আমরা নিয়মিত একটা অভিযোগ শুনি, বাংলাদেশী কোম্পানি গুলোর সিইও (How To Become A CEO In Bangladesh) বা ম্যানেজিং লেভেল এর মানুষ জন সব বিদেশী এবং তারাই কোম্পানি গুলো নিয়ন্ত্রন করে থাকে।

অভিযোগ পুরোপুরি সত্য এবং বিদেশী সিইও সাহেব রা বিপুল পরিমান অর্থ নিয়ে যাচ্ছে। এর পাশা পাশি তারা নিয়োগ, প্রমোশন এর ক্ষেত্রেও হস্তক্ষেপ, পার্সিয়ালিটি করছেন। কিন্তু এর কারন কি? আর সমাধান কি?

বাংলাদেশের ৪৮% শিক্ষিত মানুষ বেকার। চিন্তা করতে পারেন। যেখানে শিক্ষিত মানুষদের নিজেদের পরিবার, সমাজ আর দেশের মানুষের পাশে দাড়ানোর কথা ছিল, সেখানে তারা এখন সবার বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আমি আসাদুল্লাহ গালিব, এই ব্লগের লেখক। এই ব্লগের সমস্ত লেখা কপিরাইট মুক্ত। চাইলে যে কোন যায়গা শেয়ার করতে পারেন। এমন কি নিজের নামেও চালিয়ে দিতে পারেন। আমার মূল উদ্দেশ্য তরুনদের সচেতন করা, ফেইম পাওয়া নয়। একটি শেয়ার, অনেক তরুনকে সচেতন করতে সহায়তা করবে। আমার সাথে ফেজবুকে যোগাযোগ করতে পারেন অথবা ইমেইল করতে পারেন।

বেসরকারী কোম্পানির যারা ইনভেস্টর বা ফাউন্ডার আছেন, তারা চায় যেন তাদের অর্থ ব্যাবহার করে কেউ প্রফিট জেনারেট করে দেন। কিন্তু এক্ষেত্রে যদি আমরা বাংলাদেশীদের নিয়োগ দেই, তাহলে বেশ কিছু সমস্যা দেখা যায়।

যে সমস্যা গুলো এভয়েড করার জন্য বা সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য, কোম্পানির মালিক পক্ষ ফরেন অফিসার হায়ার করে থাকে। বিশেষ করে, পাশের দেশ থেকে প্রচুর লোকজন এখন আমাদের দেশে কাজ করেন।


১। দক্ষতার অভাবঃ এ কথা হয়ত ইউথদের অনেকে শুনে থাকেন যে, আমাদের ইউথদের কোয়ালিটির অভাব কিন্তু এর পর কি হবে বা কিভাবে সমাধান হবে সেটা নিয়ে কেউ বলে না।

আর এটা হলোই বা কিভাবে সেটা তো অনেকে বুঝেই না। বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স-মাস্টার্স পড়ার সময় শিক্ষার্থীদের অনেক এক্সট্রা কারিকুলার এবং কো-কারিকুলার এক্টিভিটি করা উচিৎ। যেমন, আইডিয়া কম্পিটিশন, প্রোগ্রামিং, প্রজেক্ট, মার্কেটিং ইত্যাদি।

কিন্তু, আমাদের শিক্ষার্থীরা রেজাল্ট কে গুরুত্ব দিয়ে শুধু রেজাল্ট কেন্দ্রীক লেখা-পড়া করে থাকেন। এতে করে দেখা যায়, তাদের লেখা-পড়া তে অনেক ঘার্তী থাকে। আর অন্য এক্টিভিটি থাকে শুন্যর কোঠায়।

কিন্তু, অন্যদেশের শিক্ষার্থীরা অনার্স বা মাস্টার্স এর সময় অনেক একটিভিটি, ক্লাব, কম্পিটিশন এর সাথে যুক্ত থাকেন। যে কারনে দেখা যায় যে, তাদের শিক্ষা জীবন শেষ হওয়ার সাথে সাথে তারা পরিপুর্ন কর্মী হিসাবে গড়ে উঠে এবং কোন দারিত্ব দিলে, সঠিক ভাবে পালন করতে সক্ষম হয়।

কোম্পানির ফাউন্ডার রা কিন্তু আমাদের অদক্ষ গ্রাজুয়েট নিয়ে, দক্ষ কর্মী বানানোর থেকে সরাসরি দক্ষ কর্মী হায়ার করেন। এখানেই, আমরা পিছিয়ে পড়ি।

যদি আর্টিকেল পড়তে ভালো না লাগে, তাহলে গালিব নোটস চ্যানেলে এই সম্পর্কিত ভিডিওটি দেখতে পারেন।

কেন আর কিভাবে আপনি হবেন নেক্সট সিইও সেটা নিয়ে ভিডিও -গালিব নোটস

২। দুর্বল কমিউনিকেশন দক্ষতাঃ যে কোন কোম্পানির এডমিনেস্ট্রেশন লেভেল এর চাকরী গুলো সরাসরি সব সাইট বা ক্যারিয়ার পেজে দেয়া হয় না। অলমোস্ট সব সময়, এই জব গুলো ব্যাক্তিগত কমিউনিকেশন আর রেফারেল থেকে হায়ার করা হয়।

কিন্তু, কমিউনিকেশন এর দিক দিয়ে আমদের গ্রাজুয়েটরা কিন্তু অনেক অনেক পিছিয়ে। এ কারনে, ফরেন রা যখন এ সব জব বাগিয়ে নিচ্ছে আমরা তখন শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি।


৩। মানুষিক দক্ষতার অভাবঃ যদি লোকাল কোম্পানির দিকে তাকান, কয়টা কোম্পা্নি ভালো করছে? যারা ভালো করছে না, তাদের সমস্যা কিন্ত প্রডাক্ট বা আইডিয়া তে না। সমস্যা হচ্ছে ম্যানেজমেন্ট এ।

আমাদের গ্রাজুয়েটদের যদি উচু পদে নিয়োগ দেয়া হয়, তারা প্রথমে যেটা করে, হায়ারিং এ ব্যাক্তিগত কাছের লোকজন কে হায়ার করে। এখন, রেফারেল থেকে হায়ার করা টা সমস্যা না, সমস্যা হচ্ছে, তারা যাদের হায়ার করে তারা বেশীর ভাগ অদক্ষ কর্মী।

শুধু মাত্র ব্যাক্তিগত ক্ষমতা বলেই তাদের হায়ার করা হয়। এতে করে কোম্পানির প্রডাকশন কমে যায় স্বাভাবিক ভাবেই।

এর পর যেটা করে, লোকাল সিইও (How To Become A CEO In Bangladesh) রা কোম্পানির কর্মীদের সাথে খুব ক্লোজ হয়ে যায়। ভাই-ব্রাদার বা আরও অনেক কিছু বানিয়ে ফেলে। ফ্রেন্ডলি থাকা টা সমস্যা না, সমস্যা হচ্ছে, প্রডাকশনের কারও কারও সাথে সিইও এর ক্লোজ সম্পর্ক প্রডাকশন কমিয়ে দেয়।

একদিকে অদক্ষ কর্মীর কারনে প্রডাকশন কমে যাওয়া, আরেক দিকে বেশী ফ্ল্যাক্সিবল হয়ে প্রডাকশন কমিয়ে ফেলার কারনে, কোম্পানির গ্রোথ কমে যায়, রেভিনিউ কমে যায় এবং কর্মীদের বেতন, বোনাস দেয়া অসম্ভব হয়ে পরে। এক সময়, সম্পুর্ন কোম্পানির ইকোনমিক ব্যাবস্থা ভেজ্ঞে পরে।


বিদেশী সিইও রা কিন্তু সব যায়গা প্রফেশনালিটি মেইনটেইন করে চলে। কর্মীদের সাথে রুর আচরন করে, অতিরিক্ত চাপ দিয়ে কাজ করাতে হবে এমন না, শুধু মনে রাখা লাগবে, প্রফেশনাল যায়গা প্রফেশনালিটি বজায় রাখা লাগবে। এখানেই, আমাদের গ্রাজুয়েটদের বড় সমস্যা এবং যে কারনে, ফাউন্ডার রা বিদেশীদের নিয়োগ দিয়ে থাকে।

এই সমস্যাগুলো সমাধান না করে কোন ভাবেই আগানো যাবে না। এই সব যায়গা উন্নতি না করে আমরা যতই অন্যদের দোষ দেই, লাভের লাভ কিছু হবে না। তরুন শিক্ষার্থীদের এ সব যায়গা নিয়ে ভাবতে হবে, সমাধানে কাজ করতে হবে, স্কিলস গ্যাদার করা লাগবে। এভাবে সবাই কাজ করে গেলে এক সময় আস্তে আস্তে পরিবর্তন শুরু হবে, আমরা ভালো করতে পারব।


আমাদের দেশের লোকাল অনেক সিইও (How To Become A CEO In Bangladesh) কিন্তু ভালো করছেন, তবে সেটা হাতে গোনা কয়েকজন। আর যারা ভালো করছেন তারা কিভাবে করছেন সেটা নয়, চিন্তা করুন কিভাবে নিজে ভালো করবেন।

তরুনদের সামর্থ আছে কিন্তু গাইডলাইন এর অভাব অনেক। সবাই আমরা শুধু অভিযোগ করি, একের দোষ অন্যর কাধে চাপাই, ভার্সিটির দোষ দেই কিন্তু সমাধান কি সেটা নিয়ে আলোচনা করি নাহ।


0Shares
cse subject review in bangla Next post যে কারনে কম্পিউটার সাইন্স এ ভর্তি হওয়া উচিৎ নয় – পার্ট১

13 thoughts on “সিইও হতে চান? বাংলাদেশীরা কেন সিইও হতে পারে না?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Close

গালিব নোটস এর ইউটিউব ভিডিওঃ