এস এস সি পাস করার পরে আমাদের একটা কনফিউশন তৈরি হয় যে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ভালো নাকি বিএসই?
আজকে আমরা কথা বলবো ডিপ্লোমা এবং বিএসসি এডুকেশন লেভেল এর পড়াশোনা নিয়ে।
এখন এর বিষয়ে যারা কনফিউশনে রয়েছেন এবং এই মুহূর্তে যারা পড়াশোনা করেছেন কিন্তু বিস্তারিত জানেননা মূলত তাদের জন্যই এ ব্লগটি কি উপকারি হতে পারে।
ডিপ্লোমা তে পড়াশোনা করবেন নাকি সরাসরি বিএসসি তে পড়াশুনা করবেনঃ
আপনারা অনেকেই কনফিউশনে থাকেন যে এস এস সি পাশ করে ভর্তি হয়ে ডিপ্লোমাতে পড়াশোনা করবেন? নাকি আপনারা সরাসরি বিএসসি তে পড়াশোনা করবেন।
বিশেষত কম্পিউটার সায়েন্সের অনেক স্টুডেন্ট রয়েছেন যারা এই মুহূর্তে ডিপ্লোমাতে পড়াশোনা করছেন।
অথবা বিএসসি তে পড়াশোনা করছেন তারা অনেকে আমাকে ব্যক্তিগতভাবে প্রশ্ন করে থাকেন।
আমাদের দেশে এসএসসি পাশ করার পরে ডিপ্লোমা এবং এইচএসসি পাশ করার পরে সরাসরি বিএসসি পড়ার সুযোগ রয়েছে।
আবার ডিপ্লোমা পাশ করার পরে বিএসসি করা যেতে পারবে এবং পরবর্তীতে অন্যান্য এডুকেশন চালিয়ে যাওয়া যেতে পারে।
কম খরচে কম্পিউটার সায়েন্স পড়তে চান?
ডিপ্লোমা নাকি বিএসসি কয় বছর লাগে পড়তেঃ
আমাদের দেশে ডিপ্লোমা এবং বিএসসি কোর্স গুলো সাধারণত চার বছরের হয়ে থাকে।
যদিও বাইরের দেশের কোর্স গুলো যে কোন সময় হয়ে থাকে। সাধারণত এক অথবা দুই বছরে হয়ে থাকে।
কিন্তু আমাদের দুইটি কোর্সের জন্য সময় চার বছর করে সময় লাগে।
তাই আপনি যদি ডিপ্লোমাতে পাশ করতে চান তাহলে আপনার চার বছর লাগবে,যদি আপনি বিএসসি ওপাশ করতে চান তাও আপনার চার বছর সময় লাগবে।
তবে এখানে যে বিষয়টি বিবেচনা সেটি হচ্ছে যদি এইচএসসি পাশ করে বিএসসি পাস করেন সেখানে আপনার সর্বোচ্চ সময় লাগবে মিনিমাম ছয় থেকে সাত বছর।
এবং আপনি যদি ডিপ্লোমা করেন এবং তারপরে বিএসসি করেন সেখানে আপনার সময় লাগবে মিনিমাম ৮ থেকে ১০ বছরের মতো।
এর কারণ হচ্ছে প্রথমে ডিপ্লোমাতে আপনাকে চার বছর পড়াশোনা করতে হবে এবং পরবর্তীতে বিএসসি তে আবার চার বছর পড়াশোনা করতে হবে।
কম্পিউটার সায়েন্সে পড়তে ম্যাথ,ইংরেজি নিয়ে চিন্তিত!
তাহলে পড়বেন কোথায়ঃ
এখন প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে কি আপনি ডিপ্লোমাতে পড়াশোনা করবেন নাকি আসলে বিএসসি তে সরাসরি পরাশুনা করবেন।
কোন বিষয়ে কখনকার পড়া উচিত এ বিষয়ে বিভিন্ন পার্সপেক্টিভ থেকে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।
তারপরে আপনি আপনার নিজের সঙ্গে মিলিয়ে নিয়ে আপনার জন্য যেটা ভাল হয় সে সিদ্ধান্ত টি আপনি সহজেই নিতে পারবেন।
অভিজ্ঞতা ছাড়াই চাকরি পাওয়া যায় যেভাবে!
ভ্যালু কোথায় বেশিঃ
একেবারে শুরুতে যদি আমি ভ্যালু এর কথা বলি তাহলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ভালো কিন্তু বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের থেকে কম।
যদিও এই কথাটি কম্পিউটার সায়েন্সের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য নয়।
কারণ কম্পিউটার সাইন্সে যদি আপনি কোয়ালিফাইড ইঞ্জিনিয়ার হন সেক্ষেত্রে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে যে স্যালারি পাবেন বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এর সেই স্যালারি কবে
বরং আমি অনেক জায়গায় দেখেছি ডিপ্লোমা পাস করার পরেও আর্লি জবে জয়েন করার কারণে অনেক ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার যারা বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার থেকে ভালো করছেন।
যদিও সোশ্যাল ভ্যালুর দিকে চিন্তা করলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ভ্যালু বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের ভ্যালুর থেকে একটু হলেও কম।
তবে যদি আপনি অন্যান্য ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের দিকে চিন্তা করেন।
আমি কিছুদিন আগে আমি আমার একটা ফ্রেন্ডের সঙ্গে কথা বলছিলাম। ও বলেছিল যে ওর বিএসসি ডিগ্রি না থাকার কারণে সালারি কিছুটা কম পাচ্ছে ।
আই এই দিক থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের সেলারি কিছুটা কম হয়ে থাকে।
শিখবেন কোন ট্রেনিং সেন্টার থেকে?
জব অপারচুনিটি বেশি কোথায়ঃ
যদি আপনি খুব দ্রুত আপনার ক্যারিয়ার শুরু করতে চান সেই ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং আপনার জন্য বেটার সহজ হতে পারে।
কারণ আপনি এসএসসি পাশ করার পরে পলিটেকনিক থেকে চার বছর স্পেন্ট করার পর আপনি যে ডিগ্রী পাবেন, সেই ডিগ্রি দিয়ে অনেক জায়গাতেই আবেদন করতে পারবেন।
সে ক্ষেত্রে আপনি কিন্তু এসএসসি পাস করার চার বছরের মধ্যেই সরাসরি আপনি জবে জয়েন করতে পারছেন এবং পরবর্তীতে আপনি বিএসসি এমএসসি করতে পারবেন জব করার পাশাপাশি।
যদিও এটি খুব একটা সহজ ব্যাপার নয় তারপরও অনেকেই পদ্ধতিতে বিএসসি এবং এমএসসি করে থাকে।
কম্পিউটার সায়েন্স এ ভার্সিটি ম্যাটার করে?
টাকা বেশি লাগে কথায়ঃ
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এর তুলনায় তুলনামূলক কম টাকা লাগে।
যদি আপনি সেইদিকে ফিনান্সিয়াল দিকে চিন্তা করেন তাহলে আপনি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে পারেন যদি আপনার ফিনান্সিয়াল কোন ইস্যু থাকে।
এখন যদিও অনেক গভর্নমেন্ট ইউনিভার্সিটি রয়েছে যেগুলোতে আপনি খুবই অল্প টাকায় বিএসসি পড়াশোনা করতে পারবেন।
তবে গভর্নমেন্ট ইউনিভার্সিটির সিট কিন্তু খুবই লিমিটেড পরিমাণে থাকে এবং সেখানে ভর্তি পরীক্ষা দিতে হবে পাশাপাশি অনেক বেশি প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
এখন যদি আপনি ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পরে গভর্নমেন্ট ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি হতে না পারেন সেক্ষেত্রে আপনার অনেক বেশি হতাশ হতে হবে।
এক্ষেত্রে সবথেকে সেফ সাইড হচ্ছে সরাসরি ডিপ্লোমাতে ভর্তি হওয়া।
আপনার টাকা-পয়সার যেমন কম লাগে পাশাপাশি আপনি সেফলি একটা ডিগ্রী করে সরাসরি জবে জয়েন করতে পারবেন।
বিশেষত আপনি যদি কম্পিউটার সায়েন্সের দিকে চিন্তা করেন তাহলে ডিপ্লোমা ভর্তি হতে আপনার খুব একটা বেশি চিন্তা করার দরকার নেই।
কারণ আপনি বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে যেই জবে জয়েন করতে পারবেন,ডিপ্লোমা পাশ করেও সেই একই জবে একই পজিশনে জয়েন করতে পারবেন। যদি আপনি কোয়ালিফাইড হন।
যদি এরকম হয় যে আপনি আসলে কনফার্ম না কোন সাবজেক্ট আপনার জন্য সুইটেবল হবে সে ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং আপনি পড়তে পারেন।
আমাদের এত বেকার কেন? জাভাস্ক্রিপ্ট চাকরি!
ডিপ্লোমা তে সাব্জেক্ট চেঞ্জ করার সুযোগঃ
কারণ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পরে কিন্তু আপনি বিএসসি সাবজেক্টগুলো চেঞ্জ করতে পারবেন।
ফর এক্সাম্পল ধরুন আপনি মেকানিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা করছেন সেক্ষেত্রে আপনি কিন্তু কম্পিউটার সাইন্স থেকে বিএসসি করতে পারবেন।
আমাদের দেশের ইউনিভার্সিটিগুলো এটি এলাও করে থাকে।
তাই আপনি যদি কনফার্ম হয়ে না থাকেন আপনি যদি সিওর না হয় তাহলে সেক্ষেত্রে আপনি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হতে পারেন।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স জব খেয়ে দিবে?
স্ট্যাবিলশড ক্যারিয়ারঃ
যদি আপনি বেটার ক্যারিয়ার চান স্ট্যাবিলশড ক্যারিয়ার চান সেই ক্ষেত্রে আমি মনে করি এইচএসসি পাশ করার পর আপনি সরাসরি বিএসসি পাশ করতে পারেন।
কারোন আমি আগেই এক্সপ্লেন করেছি বিএসসির ক্ষেত্রে সোশ্যাল ভ্যালু এবং বিভিন্ন চাকরির ক্ষেত্র ভ্যালু অনেকটা বেশি হয়ে থাকে।
তাই আপনি যদি ক্যারিয়ার দিক থেকে ভালো ক্যারিয়ার চান সে ক্ষেত্রে আপনি এইচএসসি পাস করে সরাসরি বিএসসি তে ভর্তি হতে পারেন।
যদি আপনার ফিন্যান্সিয়াল কোন সমস্যা না থাকে থাকে সে ক্ষেত্রে আপনি সরাসরি বিএসসি তে ভর্তি হতে পারেন।
বিএসসি যদি আপনি কমপ্লিট করেন কারণ এইচএসসি পাস করার পর বিএসসি কমপ্লিট করতে আপনার সর্বোচ্চ ছয় থেকে সাত বছর সময় লাগে।
এবং এরপরেই বলা যায় এক প্রকারের প্রতিষ্ঠিত জীবন আপনি পেতে যাচ্ছেন।
ইঞ্জিনিয়ারিং এ সবচেয়ে সহজ সাবজেক্ট কোনটি?
হায়ার স্টাডিজ এর সুযোগ কমঃ
আপনার যদি হায়ার স্টাডি করার ইচ্ছা থাকে সে ক্ষেত্রে সরাসরি বিএসসি করা আপনার জন্য ভালো হবে।
কারণ হার স্টাডি এর ক্ষেত্রে অনেক জায়গায় কিন্তু ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং রিকগনাইজড নয়।
সে ক্ষেত্রে আপনারা সরাসরি বাইরের দেশে যে বিএসসি করাটা বেশ কঠিন হয়ে পড়বে।
আর আপনি যদি এইচএসসি পাশ করার পর বিএসসি করেন তারপরে এম এস সি পাশ করে তারপরে বিদেশে যে কোন ইউনিভার্সিটিতে অ্যাপ্লাই করতে পারবেন।
একই কথা প্রযোজ্য হবে যদি আপনি মাইগ্রেশন করতে চান বিদেশে যদি আপনি ইমিগ্রেশন হিসেবে যেতে চান।
কারণ বিদেশে ইমিগ্রেশন করার সময় আপনার বিএসসির জন্য যেই পয়েন্ট পাবেন ভ্যালু পাবেন সেটি কিন্তু ডিপ্লোমার জন্য পাবেন না।
এবারে ব্লগের একদম শেষ দিকে চলুন কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর জেনে নেওয়া যাক।
রিমোট জব কি ভালো নাকি খারাপ?
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে চাকরি পাওয়া যায় কিনা?
যদি আপনি কম্পিউটার সাইন্স নিয়ে ডিপ্লোমা করেন তাহলে চাকরি পেতে আপনার কোন সমস্যা হবে না।
এ ব্যাপারে আমি অনেকবার বিস্তারিত কথা বলেছি আপনারা চাইলে ভিডিওটি আমার চ্যানেল থেকে দেখে আসতে পারেন।
ডিপ্লোমা পাশ করে গুগলে চাকরি ?
এমনকি গুগলের মত টেক জায়ান্ট কোম্পানিগুলোতে আপনি ডিপ্লোমা পাশ করে চাকরি এর জন্য এপ্লাই করার সুযোগ পাবেন।
সেটার প্রমান সহ ভিডিও আমার ইউটিউব চ্যানেলে রয়েছে চাইলে দেখে আসতে পারেন।
আর আপনি যদি অন্যান্য সাবজেক্টে ডিপ্লোমা করেন সে ক্ষেত্রে আপনি চাকরি পাবেন।
আমি অনেক চাকরি দেখেছি যেগুলার সার্কুলারে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের হয় করে থাকে।
ডিপ্লোমা করে ফিউচার কি হতে পারে?
ডিপ্লোমা করে ফিউচার আপনি বিএসসি পড়াশোনা করতে পারেন,চাকরি করতে পারেন পাশাপাশি এরকম আরো অনেক সুযোগ রয়েছে।
যে ব্যাপারে আমি অলরেডি আমার চ্যানেলে একটি বিস্তারিত ভিডিও বানিয়েছি।
ডিপ্লোমা কোথায় পড়াশোনা করলে ভালো হবে?
যদি আপনি ডিপ্লোমা পড়াশোনা করতে চান সে ক্ষেত্রে গভারমেন্ট পলিটেকনিকেল গুলোতে,
অথবা শহরের মধ্যে যে পলিটেকনিকেল গুলো রয়েছে সেখানে পড়াশোনা করতে পারেন।
তো ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ভালো নাকি বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ভালো এটি ছিল বিস্তারিত ব্লগ।
এরপরেও যদি আপনাদের কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না।
5 thoughts on “ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ভালো নাকি বিএসই?”