কম্পিউটার সাইন্স এর বেশির ভাগ শিক্ষার্থী একটা বিষয় নিয়ে কনফিউশন থাকে যে তারা কি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং নাকি নেটওয়ার্কিং মেজর নিয়ে পড়াশোনা করবেন।

বিশেষ করে থার্ড ইয়ার ফোরথ ইয়ার অথবা ইন্টার্নশিপের স্টুডেন্টরা  সবচেয়ে বেশি কনফিউজ থাকে। অনেক স্টুডেন্ট আমাকে জিজ্ঞাসা করেছেন যে তাদেরকে আসলে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং নাকি নেটওয়ার্কিং নিয়ে পড়াশোনা করা উচিত।

ইন্টার্নশিপ এ তাদের কোন ক্যাটাগরি সিলেক্ট করা উচিত?

দেশে কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং এমনভাবে শেখানো হয় যে মনে হয় যে কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং কোনো প্রোগ্রাম নেই। যে কারণে অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে যারা কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং ইন্টারেস্টেড হয়।

কোন বিষয়ে আপনার সিলেক্ট করা উচিত, কোন ক্যাটাগরিতে আপনার ইন্টার্নশিপ করা উচিত অথবা ক্যারিয়ারে আপনি কোন দিকে যাবেন সেই সিদ্ধান্ত কিন্তু আপনার নিজের নিতে হবে।

    আমি এই ব্লগ থেকে কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং এবং সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর মধ্যে একটি কম্পারেটিভ  ডিসকাশন করব যেটি আপনার ডিসিশন মেকিং এর সহায়তা করতে পারে।

এই ব্লগ টিতে আমি কথা বলব “দেশের বর্তমানে  সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ কি কি কাজের সুযোগ রয়েছে কোন কাজের চাহিদা কেমন এবং কোন কাজে সেলারি কেমন হতে পারে সর্বশেষ আমি কথা বলব আমার পার্সোনাল রিকমেন্ডেশন নিয়ে”

আশাকরি এই ভিডিওটি আপনার  ডিসিশন মেকিং অনেক বেশি সহায়তা করবে।

চলুন মুল ব্লগ  শুরু করা যাকঃ

তবে মুল ব্লগ শুরু করার আগে অনেকে রয়েছেন কম্পিউটার সায়েন্সে ভর্তি হতে চান অথবা কম্পিউটার সায়েন্স এ পড়াশোনা করতে চান অথবা কম্পিউটার সাইন্স ক্যারিয়ারে অনেক কিছু নিয়ে হতাশায় রয়েছেন। তাদের জন্য আমি একটি ফেসবুক গ্রুপ খুলেছি যে গ্রুপের লিংক দেয়া থাকবে। সেখান থেকে জয়েন করলে আপনি আমাকে সরাসরিঞ্জিজ্ঞাসা করতে পারবেন।  আর আপনার প্রশ্ন থেকে আপনার উপকার হতে পারে আপনার বন্ধুদের উপকার হতে পারে।

একটা ব্যাপার মনে রাখবেন যে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বা সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে আপনি যাই করেন না কেন সেখানে আপনার কম্পিউটার প্রোগ্রামিং পারতেই হবে।  তাই সারাজীবন কম্পিউটার প্রোগ্রামিং পারি না বা প্রোগ্রামিং ভালো পারিনা এগুলো বলার থেকে ছয় মাসে বা এক বছর কষ্ট করে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শিখে ফেলেন।

যদিও এই অল্প সময়ে আপনি সম্পূর্ণ শিখতে পারবেন না তবে চলার জন্য যতটুকু শিখতে হবে ততদিন যদি আপনি শিখতে পারেন। তাহলে সারা জীবন এভাবে আর আপনার এক্সকিউজ দিয়ে যেতে হবেনা।

কোনটি আপনার জন্য আদর্শ “ফ্রিল্যান্সিং করবেন নাকি জব করবেন?”

এবারে চলুন কথা বলা যাক

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এবং নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ারিং এ কি কি কাজের ক্ষেত্র রয়েছেঃ

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এবং নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারিং দুইটাই কিন্তু অনেক বড় এরিয়া এবং এখানে সবগুলো ক্যাটাগরি কাভার করা বেশ কঠিন । তাই আমি বেছে বেছে আপনাদের জন্য পপুলার ক্যাটাগরিগুলো নিয়ে কথা বলবো।

যাতে করে ব্লগটি অনেক বেশী লম্বা হয়ে না যায়, আবার আপনারা যেন সঠিক ইনফরমেশন পান যাতে করে আপনারা ডিসিশন মেক করতে পারেন। 

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর কাজের ক্ষেত্র গুলো কি কি?

যদি আমি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর কাজের ক্ষেত্র গুলো নিয়ে কথা বলতে চাই তাহলে প্রথমে বলতে হবে সফটওয়্যার আর্কিটেক্ট সফটওয়্যার এনালাইজ করা,সফটওয়্যার ডেভেলপ করা,সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট করা এর বাইরে টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেওয়া,সফটওয়্যার টেস্টিং করা এবং মার্কেটিং এগুলাই কিন্তু অনেক পপুলার ক্যাটাগরি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এ। 

যদি আপনি একটু হাইব্রিড চিন্তা করেন প্রোডাক্ট ম্যানেজার ও প্রোডাক্ট ওওনার ও  সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এ একটি পপুলার ক্যাটাগরি হতে পারে। 

নেটওয়ার্কিং এর কাজের ক্ষেত্র গুলো কি কি?

যদি আমি নেটওয়ার্কিং এদিকে কথা বলতে চাই তাহলে এখানে রয়েছে নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান, এছাড়াও রয়েছে নেটওয়ার্কে টেস্টার, এছাড়াও রয়েছে নেটওয়ার্ক আর্কিটেক্ট,নেটওয়ার্ক ম্যানেজার রয়েছে। এর বাইরে রয়েছে নেটওয়ার্কের এনালিশ,নেটওয়ার্ক ম্যানেজার এবং নেটওয়ার্ক সলিউশন আর্কিটেক্ট। 

যদি আপনি একটু গুগলে ঘাটাঘাটি করেন আরো অনেক ক্যাটাগরি পাবেন যেটি আমি অলরেডি মেনশন করেছি যে  সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এবং নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ারিং অনেক বড় এরিয়া।

আমি শুধুমাত্র আপনাদের জন্য পপুলার জব ক্যাটাগরিগুলো  উল্লেখ করলাম।

যদি আপনি এডুকেশন সেক্টরে আসতে চান তাহলে আপনি দুইটি ক্যাটাগরি হতেই ফ্যাকাল্টি হতে পারবেন অথবা রিসার্চার হতে পারেন। এই দুইটি ক্যাটাগরি যেহেতু অনেক বেশি কম্পিটিটিভ তাই আমি এই লিস্টের শুরুর দিকে এই দুইটি ক্যাটাগরি আমি আলাদাভাবে উল্লেখ করিনি। 

এবারে  এবারে চলুন দেখে নেয়া যাক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ারিং এর কি অবস্থা?

যদি আপনি নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার  হন তাহলে  তুলনামূলকভাবে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর থেকেও বেশি সেলারি পাবেন তবে আপনার মাথায় রাখতে হবে,যে কোন জব এর স্যালারি কিন্তু ডিপেন্ড করে আপনার কোয়ালিটি,আপনার অফিস,আপনার পজিশন এবং আপনার কন্ট্রিবিউশন এর উপর।

তাই আমি যখন বলছি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর স্যালারি নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারিং এর স্যালারি বেশি এদিকে কোনভাবে বাইবেল হিসেবে নেওয়ার সুযোগ নেই। এটি শুধুমাত্র কম্পারেটিভ এনালাইসিস এর ক্ষেত্রে  ইন জেনারেশন ইনফরমেশন আমার কাছে রয়েছে সেটি আপনার কাছে আমি শেয়ার করছি।

দেশ এবং দেশের বাইরে দুই জায়গাতেই কিন্তু নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার এর স্যালারি  সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং একটু বেশি হয়ে থাকে। 

তো চলুন এবার দেখা যাক নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার এর চাহিদা কেমন রয়েছে?

যদি আমি দেশের কথা বলি আমাদের দেশে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এর চাহিদা অনেক বেশি এবং একই সাথে অনেক পপুলার। যে কারণে ইউনিভার্সিটিগুলো সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার কে অনেক বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে।

অপরদিকে নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ার এর ও সুযোগ রয়েছে। তবে এই সুযোগটা তুলনামূলকভাবে অনেক কম।

যদি আপনি লক্ষ্য করেন সফটওয়্যার কোম্পানি কিন্তু অনেক বেশি। এখানে অনেক স্টার্ট আপ কোম্পানি রয়েছে ,মিড লেভেল কোম্পানি রয়েছে, প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি রয়েছে,প্রডাক্ট বেসড অনেক কোম্পানি রয়েছে আবার অনেক কোম্পানি রয়েছে স্টার্টআপ রয়েছে যারা অলরেডি ফান্ডেড। 

বিদেশি অনেক কোম্পানি ব্রাঞ্চ রয়েছে বাংলাদেশ যে কারণে আপনি যদি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হন তাহলে আপনার চাহিদা বেশি থাকবে,সাথে আপনার চাকরি পাওয়াটা কিছুটা সহজ হয়ে যাবে।

একই সাথে যদি আপনি নেটওয়ার্কিং ইন্ডাস্ট্রি দিকে তাকান সেখানে কিন্তু বড় বড় কর্পোরেট ইন্ডাস্ট্রি ছাড়া ওইভাবে ছোটখাটো মিড লেভেল কোন ইন্ডাস্ট্রি নেই। এখানে কিন্তু ছোটখাটো মিড লেভেল বা স্টার্টআপ কোন কোম্পানি নেই। 

আর যদিও থাকে সেখানে কিন্তু কাজের সুযোগ অনেকটাই কম।

বাইরের দেশের কিন্তু নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ারিং এর চাহিদা কেমন ?

এখন যদি আমি বাইরের কথা বলি,বাইরের দেশের কিন্তু নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ারিং এর চাহিদা বেশি রয়েছে। যদিও সেখানে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর চাহিদার চেয়ে নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারিং এর চাহিদা অনেক বেশি।

দেশে যেমন একটা সংকুচিত মার্কেট  নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার দের জন্য বিদেশে কিন্তু এমন নয়।  বিদেশে যথেষ্ট চাহিদা এবং সুযোগ রয়েছে একজন নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ার এর ক্ষেত্রে।

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং নাকি নেটওয়ার্কিং নিয়ে আমার ব্যাক্তিগত মতামতঃ

এবারে আমার পার্সোনাল অপিনিয়ন নেটওয়ার্কিং এবং সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর মধ্যে।

প্রথম কথা হচ্ছে যদি আপনার কোন ক্যাটাগরিতে পেশন থেকে থাকে  সেটি নেটওয়ার্কিং হোক অথবা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং আপনি সেটি শেখার চেষ্টা করবেন।

যদি প্যাশন না থাকে তাহলে এবার চেক করবেন যে আপনার কি অবস্থা এবং ভবিষ্যতে আপনার কি করতে হবে। যদি এরকমই হয় যে খুবই দ্রুত আপনাকে চাকরি পেতে হবে তাহলে সে ক্ষেত্রে আমি মনে করি যে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং আপনার জন্য সুবিধাজনক হতে পারে।

আর যদি এরকম হয় যে শুরুতে আপনি কিছুটা বেশি সেলারি তে চাকরি করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনি নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ারিং সিলেক্ট করতে পারেন।

এখানে একটা ব্যাপার বলে রাখি দেশ এবং দেশের বাইরে নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারিং এর চাহিদা যেমন কম। এখানে কম্পিটিশন কিন্তু কম কারণ অনেক কম ছেলে মেয়ে রয়েছে যারা নেটওয়ার্কিং ইন্ডাস্ট্রিতে ইন্টারেস্টেড হয়ে থাকে। 

তাই আপনার যদি এরকম ইচ্ছা থাকে বেশি সেলারি আপনি চাকরি শুরু করতে চান  কিন্তু আপনি বেশি কম্পিটিশন করতে চান না সে ক্ষেত্রে আপনার জন্য নেটওয়ার্কিং একটা আদর্শ ক্যাটাগরি হতে পারে। 

যদি আপনার প্ল্যানিং থাকে যে আপনি বাইরের দেশে জব করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনার জন্য রিকমেন্ডেশন হচ্ছে আপনি যে দেশে যেতে চান সে দেশে একটু খোঁজখবর নিয়ে দেখুন সে দেশের কি অবস্থা তারপর  সে অনুযায়ী সেখানে যদি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং থাকে তাহলে আপনি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং শিখতে পারেন।

যদি নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ারিং বেশি থাকে তাহলে আপনি নেটওয়ার্ক  ইঞ্জিনিয়ারিং শিখতে পারেন।  

নেটওয়ার্ক ভার্সেস সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ছিল আমাদের আজকের ব্লগ। যদি আপনার এরপরে কোন ধরনের কনফিউশন  থেকে থাকে তাহলে আপনি কমেন্ট করতে পারেন। দেখা হবে পরের কোন ব্লগে।

ততক্ষণ পর্যন্ত ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন এই প্রত্যাশায় বিদায় নিচ্ছি।

0Shares
ফ্রিল্যান্সিং করবেন নাকি জব করবেন? Previous post ফ্রিল্যান্সিং করবেন নাকি জব করবেন?
যেভাবে আমি ফ্রিতে ইংরেজিতে কথা বলতে শিখেছি Next post যেভাবে আমি ফ্রিতে ইংরেজিতে কথা বলতে শিখেছি

9 thoughts on “সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং নাকি নেটওয়ার্কিং?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Close

গালিব নোটস এর ইউটিউব ভিডিওঃ