কম্পিউটার সায়েন্স নাকি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং? এমন প্রশ্ন আমি প্রায় ই পেয়ে থাকি।
অনেকেই জিজ্ঞাসা করে থাকেন যে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হবেন নাকি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হবেন।
যদিও দুই দুই সাবজেক্টে একই ক্যাটাগরীর সাবজেক্ট তারপরেও স্লাইস কিছু ডিফারেন্ট থাকার কারণে অনেকেই কনফিউশনে থাকে।
তো আপনারা যারা এখনো কম্পিউটার সায়েন্সে ভর্তি হওয়া নিয়ে কনফিউশনে রয়েছেন তাদের জন্য আজকের ব্লগটি খুবই ইনফরমেটিভ হতে যাচ্ছে।
একই সাথে আপনি যদি এই মুহুর্তে কম্পিউটার সায়েন্স অথবা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন তাদের জন্য এই ব্লগটি উপকারী হতে পারে।
এই ব্লগের বিস্তারিত লেখা শেষ কোন সাবজেক্টে স্যালারি বেশি পাবেন সেটি নিয়েও আমি ডিসকাস করার চেষ্টা করেছি,তাই সম্পূর্ণ পড়ার চেষ্টা করুন।
ইউনিভার্সিটিতে পড়া কি খুব জরুরী?
কম্পিউটার সায়েন্স নাকি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর কোর্সগুলো কেমনঃ
কম্পিউটার সায়েন্স এর সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর কোর্সগুলোর দিকে যদি আপনি তাকান প্রায় ৭০ শতাংশ বেশি কোর্স পাবেন দুইটা সিমিলার কোর্স।
অর্থাৎ আপনি যদি কম্পিউটার সাইন্সে পড়েন অথবা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েন প্রায় ৭০ শতাংশের বেশি কোর্স প্রায় সিমিলার থাকবে।
শুধুমাত্র বাকি কোর্স গুলো ডিফারেন্ট হবে।
কম্পিউটার সায়েন্সের সাইন্স সাবজেক্ট হচ্ছে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং। কাজেই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর মধ্যে যা যা রয়েছে প্রায় সবকিছুই কিন্তু কম্পিউটার সাইন্স এর মধ্যে রয়েছে।
এই দুইটি সাবজেক্টের মধ্যে খুব বেশি আলাদা করার সুযোগ নেই।
তার পরেও আপনাদের কে বোঝানো স্বার্থে ভিন্ন পার্সপেক্টিভ থেকে কম্পিউটার সায়েন্স এবং সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে ডিসকাস করার চেষ্টা করব।
কম খরচে কম্পিউটার সায়েন্স পড়তে চান?
কম্পিউটার সায়েন্স নাকি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর কি কি কোর্স রয়েছেঃ
শুরুতেই বলে রাখি যদি আপনি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে থাকেন সেখানে আপনার সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে পড়াশোনা রয়েছে।
পাশাপাশি প্রোগ্রামিং কোর্স রয়েছে,ডেভেলপমেন্ট,কনফারেন্স প্রজেক্ট রয়েছে,ইন্টার্নশিপ রয়েছে এই সাবজেক্ট গুলো গুরুত্ব দিয়ে পড়ানো হবে ।
আর যদি আপনি কম্পিউটার সাইন্সে পড়াশোনা করে সেখানে আপনাকে কম্পিউটার সাইন্স এর বিভিন্ন ফান্ডামেন্টাল বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করানো।
সে ক্ষেত্রে সফটওয়্যার লাইনে পড়াশোনা যেমন আপনি পাবেন পাশাপাশি নেটওয়ার্ক লাইনে অনেক কোর্স রয়েছে সেগুলো আপনি পাবেন।
পাশাপাশি হার্ডওয়ার এর অনেক সাবজেক্ট রয়েছে সেগুলো করতে হবে।
আপনাকে সিকিউরিটি নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে।
এরকম সব সাবজেক্টের অল্প অল্প অংশ নিয়ে আপনাকে কম্পিউটার সাইন্সের ডিগ্রী কমপ্লিট করতে হবে।
কম্পিউটার সায়েন্সে পড়তে ম্যাথ,ইংরেজি নিয়ে চিন্তিত!
কম্পিউটার সায়েন্স এর সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর জবস পার্সপেক্টিভ কেমনঃ
এবারে চলুন আমরা দেখি ফিউচার জবস পার্সপেক্টিভ থেকে কম্পিউটার সায়েন্স এবং সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের কেমন?
যদি আপনার প্ল্যানিং থাকে সরকারি ইঞ্জিনিয়ার হবেন এবং এ ব্যাপারে আপনি ডিটারমাইন্ড থাকেন যে আপনি অন্য কোন ক্যাটাগরিতে ইন্টারেস্টেড না।
অথবা আপনি শুধু প্রোগ্রামিং করতে চান এক্ষেত্রে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং আপনার জন্য আদর্শ সাবজেক্ট।
কারণ সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং জব এর কিন্তু আপনাকে সরাসরি ইন্ডাস্ট্রির জন্য প্রিপেয়ার করা হচ্ছে।
কম্পিউটার সায়েন্সে পড়তে ম্যাথ,ইংরেজি নিয়ে চিন্তিত!
এখানে কি কি পড়ানো হয়ঃ
আপনাকে প্রোগ্রামিং রিলেটেড কোর্স করতে হচ্ছে,ডেভলপমেন্ট রিলেটেড,সিস্টেম এনালাইসিস,ডিজাইন রিলেটেড যেকোর্সগুলো সেগুলো করতে হবে।
আর যদি আপনি কম্পিউটার সাইন্সে পড়াশোনা করেন সেক্ষেত্রে আপনি যেই সাবজেক্ট গুলো পাবেন পাশাপাশি আরও অনেক সাবজেক্ট পড়তে হবে।
সুতরাং আপনি যদি ডেডিকেটেড থাকেন যে সফটওয়্যার লাইনে আপনি চাকরি করবেন সে ক্ষেত্রে আপনি চোখ বন্ধ করে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি হয়ে যেতে পারেন
অভিজ্ঞতা ছাড়াই চাকরি পাওয়া যায় যেভাবে!
সরকারি চাকরি নাকি বেসরকারিঃ
আর যদি আপনি কনফিউশনে থাকেন অথবা অন্য কোন ক্যাটাগরিতে সুইচ করতে চান সে ক্ষেত্রে আমি মনে করি কম্পিউটার সায়েন্স এ পড়াশোনা করাই উত্তম হবে।
যদি আপনি দেশে সরকারি চাকরি করতে চান,আমি মনে করি আপনার কম্পিউটার সায়েন্স এ পড়াশোনা করা উচিত।
কারণ কম্পিউটার সায়েন্স যত মানুষ চিনে অথবা আপনার যারা ইমপ্লোয়ার রয়েছে গভমেন্ট জব এর মধ্যে যে ইমপ্লোয়ার রয়েছে তারা কিন্তু কম্পিউটার সাইন্স নিয়ে শুধুমাত্র ভালোভাবে চেনে।
আপনি খেয়াল করলেই দেখবেন বেশিরভাগ সরকারি চাকরির সার্কুলার গুলোতে লেখা থাকে কম্পিউটার সায়েন্স রিলিভ্যান্ট সাবজেক্ট।
এক্ষেত্রে আপনি যদি সরাসরি কম্পিউটার সাইন্স থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করেন অ্যাডভান্টেজ পেলেও পেতে পারে।
তাই যদি আপনার সরকারি চাকরি ইচ্ছা থাকে সে ক্ষেত্রে আপনি কম্পিউটার সাইন্সে পড়াশোনা করতে পারেন।
আর যদি আপনার ইচ্ছা থাকে আপনি ফাকাল্টিজ হতে চান,ভার্সিটি টিচিং প্রফেশনে আসতে চান। সে ক্ষেত্রে কম্পিউটার সায়েন্স আপনার জন্য ভালো সুযোগ দিবে।
কারণ কম্পিউটার সায়েন্সে যেহেতু আপনি ফান্ডামেন্টাল অনেকগুলো কোর্স নিয়ে পড়াশোনা করছেন যে কারণে আপনার কিন্তু ফান্ডামেন্টাল ইস্যুজ অফ অনেকটা বেশি থাকবে।
কিন্তু যদি আপনি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করেন আপনার সুযোগ লিমিটেড হয়ে যাচ্ছে। তাই ফাকাল্টি জব এর জন্য কম্পিউটার সায়েন্স এ পড়াশোনা করাই উত্তম হবে।
শিখবেন কোন ট্রেনিং সেন্টার থেকে?
স্টার্টআপ এ আসতে চাইলেঃ
যদি আপনার প্ল্যানিং থাকে যে আপনি স্টার্টআপ দেবেন অথবা কোন কোম্পানি দেবেন সেটাও সফটওয়্যার রিলেটেড তাহলে আপনার জন্য সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার উপযোগী হবে।
আর যদি আপনি সিকিউরিটিতে অথবা হার্ডওয়ার রিলেটেড অথবা অন্য কোন ক্যাটাগরিতে বিজনেস করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনি কম্পিউটার সায়েন্স এ পড়াশোনা করতে পারেন।
কম্পিউটার সায়েন্স এ ভার্সিটি ম্যাটার করে?
রিসার্চ এর ক্ষেত্রে সুযোগ বেশি কোথায়ঃ
যদি আপনি রিসার্চার হতে চান তাহলে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে যে সুযোগ গুলোর রয়েছে কম্পিউটার সায়েন্সের কিন্তু সিমিলার সুযোগগুলো রয়েছে।
আমি পার্সোনালি মনে করে যে রিসার্চ-এর ক্ষেত্রে আপনার কোয়ালিটি অথবা এবিলিটি টাই মেইন। আপনি কোন সাবজেক্ট নিয়ে পড়াশোনা করছেন সেটি খুব বেশি ম্যাটার করে না।
কারণ বেশিরভাগ ইউনিভার্সিটি তে যখন আপনি মাস্টার্স রিসার্চ করবেন বা পিএইচডি করবেন অথবা রিসার্চ জব করতে যাবেন,
সেখানে লেখা থাকবে কম্পিউটার সায়েন্স সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার অথবা রিলেভেন্ট সাবজেক্টে আপনার গ্রাজুয়েট সম্পন্ন থাকতে হবে।
আমাদের এত বেকার কেন? জাভাস্ক্রিপ্ট চাকরি!
কম্পিউটার সায়েন্স নাকি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং হায়ার স্টাডি এর ক্ষেত্রেঃ
যদি আপনি বিদেশে যেতে চান মাইগ্রেন্ট হিসাবে অথবা হায়ার স্টাডি এর জন্য সেই ক্ষেত্রে কম্পিউটার সায়েন্স বা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং একই ধরনের ভ্যালু এড হলেও কম্পিউটার সায়েন্স এ সুযোগ সুবিধা বেশি।
যেহেতু কম্পিউটার সাইন্সের সাবজেক্টগুলো সাবজেক্ট গুলো অনেক বেশি সে ক্ষেত্রে বেশি ক্যাটাগরিতে মাইগ্রেশনের সুযোগ পাচ্ছেন বা পয়েন্ট আপনার বেশি হতে পারে।
যদি আপনার মাইগ্রেশনের ইচ্ছা থাকে সেক্ষেত্রে আপনি কম্পিউটার সায়েন্সে ভর্তি হতে পারেন।
তুলনামূলকভাবে কম্পিউটার সাইন্সে টিউশন ফি এবং ক্রেডিট আওয়ার কিন্তু সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর থেকে বেশি।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স জব খেয়ে দিবে?
কম্পিউটার সায়েন্স নাকি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এ কোথায় বেশি পড়াশুনাঃ
কাজেই যদি আপনি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করেন আপনার কম পড়াশোনা করতে হবে।
কম্পিউটার সাইন্সের থেকে কিছুটা কম পড়াশোনা করতে হবে তুলনামূলকভাবে।
ইঞ্জিনিয়ারিং এ সবচেয়ে সহজ সাবজেক্ট কোনটি?
কম্পিউটার সায়েন্স নাকি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং স্যালারি কেমনঃ
ফাইনালি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর স্যালারি বেশি নাকি কম্পিউটার সায়েন্সে স্যালারি বেশি?
অথবা কোন সাবজেক্টে তুলনামূলকভাবে স্যালারি বেশি পেতে পারেন।
এখানে কম্পিউটার সাইন্স অথবা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং মুখ্য বিষয় নয় মুখ্য বিষয় হচ্ছে আপনার স্কিলস।
মনে রাখবেন প্রাইভেট ইন্ডাস্ট্রিতে আপনার কোয়ালিফিকেশন আপনার স্কিলস হচ্ছে আপনার যে স্যালারি পাবেন সেটা ইমপ্রেস করার জন্য অন্যতম নিয়ামক
আপনার গ্রাজুয়েশন করা ডিগ্রী খুব একটা ভ্যালু অ্যাড করবে না এখানে।
যদি আপনার ভালো রেজাল্ট থাকে কম্পিউটার সাইন্সের হোক অথবা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং হোক যদি আপনার ভালো রেজাল্ট থাকে সেটি ডেফিনেটলি ভালো।
কিন্তু সব থেকে বড় কথা হচ্ছে আপনাকে কোয়ালিফাইড হতে হবে,আপনার স্কিলস এর উপর ডিপেন্ড করবে আপনার স্যালারি।
কাজেই কম্পিউটার সাইন্সে স্যালারি বেশি নাকি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর স্যালারি বেশি সেটা সরাসরি বলার সুযোগ নেই
এই মুহূর্তে যদি আপনি কম্পিউটার সায়েন্স অথবা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হতে চান এই ব্লগ বিস্তারিত দেখার পর আপনি আপনার ডিসিশন মেক করতে পারবে আশা করি।
রিমোট জব খোঁজার সেরা ১১ টি ওয়েবসাইট
ব্যাক্তিগত কিছু কথাঃ
সবসময় মনে রাখবেন সফটয়ার ইনজিনিয়ারিং হচ্ছে কম্পিউটার সায়েন্সের চাইল্ড সাবজেক্ট। সাবজেক্টের মধ্যে সুইচ করার সুযোগ রয়েছে।
এই মুহূর্তে যারা রানিং ইসটুডেন রয়েছেন সেটি কম্পিউটার সাইন্সের হতে পারে অথবা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর হতে পারে আপনাদেরও টেনশনের কোন কারণ নেই।
যদি আপনার ভালো না লাগে তাহলে আপনি সুইচ করতে পারবেন যেকোনো সময়ে।
আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য যদি আপনার প্রচুর হ্যাসেল হয়ে যায়।
সেটি অনেক দূরের ইউনিভার্সিটি অথবা অনেক বেশি টিউশন ফি ঝামেলা হয় তাহলে কিন্তু সেটি ও আপনি এভোয়েড করতে পারেন।
কারণ আপনাকে মাথায় রাখতে হবে যে যেকোনো সময় আপনি সহজেই একটি সাবজেক্ট থেকে অন্য সাবজেক্টে সুইচ করতে পারবেন।
এরপরেও যদি আপনাদের কোন কনফিউশন থেকে থাকে তাহলে এই ব্লগের নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে পারেন,
আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কম্পিউটার সাইন্স এর মধ্যে বেসিক পার্থক্য নিয়ে আমার ইউটিউব চ্যানেলে আরো একটি ভিডিও রয়েছে আপনারা চাইলে দেখে আসতে পারেন।
এছাড়াও কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট দের সেলারি কেমন বা ইঞ্জিনিইয়ার দের স্যালারি কেমন সে বিষয় নিয়েও আমার ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও রয়েছে।