস থিম, প্লাগিন, ওয়েব এপ্লিকেশন জাতীয় সফটয়্যার ডেভেলপ করে থাকে জুমশেপার। এখন পর্যন্ত জুমশেপার থেকে ডাউনলোড করা ওয়েবসাইট এর সংখ্যা ৪.৫ মিলিয়নেরও বেশি । বলা হয়ে থাকে বিশ্বের প্রথম চারটি জুমলা কোম্পানির ১টি তারা। জুমলার বাইরে থিমিয়াম, থিমহান্ট, আইকোফন্ট এর প্রজেক্ট গুলো তাদের মালিকানায় পরিচালিত হয়। জুমলা, ওয়ার্ডপ্রেস সংক্রান্ত ইভেন্ট গুলোতে জুমশেপার নিয়মিত স্পন্সার করে থাকে।
জুমশেপার কর্মী হায়ারিং এ এডুকেশনাল ব্যারিয়ার তুলে দিয়েছেন। তাদের জব পোস্ট গুলোতে সুন্দর করে লেখা থাকে এ বিষয়ে। স্কিল ভালো হলে, টিম এর সাথে ফিট হলে যে কেউ এই কোম্পানিতে চাকরী করতে পারেন।
সফটয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্টার্নশিপ পেতে মাত্র ৪টি স্টেপ!
২। উইডেভস(weDevs): বাংলাদেশের আরেকটি আইকোনিক কোম্পা্নি হচ্ছে ইউডেভস! ইউডেভস ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কিত সার্ভিস এর জন্য পুরো ওয়ার্লড এ বিখ্যাত। দোকান নামের মাল্টিভেন্ডর ইকমার্স প্লাগিন ইন্টারন্যাশনাল কয়েক মিলিয়ন ইউজার ব্যাবহার করে থাকে। ইউডেভস এর রেজিস্টারড ইউজার ৯০ হাজার এর বেশি। তাদের জনপ্রিয় প্রডাক্ট এর মধ্য ইউইয়ারপি, ইউফোরাম, হ্যাপি-এডওয়ান অন্যতম। উইডেভসও নিয়মিত বিভিন্ন ইভেন্ট এ স্পন্সার করে থাকে। বাংলাদেশি ডেভেলপার এবং ইঞ্জিনিয়ার ছাড়াও, মার্কেটার, কন্টেন্ট রাইটার এর স্বপ্নের কোম্পানি উইডেভস।
উইডেভস কর্মী হায়ার করার ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যগ্যতা শিথিল করেছেন। তারা চায়, স্কিলড এবং ক্রিয়েটিভ কর্মী রা তাদের সাথে কাজ করুক।
সিইও হওয়া যায় কিভাবে জানতে চান? ৩ং কারন জানলে অবাক হবেন!
৩। টেক কেয়ার(TechCare): টেক কেয়ার হচ্ছে বাংলাদেশী এওয়ার্ড উইনিং সফটয়্যার (best software company in dhaka) কোম্পানি। নতুন কিন্তু এমিউজিং অনেক আইডিয়া নিয়ে, ইতিমধ্য টেক কেয়ার লোকাল যায়ান্ট হওয়ার রাস্তায়। মুলত ওয়েব এবং মোবাইল এপ ডিজাইন, ডেভেলপমেন্ট এর সার্ভিস দিয়ে থাকে। বাংলাদেশ এবং ইন্টারন্যাশনাল অনেক গুল যায়ান্ট এপস টেক কেয়ার এর বানানো। সুলেহীন সাগর, রুয়েট থেকে পাশ করে ২০১২ এর দিকে এই কোম্পানি শুরু করেন এবং বর্তমানে তিনিই সিইও হিসাবে কর্মরত আছেন। কর্মী সংখাতে অনেক বড় না হলেও, কাজের পরিবেশ, পারিশ্রমীক, জব সিকিউরিটি, লার্নিং এনভারনমেন্ট এ এই কোম্পানি অনেক এগিয়ে গেছেন!
টেক কেয়ার এর কর্মী হায়ার এর পেজ এ, এডুকেশনার সেকশনে বড় বড় করে লেখা থাকে, There is no binding in educational qualification, we care about skill and will. সোজা কথায়, স্কিল ই সব কিছু। ভাল স্কিল থাকলে এডুকেশন সমস্যা নয়। এখানে অনেক কর্মী আছেন যারা গ্রাজুয়েশন লাইফ শুরু করার আগেই, চাকরী শুরু করে দিয়েছেন।
মেশিন লার্নিং নিয়ে কথা না বলা ফ্রেন্ডদের ইমিডিয়েটলি বদলে ফেলুন!
৪। ডায়ান্ট্রি (Daintre Inc): বাংলাদেশি আরেকটি অন্যতম যায়ান্ট কোম্পানি হচ্ছে ডায়ান্ট্রি। এই কোম্পানি ওয়ার্লড ওয়াইড মোবাইল এবং ওয়েব এপ, মেশিন লার্নিং, ডেটা এনালাইসিস এর সার্ভিস গুলো প্রভাইড করে থাকে। ইন্টারন্যাশনাল ক্লায়েন্ট বেশী থাকায় এবং বৈশ্বিক মার্কেট টার্গেট করে কাজ করায় লোকালি তেমন পরিচিত নয় তারা। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ২০১৯ সালে শুরু করে এরই মধ্য ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে এটি। বাংলাদেশে সার্ভিস না দিলেও, বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ারদের কাজে দারুন প্রিয় হচ্ছে এই কোম্পানি। মুলত কোম্পানির পলিসি, লার্নিং এনভার্নমেন্ট এর কারনে তারা জনপ্রিয় হয়েছে।
এই কোম্পানিতে কর্মীরা সপ্তাহে ১দিন শর্তসাপেক্ষে নিজের আইডিয়ার উপর কাজ করতে পারে যেটা সমসাময়িক অন্য কোম্পানিতে কল্পনাও করা যায় না। ডায়ান্ট্রির, তাদের কর্মীদের কে এসেট মনে করে থাকে। এই কোম্পানির শতভাগ কর্মী বাংলাদেশি এবং এখান কার রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট টিম ওয়ার্ল্ড এর অন্যতম সেরা রিসার্চ টিম। বিদেশী এবং বাংলাদেশী নানান ইভেন্ট এ ডায়ান্ট্রি নিয়মিত স্পনসার করে থাকে।
ডায়ান্ট্রি শুধু মাত্র ডেভেলপমেন্ট টিম এর কাজের ক্ষেত্রে এডুকেশনাল ব্যারিয়ার তুলে দিয়েছে। জব ভ্যাকেন্সি গুলো তে দেখা যায়, ইঞ্জিনিয়ারিং টিম এ কর্মী খোজার সময়, তারা এডুকেশনাল রিকোয়ারমেন্ট ন্যাগোশিয়েটেবল লেখা থাকে অভিজ্ঞ কর্মীদের জন্য! রিসার্চ টিম এবং মার্কেটিং টিম এর কর্মীদের ক্ষেত্রে আবার এডুকেশনাল রিকোয়ারমেন্টস দেয়া থাকে। সে হিসাবে পুরোপুরি না হলেও, আংশিক ভাবে ডায়ান্ট্রি ডিগ্রী ব্যারিয়ার তুলে দিয়েছে।
চাকরী ছেড়ে যাওয়া কর্মীরা কি স্টার্টআপ কোম্পানির এনিমি?
৫। হ্যাসটেক(HasTech): ৪৫ জন এর বিশাল টিম নিয়ে কাজ করে বিশ্ব দরবারে লিড করা আরেকটি কোম্পানি (best software company in dhaka) হচ্ছে হ্যাসটেক। ওয়ার্ডপ্রেস, সোপিফাই এর সার্ভিস, থিম ডিজাইন, ডেভেলপ করে থাকে এই কোম্পানিটি। থিমফরেস্ট কেন্দ্রীক সার্ভিস দিয়ে, বাংলাদেশের অন্যতম সেরা অবস্থায় আছে তারা। হ্যাসটেক কর্মী হায়ার করার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা বিবেচনা করা হয় না। দেখা হয় তাদের স্কিল্ড। আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে এখানে হায়ারিং প্রসেস টা অন্য কোম্পানি থেকে আলাদা। কোম্পানির মালিক চায়, বেকার দের কাজের ব্যাবস্থা করে দিতে, শিক্ষিত জনগোশঠী কে নিয়ে কাজ করতে।
৬। গ্রিনসফট(Greensoft) : বাংলাদেশী ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি গ্রিনসফট মুলত ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কিত সার্ভিস যেমন, ওয়েব সাইট ডিজান, ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব এপ ডেভেলপমেন্ট, প্লাগিন ডেভেলপমেন্ট করে থাকে। ডেডিকেটেড ওয়ার্ডপ্রেস সার্ভিস এর সাথে কোয়ালিটি ইনশুউর করার কারনে, এই কোম্পানি দ্রুত জনপ্রিয়তা পাওয়া শুরু করেছে। মুলত বিদেশী সার্ভিস দিয়ে থাকে বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে। কর্মীদের ট্রেইন-আপ, কাজের ফ্ল্যাক্সিবিলিটি, ফিকিউর কর্ম পরিবেশ এর কারনে গ্রিনসফট বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে অন্যতম টার্গেটেড কোম্পানি। লোকাল ইভেন্ট এ গ্রিনসফট কে দেখা না গেলেও, ইন্টারন্যাশনাল ইভেন্ট গুলোতে নিয়মিত দেখা যায় তাদের।
যে কারনে কম্পিউটার সাইন্স এ ভর্তি হওয়া উচিৎ নয় – পার্ট১
কর্মী হায়ার করার ক্ষেত্রে এই কোম্পানি, এডুকেশনাল ব্যারিয়ার সম্পু্র্ন তুলে দিয়েছে। ক্যারিয়ার পেইজ এ স্পস্ট করে লেখা থাকে, এডুকেশন ডিগ্রি, সিজিপিএ বা ট্রেইনিং নয়, আমরা চাই যারা এনার্জিক, ইনোভেটিভ আর উদ্যোমী। নতুন একটি কোম্পা্নি হিসাবে, এভাবে হায়ার করার এটাই প্রথম উদাহরন বাংলাদেশে।
এই আর্টিকেল এ মুলত, লোকালি যায়ান্ট কোম্পানি, যারা বাংলাদেশের ইঞ্জিনিয়ার হায়ার করেন, তাদের কে বিবেচনা করা হয়েছে। আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে, সফটয়্যার কোম্পানির বাইরে অন্য কোম্পা্নি বিবেচনা করা হয় নি। এর জন্য পাঠাও রাইডস এর মত বড় কোম্পানির যায়গা হয় নি এই লিষ্ট এ। উল্লেখ্য, স্কিল্ড ইঞ্জিনিয়ার হলে, পাঠাও তে ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে যোগ দেয়া যায়। আবার, অনেক স্টার্ট-আপ কোম্পা্নি আছে, যাদের কে আমরা চিনি না, তাই তাদের ব্যাপারে লেখা সম্ভব হয় নি।
ফাইনালি, ডিগ্রি ছাড়া মানেই অশিক্ষিত এমন কিন্তু নয় কোনভাবেই। মুলত, যদি প্রাতিষ্ঠানিক ব্যারিয়ার তুলে দিতেই কোম্পানি (best software company in dhaka) গুলো এই সিস্টেম শুরু করেছেন। যাতে করে ঢাকা ইউনিভার্সিটির সেরা একজন যেমন সিভি জমা দেয়, সাথে সাথে বেসরকারী ভার্সিটির স্টুডেন্ট রাও সিভি জমা দিতে সাহস পায়। এই কোম্পা্নি গুলোতে স্কিল, বিহেবিয়ার, টিমওয়ার্ক, ইনোভেটিভ চিন্তা ভাবনাই সব কিছু। ক্রিয়েটিভিটি থাকলে আগানো যাবে এখানে সহজেই। আর, যদি কেউ কোন কারনে ডিগ্রী শেষ নাও করে, তাও দরজা খোলা থাকছে তাদের জন্য।
2 thoughts on “ডিগ্রি ছাড়াই চাকরী করা যাবে যে সব সফটয়্যার কোম্পানিতে!”